সেই কাঠের সেতুই এখন পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ১১
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৫৮

সেতুর নিচে সমুদ্রের ঢেউয়ের সুমধুর শব্দ। তার ওপরে দিয়ে হেঁটে চলা। একটু পরপরই চার চালা খড়ের ছাউনি ঘর। ঘরে আছে সাময়িক বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা। সমুদ্রসৈকতে তৈরি করা ৮০০ মিটার কাঠের সেতুর পুরোটাই সাজানো হয়েছে রঙিন পতাকা দিয়ে। নোয়াখালী হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে স্থানীয় যুবকদের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করা এ সেতু দেখতে এখন ভিড় করছেন দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক।

নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার সমুদ্রসৈকতে তৈরি করা হয় এ সেতু। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক আসনে এ সেতু দেখতে। অনেকে সেতুর ওপরে দাঁড়িয়ে তুলছেন ছবি। কেউ কেউ করছেন ভিডিও।

সম্প্রতি নিঝুম দ্বীপ সমুদ্রসৈকত ঘুরে দেখা যায়, গাছের খুঁটির ওপর কাঠের পাটাতন বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৮০০ মিটারের বিশাল সেতু। দীর্ঘ সেতুর মাঝখানে ও শেষ মাথায় দুটি ছাউনি ঘর তৈরি করা হয়েছে। ভ্রমণপিপাসুরা ছাউনি ঘরে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। বিশেষ করে পর্যটকেরা আসেন শেষ বিকেলের সূর্যাস্ত দেখতে। সেতুর শেষ প্রান্ত থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ পর্যটকেরা।

নিঝুম দ্বীপের সমুদ্রসৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন যুবক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে এ সেতু নির্মাণ করেন। গত মাসে সেতুটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এখন কেউ কাঠের এ সেতুটিতে উঠলে ৩০ টাকা করে দিতে হয়।

কাঠের এ সেতুর তত্ত্বাবধানে থাকা স্থানীয় যুবক সুমন বলেন, সেতুর ওপরে উঠতে গিয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে যে টাকা আয় হয়, তা আবার সৈকতের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। ইতিমধ্যে সৈকতের জন্য কিছু ছাতা ও বসার টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নিঝুম দ্বীপে ঘুরতে আসা পর্যটক মারুফ কামালে সঙ্গে কথা হয় সমুদ্রসৈকত মাঠে। তিনি বলেন, ‘পুরো নিঝুম দ্বীপটি অনেক সুন্দর ও মনোরম। আমরা ২০ জন সহপাঠী একসঙ্গে এখানে ঘুরতে এসেছি। সৈকতে স্থাপিত ৮০০ মিটার লম্বা সেতুর শেষ প্রান্তে গিয়ে পরিবেশটা অন্য রকম দেখেছি। সেতুর শেষ প্রান্ত থেকে সূর্যাস্তের দারুণ উপভোগ করা যায়।’

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাকিব বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় নিঝুম দ্বীপে নদীর ওপর তৈরি হওয়া কাঠের সেতুর ছবি দেখেছি। অনেকে এ সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে লাইভেও কথা বলেছেন। তা দেখে আজ কয়েকজন বন্ধুসহ বাস্তবে দেখতে এলাম। এসে দেখলাম অনেক সুন্দর দৃশ্যটি। বিদেশের মতো ততটা গোছানো না হলেও অনেক ভালো লেগেছে সেতুটি দেখে।’

হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বলেন, ‘কাঠের এ সেতুটি তৈরি করা হয়েছে স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায়। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে কয়েকজন যুবক দীর্ঘ এক মাস শ্রম দিয়ে তৈরি করেন এ সেতু। দ্বীপের বিশাল সৈকতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ৮০০ মিটারের এ বিশাল কাঠের সেতু তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি, যা এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের অন্য রকম দৃশ্য উপভোগে সহায়ক হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত