সালাতুল হাজতের ফজিলত ও নিয়ম

মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮: ৫৮

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, নামাজ আল্লাহর সাহায্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বিভিন্ন প্রয়োজনের মুহূর্তে অথবা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজ পড়ে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতেন।

হজরত হুজাইফা (রা.) বর্ণনা করেন, যখন কোনো বিষয় রাসুল (সা.)-কে চিন্তিত করে তুলত, তখন তিনি নামাজ পড়তেন।’ (আবু দাউদ) অন্য একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ অজু করে সুন্দরভাবে দুই রাকাত নামাজ পড়বে, সে আল্লাহর কাছে যা চাইবে তা তিনি দান করবেন দ্রুত অথবা দেরিতে।’ (মুসনাদে আহমদ)

আরেক হাদিসে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তির ধর্মীয় অথবা পার্থিব প্রয়োজন আছে, সে প্রথমে ভালোভাবে অজু করবে, তারপর দুই রাকাত নামাজ পড়বে, তারপর আল্লাহর হামদ-সানা ও রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করবে। এরপর বলবে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অতি সহিষ্ণু ও দয়ালু। সব দোষ-ত্রুটি থেকে তিনি পবিত্র। সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি সমগ্র মহাবিশ্বের প্রতিপালক। হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আপনার রহমত, ক্ষমা ও মাগফিরাত আবশ্যককারী সব বিষয়ের অসিলায় সব ভালো কাজে সাফল্য লাভের এবং সব ধরনের পাপ থেকে নিরাপত্তা লাভের জন্য প্রার্থনা করছি।

হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু, আমার সব গুনাহ ক্ষমা করে দিন। আমার সব সমস্যা সমাধান করে দিন। আমার এমন সব প্রয়োজন পূরণ করে দিন, যার প্রতি আপনার সন্তুষ্টি রয়েছে।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

এই হাদিসগুলোতে যে বিশেষ নামাজের কথা বলা হয়েছে, তাকে ইসলামের পরিভাষায় সালাতুল হাজত বা প্রয়োজনের নামাজ বলা হয়। শেষোক্ত হাদিসে যেভাবে বলা হয়েছে, এটাই এ নামাজ পড়ার সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি; অর্থাৎ ভালোভাবে অজু করে সাধারণ নিয়মে দুই রাকাত নামাজ পড়বে। এরপর হাদিসের নির্দেশনা অনুসারে আল্লাহর হামদ-সানা ও দরুদ পাঠ করে হাদিসে শিখিয়ে দেওয়া বিশেষ বাক্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।

বিভিন্ন বাংলা পুস্তিকায় ‘সালাতুল হাজত’ শিরোনামে বারো রাকাত নামাজের যে বিশেষ পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে, তা বিশুদ্ধ হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। (আল-মাওজুআত, ইবনুল জাওযি) 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত