চট্টগ্রামের আদালত ভবনের ‘কোর্ট হিল’কে ‘পরীর পাহাড়’ না লেখার জন্য অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম প্রথম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইছরাত জাহান নাসরিন এ আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গত ৭ নভেম্বর ‘কোর্ট হিল’কে পরীর পাহাড় লেখার ওপর জেলা প্রশাসকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দেওয়ানি মামলা করা হয়। আদালত মামলার বিবাদী জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমানসহ ৪ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। গতকাল বুধবার তাঁরা আইনজীবীর মাধ্যমে বক্তব্য উপস্থাপনের সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি দিন ঠিক করেন।

মামলাটির বাদী চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলায় বিবাদীরা জবাব না দেওয়া পর্যন্ত ‘কোর্ট হিল’কে পরীর পাহাড় না লিখতে অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

অন্য বিবাদীরা হলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ কামরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান ও বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আতিকুর রহমান।

মামলার আবেদনে সরকারি বিভিন্ন দলিলপত্রে আদালত ভবনের পাহাড়টি ‘কোর্ট হিল’ হিসেবে পরিচিত বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি বর্তমান জেলা প্রশাসকের বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুনে পাহাড়টিকে পরীর পাহাড় লেখা হচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রামের কোর্ট হিলে প্রথম যে লাল দালানটি হয় সেটিকে দেশের মানুষ কোর্ট বিল্ডিং হিসেবেই চেনে। আর পাহাড়টিকে কোর্ট হিল বলেই সরকারি-বেসরকারি দলিলপত্রে লেখা হয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০১০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরের এক চিঠিতে, ২০০৭ সালের ৫ নভেম্বরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক অনুমোদনপত্রে এটিকে অতীতের ধারাবাহিকতায় কোর্ট হিল উল্লেখ করেছেন।

শুধু তাই নয়, এ মামলার ৩ নম্বর বিবাদী নাজমুল আহসান আইনজীবী সমিতির সঙ্গে ২০১৪ সালে করা এক চুক্তিতে এটিকে ‘কোর্ট হিল’ উল্লেখ করে স্বাক্ষর করেছিলেন। অপর দিকে বর্তমান জেলা প্রশাসক চলতি বছরের ৮ আগস্ট থেকে ‘কোর্ট হিল’ শব্দের পরে বন্ধনীবদ্ধ করে ‘পরীর পাহাড়’ লেখা শুরু করেন।