লালমাই পাহাড় ঘেরা শীত

অনন মজুমদার
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬: ৪৬
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ০৮

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সন্ধ্যা বা রাতের বেলায় দাঁড়ালে চুম্বকের মতো আকর্ষণ অনুভূত হয়। কাজ না থাকলেও একাডেমিক ভবনের চারপাশ ঘুরে আসতে ইচ্ছে হয়। সারাটা দিন ক্যাম্পাসে থাকলেও এ ইচ্ছার কারণ রয়েছে। সেটি হচ্ছে, ক্যাম্পাস ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ভিন্ন সময়ে ভিন্ন রকম সুন্দর দেখায়। প্রতিটি গাছ নতুন মায়ার সৃষ্টি করে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এই শীত লালমাই পাহাড় বেয়ে নেমে আসে। তাই সারা দেশের চেয়ে এটি ভিন্ন।

তেমনি প্রতি ঋতুতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস ধারণ করে ভিন্ন ভিন্ন রূপ। গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদ, বর্ষার বৃষ্টিবিলাস, শরতের কাশফুল সঙ্গে বিশাল আকাশ, এরপর শীতের মায়া। এই মায়া সবচেয়ে সুন্দর মনে হয়।

পৌষ-মাঘ দুই মাস কুবি ক্যাম্পাস অনেকটা উৎসবের আমেজে থাকে। এ আমেজকে পুঁজি করে স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়তি আয়ের সুযোগ নেয়। সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাস এলাকার আশপাশে বসে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। অনেক দূর-দূরান্তের বাড়িছাড়া শিক্ষার্থীরা দোকানগুলোতে মায়ের হাতের পিঠার স্বাদ খোঁজে।

এদিকে ক্যাম্পাসে গোলচত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করে। খেলায় শীত উধাও হয়। গ্রীষ্মের রোদের আবহ দেখা দেয়। ঘাম ঝরে খেলোয়াড়দের।

শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান নোবেল বলেন, ‘শহুরে শীতের চেয়ে লালমাই পাহাড় বেয়ে নেমে আসা শীত আমার প্রিয়। ঘাসের ওপর ভোরের শিশির, হলের জানালার কাচে জমা কুয়াশা কিংবা শীতের পাতা ঝরে পড়া এই সবকিছুই আমাকে অন্য রকম মায়ায় জড়িয়ে রাখে। ক্যাম্পাসের এই শীতের জন্য প্রতিবছর অপেক্ষায় থাকি। এবারও শীত এসেছে। এটি আমার বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শেষ শীত। এরপর শিক্ষার্থী হিসেবে আর শীত পাব না। শুধু ক্যাম্পাসের পাতা ঝরে পড়ার কথা মনে পড়বে।’

করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। সেই বিরহের সুখ নিচ্ছেন বর্তমান শিক্ষার্থীরা। তাই এবারে শীত যেন দ্বিগুণ উৎসাহে উপভোগ করছেন ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্টরা।

তবে এই উদ্‌যাপনের পাশাপাশি ক্যাম্পাসের মূল উদ্দেশ্য তথা শিক্ষা ও গবেষণার প্রতি আমাদের বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়।

লেখক: অনন মজুমদার

শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত