মামলা নিষ্পত্তির দাবি সাবেক জলদস্যুদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোংলা (বাগেরহাট) থেকে
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৩৫
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ১৬

মাস্টার বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন সোহাগ আকন্দ। র‍্যাবের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি প্রথম আত্মসমর্পণ করেন। জানালেন, তিনি এখন ব্যবসা করছেন, ভালো আছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও র‍্যাবের কর্মকর্তারা তাঁদের দেখাশোনা করছেন। তবে সোহাগ বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি, দস্যুতা ছেড়ে আত্মসমর্পণ করলে আমাদের মামলাগুলো নিষ্পত্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার। আমাদের সেই মামলাগুলো নিষ্পত্তির দাবি জানাচ্ছি।’

মামলা নিয়ে কতটা হয়রানির মধ্যে আছেন, সোহাগের কথায় সেটি ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘দস্যুতা ছেড়ে আসায় সরকার ও র‍্যাবের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়। কিন্তু মামলার খরচ জোগাতে অনুদানের টাকা শেষ হয়ে যায়। আমরা ভোগ করতে পারি না। আমাদের ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ সদস্যের আকুল আবেদন, আমাদের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করলে আমরা ভালোভাবে বাঁচতে পারতাম।’

এ সময় সোহাগের কথার প্রতি সমর্থন জানিয়ে সুন্দরবনের সাবেক জলদস্যুরা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি তোলেন।

বাগেরহাটের রামপালে গতকাল সোমবার দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পণ করা ব্যক্তিদের পুনর্বাসন অনুষ্ঠানে সোহাগসহ কয়েক শ সাবেক জলদস্যু অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনে জলদস্যুতা ছেড়ে আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। তাঁদের পুনর্বাসন করা হয়েছে কি না, জানতে চেয়েছেন। আপনাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দাবি ছিল মামলা প্রত্যাহারের। ধর্ষণ ও খুনের মামলা ছাড়া অবশ্যই পর্যায়ক্রমে সব মামলা তুলে নেওয়া হবে।’ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের মধ্যে খুন ও ধর্ষণের মামলায় কাউকে কোনো আইনি সহযোগিতা করা হবে না।

জলদস্যুতা ছেড়ে দিলেও অনেকেই গোপনে আবার ফিরছেন পুরোনো পেশায়, এমন দাবি করে র‍্যাবের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আত্মসমর্পণ করে কেউ যদি বিপথগামী হন, তাহলে বিপদে পড়বেন। র‍্যাবের সহযোগিতার হাত সংকুচিত হয়ে আইনের হাত প্রসারিত হবে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত দিবস উপলক্ষে সাবেক দস্যুদের মধ্যে পাকা ঘর, দোকান ও গবাদিপশু তুলে দেন অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু, খুলনা-২ আসনের সাংসদ শেখ সালাহউদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. হাবিবুর রহমান ও পীর ফজলুর রহমান, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন প্রমুখ। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত