আসাদ সরকার
একসময় রিকশার পেছনে তাকালেই চোখে পড়ত বাংলা সিনেমার পোস্টার বা সময়ের জনপ্রিয় কোনো নায়ক-নায়িকার মুখের ছবি। এসব চিত্রকর্ম তৈরি হতো কোনো এক শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায়। সময়ের বিবর্তনে সিনেমার পোস্টার কিংবা নায়ক-নায়িকার জায়গায় প্রকৃতির নানা রূপের চিত্রকর্ম স্থান করে নিয়েছে এখন। তুলির জায়গা কিছুটা দখল করেছে ডিজিটাল প্রিন্ট। তবে ডিজিটাল প্রিন্ট রিকশার সব জায়গায় প্রয়োগে সমস্যা বা ব্যয়বহুল বলে এখনো প্রয়োজন পড়ে হাতের পেইন্টারের। জামাল উদ্দীন তেমন একজন রিকশা পেইন্টার, যাঁর চার পুরুষ বংশপরম্পরায় এই পেইন্টিং পেশার সঙ্গে জড়িত।
প্রথম পুরুষ আব্দুস সোবহান ব্রিটিশ আমলে জমিদারদের প্রতিমা ও বাড়ির দেয়ালের নকশা পেইন্টিং করতেন। তাঁর দুই যমজ সন্তান সিরাজুল ও এমামুল দুজনেই ছিলেন চিত্রশিল্পী। সিরাজুল সাইনবোর্ড লিখতেন, আর্ট করতেন। এমামুলও তা-ই করতেন। তবে একসময় ফায়ার সার্ভিসে পেইন্টারের পদে চাকরি পেয়ে যান। এমামুলের তিন সন্তান হাদিস, সাদেক ও বাবু এবং সেরাজুলের চার সন্তান আব্দুল, জমির, সমীর ও আমির। তাঁরা প্রত্যেকেই বাবার মতো চিত্রশিল্পী ছিলেন। বাস, ট্রাক, বিশেষ করে রিকশা পেইন্টিংয়ে জড়িত ছিলেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে সাদেক আর বাবু বেঁচে আছেন। এখনো পেইন্টিংই তাঁদের পেশা। শুধু তা-ই নয়, সাদেকের দুই ছেলে আরশাদ ও পারভেজ এবং মৃত আব্দুলের ছেলে জামালও রয়েছেন একই পেশায়। অর্থাৎ চার পুরুষ ধরে পেশা অপরিবর্তিত রেখেছে এই পরিবার।
বলছি রাজশাহীর ‘জামাল আর্ট’-এর কথা । বাবা-ছেলে, চাচা-ভাতিজা সাদেক, বাবু, আরশাদ ও জামালকে নিয়ে গড়ে ওঠা ‘জামাল আর্ট’ এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ রিকশায় পেইন্টিং করেছে। বাস ও ট্রাক প্রায় দুই লাখ। একমাত্র সিলেট ছাড়া প্রায় সব বিভাগেই আমন্ত্রণ পেয়ে কাজ করেছেন তাঁরা। পরিবারের চার সদস্য একসঙ্গে মিলে কাজ করেন বলে মাত্র চার ঘণ্টায় একটা রিকশা পুরো পেইন্টিং করতে পারেন তাঁরা। আর তাই রাজশাহীসহ সারা দেশেই সুনাম অর্জন করেছে ‘জামাল আর্ট’-এর এই পরিবার। তবে ব্যাপারটা শুধু সুনাম পর্যন্তই। চার পুরুষের এই পেশায় ভাগ্য ফেরেনি তাঁদের। আর তাই হয়তো জামাল উদ্দীন দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘আমরাই এই পেশার শেষ প্রজন্ম। আমাদের সন্তানেরা কেউ-ই এই পেশায় আসবে না।’ কারণ জানতে চাইলে তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়ে চাচা এস এম বাবু বলেন, ‘শিল্প কিংবা শিল্পীর কোনো মূল্যায়ন নাই এই দেশে। সাধারণ পাবলিক তো বোঝেই না, এমনকি সরকারও এ নিয়ে কোনো মাথা ঘামায় না। দেইখেন, শিল্প-সংস্কৃতি শ্যাষ হয়া যাইবে।’ তাঁর কথায় ক্ষোভের চেয়ে হতাশার প্রকাশ বেশি। গল্পে গল্পে সেসব হতাশার কথা শুনি। কিন্তু কোনো জবাব দিতে পারি না।
একটা রিকশা চারজন মিলে পেইন্টিং করে মাত্র এক হাজার টাকা সম্মানী পাওয়ার কথা শুনে অবাক হই। আবার অভিভূত হই মানুষগুলোর চেতনা বোধ দেখে। প্রতিটা রিকশায় পেইন্টিং শেষে তাঁরা মাদকবিরোধী একটা স্লোগান লিখে দেন নিজ উদ্যোগে। এটা তাঁদের কেউ বলে দেয় না। মাদক থেকে যাত্রী ও রিকশাওয়ালাদের সচেতন করতেই মূলত স্লোগানটা লেখেন তাঁরা।
লেখক: নাট্যকার ও নির্মাতা
একসময় রিকশার পেছনে তাকালেই চোখে পড়ত বাংলা সিনেমার পোস্টার বা সময়ের জনপ্রিয় কোনো নায়ক-নায়িকার মুখের ছবি। এসব চিত্রকর্ম তৈরি হতো কোনো এক শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায়। সময়ের বিবর্তনে সিনেমার পোস্টার কিংবা নায়ক-নায়িকার জায়গায় প্রকৃতির নানা রূপের চিত্রকর্ম স্থান করে নিয়েছে এখন। তুলির জায়গা কিছুটা দখল করেছে ডিজিটাল প্রিন্ট। তবে ডিজিটাল প্রিন্ট রিকশার সব জায়গায় প্রয়োগে সমস্যা বা ব্যয়বহুল বলে এখনো প্রয়োজন পড়ে হাতের পেইন্টারের। জামাল উদ্দীন তেমন একজন রিকশা পেইন্টার, যাঁর চার পুরুষ বংশপরম্পরায় এই পেইন্টিং পেশার সঙ্গে জড়িত।
প্রথম পুরুষ আব্দুস সোবহান ব্রিটিশ আমলে জমিদারদের প্রতিমা ও বাড়ির দেয়ালের নকশা পেইন্টিং করতেন। তাঁর দুই যমজ সন্তান সিরাজুল ও এমামুল দুজনেই ছিলেন চিত্রশিল্পী। সিরাজুল সাইনবোর্ড লিখতেন, আর্ট করতেন। এমামুলও তা-ই করতেন। তবে একসময় ফায়ার সার্ভিসে পেইন্টারের পদে চাকরি পেয়ে যান। এমামুলের তিন সন্তান হাদিস, সাদেক ও বাবু এবং সেরাজুলের চার সন্তান আব্দুল, জমির, সমীর ও আমির। তাঁরা প্রত্যেকেই বাবার মতো চিত্রশিল্পী ছিলেন। বাস, ট্রাক, বিশেষ করে রিকশা পেইন্টিংয়ে জড়িত ছিলেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে সাদেক আর বাবু বেঁচে আছেন। এখনো পেইন্টিংই তাঁদের পেশা। শুধু তা-ই নয়, সাদেকের দুই ছেলে আরশাদ ও পারভেজ এবং মৃত আব্দুলের ছেলে জামালও রয়েছেন একই পেশায়। অর্থাৎ চার পুরুষ ধরে পেশা অপরিবর্তিত রেখেছে এই পরিবার।
বলছি রাজশাহীর ‘জামাল আর্ট’-এর কথা । বাবা-ছেলে, চাচা-ভাতিজা সাদেক, বাবু, আরশাদ ও জামালকে নিয়ে গড়ে ওঠা ‘জামাল আর্ট’ এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ রিকশায় পেইন্টিং করেছে। বাস ও ট্রাক প্রায় দুই লাখ। একমাত্র সিলেট ছাড়া প্রায় সব বিভাগেই আমন্ত্রণ পেয়ে কাজ করেছেন তাঁরা। পরিবারের চার সদস্য একসঙ্গে মিলে কাজ করেন বলে মাত্র চার ঘণ্টায় একটা রিকশা পুরো পেইন্টিং করতে পারেন তাঁরা। আর তাই রাজশাহীসহ সারা দেশেই সুনাম অর্জন করেছে ‘জামাল আর্ট’-এর এই পরিবার। তবে ব্যাপারটা শুধু সুনাম পর্যন্তই। চার পুরুষের এই পেশায় ভাগ্য ফেরেনি তাঁদের। আর তাই হয়তো জামাল উদ্দীন দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘আমরাই এই পেশার শেষ প্রজন্ম। আমাদের সন্তানেরা কেউ-ই এই পেশায় আসবে না।’ কারণ জানতে চাইলে তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়ে চাচা এস এম বাবু বলেন, ‘শিল্প কিংবা শিল্পীর কোনো মূল্যায়ন নাই এই দেশে। সাধারণ পাবলিক তো বোঝেই না, এমনকি সরকারও এ নিয়ে কোনো মাথা ঘামায় না। দেইখেন, শিল্প-সংস্কৃতি শ্যাষ হয়া যাইবে।’ তাঁর কথায় ক্ষোভের চেয়ে হতাশার প্রকাশ বেশি। গল্পে গল্পে সেসব হতাশার কথা শুনি। কিন্তু কোনো জবাব দিতে পারি না।
একটা রিকশা চারজন মিলে পেইন্টিং করে মাত্র এক হাজার টাকা সম্মানী পাওয়ার কথা শুনে অবাক হই। আবার অভিভূত হই মানুষগুলোর চেতনা বোধ দেখে। প্রতিটা রিকশায় পেইন্টিং শেষে তাঁরা মাদকবিরোধী একটা স্লোগান লিখে দেন নিজ উদ্যোগে। এটা তাঁদের কেউ বলে দেয় না। মাদক থেকে যাত্রী ও রিকশাওয়ালাদের সচেতন করতেই মূলত স্লোগানটা লেখেন তাঁরা।
লেখক: নাট্যকার ও নির্মাতা
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে