১ কিমি সড়কের সংস্কারকাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮: ০৬
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৪৪

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশী থেকে চররুহিতা সড়কের এক কিলোমিটার অংশের সংস্কারকাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। দীর্ঘ এ সময় ধরে সড়কটি এবড়োখেবড়ো করে ফেলে রাখা হয়েছে। তাতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই সড়কে চলাচলকারী ব্যক্তিরা।

উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজার থেকে চররুহিতা সড়কটির এক কিলোমিটার এলাকা পড়েছে রায়পুর অংশে। ‘বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন-তৃতীয় পর্যায় (জিএনপি-৩)’ প্রকল্পের আওতায় সড়কটি সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রায় ৬১ লাখ টাকায় কাজটির দরপত্র হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় কয়েক দফা সময় বাড়ানো হয়।

রায়পুরের মেহেদী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের কার্যাদেশ পায়। এর মালিক পৌর কাউন্সিলর মেহেদী হাসান শিশির পাঠান। কিন্তু তিনি কাজ না করে বেচে দেন অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদা এন্টারপ্রাইজের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে। মূল ঠিকাদার লভ্যাংশ নিয়ে কাজটি না করে সরে গেলেও টাকার অভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি দ্বিতীয় ঠিকাদার। শুধু এটি নয়, তাঁর কেনা আরও তিনটি সংস্কার কাজের একই অবস্থা। বর্ষা মৌসুমে খোয়া সরে গিয়ে রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি করেছে। কোথাও কোথাও এতটাই খারাপ অবস্থা যে, এই শুকনো মৌসুমেও লোকজনের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।

বিকল্প না থাকায় এ রাস্তা দিয়েই নিয়মিত চলাচল করতে হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী আসলাম মাঝিকে (৪৫)। গত বর্ষা মৌসুমে ১১-১২ বার এ রাস্তার গর্তে পড়েছেন তিনি। ক্ষুব্ধ আসলাম বলেন, ‘এক মাইল রাস্তার কাজ করতে যদি তিন বছর লেগে যায়, তবে এমন উন্নয়নকাজের আমাদের দরকার নেই।’

চরলক্ষ্মী জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটি খুঁড়ে এভাবে ফেলে রাখায় আমরা চরম ভোগান্তির শিকার। সকাল-বিকেল দুই বেলা ভোগান্তি নিয়েই এই পথে যাতায়াত করতে হয়। স্কুলের শিক্ষার্থীরাও চরম ভোগান্তির শিকার। সংস্কারের নামে এভাবে আমাদের দুর্ভোগ বাড়ানোর কোনো অর্থ হয় না। উন্নয়নের নামে আমাদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে।’

ব্যাংকার জাকির হোসেন বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমাদের এভাবে ভোগান্তির শিকার বানানো হয়েছে। কবে নাগাদ আমাদের কষ্ট শেষ হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।’

ঠিকাদার মেহেদী হাসান শিশির পাঠান বলেন, ‘ইটের কারণে কাজ সম্পন্ন করতে দেরি হচ্ছে বলে দ্বিতীয় ঠিকাদার আমাকে জানিয়েছেন। নতুন ইট পেলেই দ্রুত কাজটি শেষ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

ঠিকাদার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। সময়মতো বিল না পাওয়ায় কাজ শেষ করা যায়নি। আগামী মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করা হবে।’

রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ বলেন, ‘অল্প সময় হয় আমি এখানে যোগদান করেছি। ঠিকাদারকে দিয়ে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত