Ajker Patrika

রোগীর চাপ, শয্যার সংকট

নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ১০: ২৮
রোগীর চাপ, শয্যার সংকট

১০০ শয্যার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে রোগীর চাপ। ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি। জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন রোগীরা। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীই বেশি। হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। এ কারণে মেঝে ও বারান্দায় থেকে অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। গত দুই দিনে হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় দুই হাজার রোগী। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে বর্তমানে রোগী ভর্তি আছেন ১৯৭ জন। এর মধ্যে মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি ৯৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২০ জন ও পুরুষ ও অন্যান্য ওয়ার্ডে ৭৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এ ছাড়া জরুরি বিভাগ থেকে গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মোট ৪৬ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। বিপুল সংখ্যা রোগীর সিট সংকুলান না হওয়ায় অনেক রোগীকে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় অসুস্থ শিশু ও নবজাতককে নিয়ে বসে আছেন মায়েরা। শয্যা সংকটের কারণে নারী ও শিশু ওয়ার্ড, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনের বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ভর্তি হওয়া অনেক রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কিছু সংখ্যক শয্যা (বেড) বাইরে স্থাপন করা হয়েছে। সেই সেব বেডে স্থান দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের নিয়মিত শয্যা না পাওয়া জরুরি ও মুমূর্ষু রোগীদের।

নড়িয়া থেকে ৩ বছরের শিশু মিনহাজকে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি নিয়ে গত শনিবার হাসপাতালে ভর্তি করেন মিলন ব্যাপারী। দুদিন ধরে হাসপাতালের করিডরের মেঝেতে চিকিৎসা নেওয়ার পর সোমবার হাসপাতালের একটি শয্যা পেয়েছেন মিলন। তবে শিশু ওয়ার্ডে জায়গা না হওয়ায় হাসপাতালের করিডরে থাকা ওই সিটে আপাতত চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু মিনহাজ। অসুস্থ মিনহাজের বাবা মিলন ব্যাপারী বলেন, ‘এই শীতের মধ্যে ২ দিন হাসপাতালের মেঝেতে কোনো রকমের বিছানা পেতে শিশুটির চিকিৎসা করাতে হয়েছে। আজ দুপুরের দিকে একটি সিট পেলেও এখনো বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। রাতে প্রচুর শীত পড়ে। ঠান্ডা বাতাসে ছেলে সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।’

সদর উপজেলার বিনোদপুর থেকে গত শনিবার হাসপাতালে আসেন অন্তঃসত্ত্বা নাদিয়া বেগম। ওই দিন সিজারে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দিয়েছেন নাদিয়া। কিন্তু নবজাতক শিশুকে নিয়ে হাসপাতালের শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে জায়গা হয়নি তাঁর। শনিবার থেকেই হাসপাতালের বারান্দায় একটি অস্থায়ী শয্যায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই মা ও শিশুটি। আক্ষেপ করে নাদিয়া বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, ক্লিনিকে যাইতে অনেক বেশি টাহা পয়সা লাগে। কোনো উপায় না থাহোনে আমরা সরকারি হাসপাতালে আহি। দুই দিন ধইরা জন্ম নেওয়া এই শিশুটি লইয়া বারান্দায় চিকিৎসা নিতাছি। ছিট নাই, ডাক্তারেরা দিবো কোনহানতোনে? শীতে আমাগো অনেক কষ্ট হইতাছে।’

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘হঠাৎ করে কিছুটা ঠান্ডা পরায় হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। হাসপাতালে শয্যা সংকট থাকায় রোগীদের মেঝেতে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকায় এই বিপুল সংখ্যা রোগীর চিকিৎসা দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত