মির্জা গালিব, ঢাকা
বিরিয়ানি শব্দটির সঙ্গে বরাবরই কোনো না কোনো শহর বা জায়গার নাম জুড়ে যায়। যেমন ঢাকাই বিরিয়ানি বা কলকাতা কিংবা দিল্লি অথবা হায়দরাবাদি বিরিয়ানি। এর ফলে স্থান মাহাত্ম্য বাড়ে নাকি বিরিয়ানির স্বাদ বাড়ে, সেটা বলা কঠিন। কিন্তু বিষয়টি ঘটে। ঢাকার বিরিয়ানির এমনই একটি উপবিভাগ আছে, তার নাম ক্যাম্পের বাজারের বিরিয়ানি ওরফে ক্যাম্পের বিরিয়ানি।
তাজমহল রোডের বাম দিকে রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলের দেয়াল যেখানে কোণ তৈরি করেছে, সেখান থেকে শুরু হয়েছে জেনেভা ক্যাম্প। মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দরজার সামনেই জেনেভা ক্যাম্পে ঢোকার রাস্তা। সারি সারি কাপড়ের দোকান পার হয়ে হাতের বাম দিকে দ্বিতীয় গলিতে ঢুকলে প্রথম পাওয়া যাবে বোবার বিরিয়ানি। সেখান থেকে একটু সামনের দিকে এগোলে হাতের ডানে মামার বিরিয়ানি আর বোবার বিরিয়ানিকে পেছনে রেখে সামনে এগোলে কামাল বিরিয়ানি। এই তিনটি বিরিয়ানির দোকান জেনেভা ক্যাম্পের আদি দোকান। তবে এখানে প্রথম তৈরি হয়েছিল মামার বিরিয়ানি। তার কিছু পরে কামাল বিরিয়ানি এবং তারও পরে তৈরি হয়েছিল বোবার বিরিয়ানি। যেটির পোশাকি নাম ফায়জানে মদিনা।
ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুর নামের জায়গাটিতে গড়ে ওঠা জেনেভা ক্যাম্পের সংক্ষিপ্ত নাম ক্যাম্প। অবাঙালি অধিবাসীদের বসবাস এখানে। এখানকার বিরিয়ানি বেশ বিখ্যাত হয়ে গেছে ঢাকা শহরে। না, ফুড ভ্লগারদের জন্য নয়। এ দেশে ইন্টারনেট কিংবা ফুড ভ্লগিংয়ের ধারণা আসার বহু আগে থেকে রন্ধন কুশলতা ও স্বাদের কারণে ক্যাম্পের বিরিয়ানি বিখ্যাত ছিল। কচি খাসির মাংসে নয়, এখানকার বিরিয়ানি রান্না করা হয় গরুর মাংসে। এটিই ক্যাম্পের বিরিয়ানির মূল বৈশিষ্ট্য।
ভারত উপমহাদেশে সবজি, মাছ কিংবা মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্নার চল দেখা যায়। তবে বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রমাণের কারণে এটি প্রতিষ্ঠিত যে মাংস দিয়েই মূলত বিরিয়ানি রান্না করা হয়। পরে অনেক কারণে এর সঙ্গে সবজি ও মাছ যুক্ত হয়েছে। এই মাংসের মধ্যে বিরিয়ানিতে খাসির মাংস ব্যবহার করাই দস্তুর বলে জানা যায়। পুরোনো সংস্কৃত সাহিত্যিক সূত্রে হরিণের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্নার কথা জানা গেলেও গরুর মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্নার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। এমনকি পুরান ঢাকায় অতীতে কখনো বিফ কাচ্চি রান্না হয়েছিল বলে শোনা যায় না। বিফ অর্থাৎ গরুর মাংসের যে বিখ্যাত খাবার তৈরি হয়েছে পুরান ঢাকায়, সেটি তেহারি। কিন্তু ক্যাম্পের বাবুর্চিরা গরুর মাংসের বিরিয়ানি তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তো বটেই, একটি ট্রেন্ডও তৈরি করেছেন।
ক্যাম্পের বাজারে প্রতিদিন প্রায় ১৫ ডেকচি বিরিয়ানি রান্না হয়। প্রতি ডেকচিতে থাকে ২০ কেজি চাল ও ২০ কেজি গরুর মাংস এবং প্রয়োজনীয় মসলা। সে সূত্রে, প্রতিদিন প্রায় ৩০০ কেজি করে চাল ও মাংসের বিরিয়ানি রান্না হয় এখানে।
সে যা হোক, বিরিয়ানি রান্নার দুটি প্রণালি—কাচ্চি আর পাক্কি। এগুলো হলো দুই স্বভাবের দুই ভাইয়ের মতো। কাচ্চি মানে কাঁচা মাংস, চাল আর ঘি-মসলা দমে রেখে যে বিরিয়ানি রান্না হয়, সেটি। আর পাক্কি হলো, মাংস কিছুটা রান্না করে তা দিয়ে পুনরায় বিরিয়ানি রান্না করা। ক্যাম্পে রান্না হয় বিফ কাচ্চি। ছোট ছোট মাংসের টুকরো মসলায় মেখে তার পরতের ওপর চালের পরত সাজিয়ে ঢিমে আঁচে দীর্ঘসময় ধরে রান্না হয় বিফ কাচ্চি। ক্যাম্পে বিরিয়ানি রান্না হয় সাধারণত ২০ কেজি চালের সঙ্গে ২০ কেজি গরুর মাংস দিয়ে। সঙ্গে বিরিয়ানির মসলা।
মূলত জেনেভা ক্যাম্পের সীমাবদ্ধ জীবনে টিকে থাকার সংগ্রাম থেকে ক্যাম্পের বাজারে তৈরি হয়েছিল বিরিয়ানির দোকান। তারপর ধীরে ধীরে সেখানে স্থানীয় মানুষের চলাচলের পথ উন্মুক্ত হলে, মূলত নব্বইয়ের দশক থেকে এখানকার বিরিয়ানির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এর মূল কারণ ছিল গরুর মাংসের জন্য বিরিয়ানির দাম কম থাকা। খাসির মাংসের দাম এখনো যেমন গরুর মাংসের চেয়ে বেশি, তখনো তা-ই ছিল। ফলে কম দামে বিরিয়ানির মতো একটি সুস্বাদু খাবার পেয়ে লোকজন তা লুফে নেয়। আর এখন তো ক্যাম্পের বিরিয়ানি ঢাকা শহরের আস্ত এক গল্পের নাম। সে কারণেই কামাল বিরিয়ানির মালিক কামাল বলতে পারেন, ‘সুলতান ভাইয়ের মতো ঢাকায় আমারও একখান নাম আছে। সবাই আমারে কামালের বিরিয়ানির মালিক বলে চিনে।’
দরদাম
এখানকার প্রতিটি দোকানে বিরিয়ানির দাম প্রায় একই রকম। কোয়ার্টার ৬০ টাকা, হাফ ৯০ টাকা, ফুল ১২০ টাকা। ভিআইপি ১৫০ টাকা বা কাছাকাছি। এখানকার দোকানগুলো সাধারণত সকাল ১০টা থেকে মধ্যরাত বা ভোর পর্যন্ত খোলা থাকে।
বিরিয়ানি শব্দটির সঙ্গে বরাবরই কোনো না কোনো শহর বা জায়গার নাম জুড়ে যায়। যেমন ঢাকাই বিরিয়ানি বা কলকাতা কিংবা দিল্লি অথবা হায়দরাবাদি বিরিয়ানি। এর ফলে স্থান মাহাত্ম্য বাড়ে নাকি বিরিয়ানির স্বাদ বাড়ে, সেটা বলা কঠিন। কিন্তু বিষয়টি ঘটে। ঢাকার বিরিয়ানির এমনই একটি উপবিভাগ আছে, তার নাম ক্যাম্পের বাজারের বিরিয়ানি ওরফে ক্যাম্পের বিরিয়ানি।
তাজমহল রোডের বাম দিকে রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলের দেয়াল যেখানে কোণ তৈরি করেছে, সেখান থেকে শুরু হয়েছে জেনেভা ক্যাম্প। মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দরজার সামনেই জেনেভা ক্যাম্পে ঢোকার রাস্তা। সারি সারি কাপড়ের দোকান পার হয়ে হাতের বাম দিকে দ্বিতীয় গলিতে ঢুকলে প্রথম পাওয়া যাবে বোবার বিরিয়ানি। সেখান থেকে একটু সামনের দিকে এগোলে হাতের ডানে মামার বিরিয়ানি আর বোবার বিরিয়ানিকে পেছনে রেখে সামনে এগোলে কামাল বিরিয়ানি। এই তিনটি বিরিয়ানির দোকান জেনেভা ক্যাম্পের আদি দোকান। তবে এখানে প্রথম তৈরি হয়েছিল মামার বিরিয়ানি। তার কিছু পরে কামাল বিরিয়ানি এবং তারও পরে তৈরি হয়েছিল বোবার বিরিয়ানি। যেটির পোশাকি নাম ফায়জানে মদিনা।
ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুর নামের জায়গাটিতে গড়ে ওঠা জেনেভা ক্যাম্পের সংক্ষিপ্ত নাম ক্যাম্প। অবাঙালি অধিবাসীদের বসবাস এখানে। এখানকার বিরিয়ানি বেশ বিখ্যাত হয়ে গেছে ঢাকা শহরে। না, ফুড ভ্লগারদের জন্য নয়। এ দেশে ইন্টারনেট কিংবা ফুড ভ্লগিংয়ের ধারণা আসার বহু আগে থেকে রন্ধন কুশলতা ও স্বাদের কারণে ক্যাম্পের বিরিয়ানি বিখ্যাত ছিল। কচি খাসির মাংসে নয়, এখানকার বিরিয়ানি রান্না করা হয় গরুর মাংসে। এটিই ক্যাম্পের বিরিয়ানির মূল বৈশিষ্ট্য।
ভারত উপমহাদেশে সবজি, মাছ কিংবা মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্নার চল দেখা যায়। তবে বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রমাণের কারণে এটি প্রতিষ্ঠিত যে মাংস দিয়েই মূলত বিরিয়ানি রান্না করা হয়। পরে অনেক কারণে এর সঙ্গে সবজি ও মাছ যুক্ত হয়েছে। এই মাংসের মধ্যে বিরিয়ানিতে খাসির মাংস ব্যবহার করাই দস্তুর বলে জানা যায়। পুরোনো সংস্কৃত সাহিত্যিক সূত্রে হরিণের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্নার কথা জানা গেলেও গরুর মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্নার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। এমনকি পুরান ঢাকায় অতীতে কখনো বিফ কাচ্চি রান্না হয়েছিল বলে শোনা যায় না। বিফ অর্থাৎ গরুর মাংসের যে বিখ্যাত খাবার তৈরি হয়েছে পুরান ঢাকায়, সেটি তেহারি। কিন্তু ক্যাম্পের বাবুর্চিরা গরুর মাংসের বিরিয়ানি তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তো বটেই, একটি ট্রেন্ডও তৈরি করেছেন।
ক্যাম্পের বাজারে প্রতিদিন প্রায় ১৫ ডেকচি বিরিয়ানি রান্না হয়। প্রতি ডেকচিতে থাকে ২০ কেজি চাল ও ২০ কেজি গরুর মাংস এবং প্রয়োজনীয় মসলা। সে সূত্রে, প্রতিদিন প্রায় ৩০০ কেজি করে চাল ও মাংসের বিরিয়ানি রান্না হয় এখানে।
সে যা হোক, বিরিয়ানি রান্নার দুটি প্রণালি—কাচ্চি আর পাক্কি। এগুলো হলো দুই স্বভাবের দুই ভাইয়ের মতো। কাচ্চি মানে কাঁচা মাংস, চাল আর ঘি-মসলা দমে রেখে যে বিরিয়ানি রান্না হয়, সেটি। আর পাক্কি হলো, মাংস কিছুটা রান্না করে তা দিয়ে পুনরায় বিরিয়ানি রান্না করা। ক্যাম্পে রান্না হয় বিফ কাচ্চি। ছোট ছোট মাংসের টুকরো মসলায় মেখে তার পরতের ওপর চালের পরত সাজিয়ে ঢিমে আঁচে দীর্ঘসময় ধরে রান্না হয় বিফ কাচ্চি। ক্যাম্পে বিরিয়ানি রান্না হয় সাধারণত ২০ কেজি চালের সঙ্গে ২০ কেজি গরুর মাংস দিয়ে। সঙ্গে বিরিয়ানির মসলা।
মূলত জেনেভা ক্যাম্পের সীমাবদ্ধ জীবনে টিকে থাকার সংগ্রাম থেকে ক্যাম্পের বাজারে তৈরি হয়েছিল বিরিয়ানির দোকান। তারপর ধীরে ধীরে সেখানে স্থানীয় মানুষের চলাচলের পথ উন্মুক্ত হলে, মূলত নব্বইয়ের দশক থেকে এখানকার বিরিয়ানির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এর মূল কারণ ছিল গরুর মাংসের জন্য বিরিয়ানির দাম কম থাকা। খাসির মাংসের দাম এখনো যেমন গরুর মাংসের চেয়ে বেশি, তখনো তা-ই ছিল। ফলে কম দামে বিরিয়ানির মতো একটি সুস্বাদু খাবার পেয়ে লোকজন তা লুফে নেয়। আর এখন তো ক্যাম্পের বিরিয়ানি ঢাকা শহরের আস্ত এক গল্পের নাম। সে কারণেই কামাল বিরিয়ানির মালিক কামাল বলতে পারেন, ‘সুলতান ভাইয়ের মতো ঢাকায় আমারও একখান নাম আছে। সবাই আমারে কামালের বিরিয়ানির মালিক বলে চিনে।’
দরদাম
এখানকার প্রতিটি দোকানে বিরিয়ানির দাম প্রায় একই রকম। কোয়ার্টার ৬০ টাকা, হাফ ৯০ টাকা, ফুল ১২০ টাকা। ভিআইপি ১৫০ টাকা বা কাছাকাছি। এখানকার দোকানগুলো সাধারণত সকাল ১০টা থেকে মধ্যরাত বা ভোর পর্যন্ত খোলা থাকে।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে