দ্বীপে শোভা পাচ্ছে ড্রাগন

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮: ৪২
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ০২

কাপ্তাই হ্রদের ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে মুবাছড়ি গ্রাম। রাঙামাটির বন্দুক ভাঙা ইউনিয়নের এই গ্রামের একটি দ্বীপে শোভা পাচ্ছে রঙিন ড্রাগন ফল। প্রথমবারের মতো এই গ্রামে ড্রাগনের চাষ করা হয়েছে।

সম্প্রতি মুবাছড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নিয়তি রঞ্জন চাকমার বাড়ির পাশে একটি দ্বীপে গাছে গাছে ঝুলছে ড্রাগন ফল। প্রতিটি গাছেই ফল ধরেছে। নিয়তি রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘আমি শখ করে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ৬০টি ড্রাগন ফলের চারা সংগ্রহ করি। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কিংসুক চাকমার পরামর্শমতে চারাগুলো রোপণ করি। কৃষি অফিস থেকে সারও দেওয়া হয়। রোপণের এক বছরের মাথায় ফলন আসতে শুরু করে। প্রথম বছর আয় ছিল প্রায় ১ লাখ টাকা। এখন প্রতিটি গাছে ১০-১২ কেজি করে ড্রাগন ফল ধরে। এ বছর ভালো আয় হবে। চাষের আওতা আরও বাড়ানোর কথা ভাবছি। চারা তৈরি করছি। অনেকে চারা নিচ্ছে আমার কাছ থেকে।’

উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এই এলাকার মাটি ড্রাগন ফলের জন্য উপযোগী হওয়ায় বেশ লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

বন্দুক ভাঙায় অনেক দ্বীপ অনাবাদি পড়ে আছে। নিয়তি রঞ্জনের সফলতা দেখে অনেকে ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। নিচ্ছেন চারা ও পরামর্শ। দীপন চাকমা (৩৫) বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমার জায়গায়ও ড্রাগন হবে। সে জন্য নিয়তি রঞ্জনের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করছি। আপাতত ২০টি চারা নিয়েছি। আরও নেব।’

ড্রাগন চাষ করতে ইতিমধ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন আগ্রহী চাষিরা। বন্দুক ভাঙার মাটি ড্রাগন ফল চাষে বেশ উপযোগী বলছে কৃষি বিভাগ। উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মুকুল কান্তি দেওয়ান বলেন, ‘বন্দুক ভাঙায় ড্রাগনের প্রচুর সম্ভাবনা দেখছি। এ ফলের সঙ্গে অন্যান্য ফল ও সবজি চাষ করা যায়। তাতে যে কেউ লাভবান হবেন।’

বন্দুক ভাঙা এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কিংসুক চাকমা বলেন, ‘নিয়তি রঞ্জনের সফলতা দেখে অনেকে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাঁরা।’

রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহীদের চিহ্নিত করে তাদের চারা ও সার দেওয়ার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। এলাকাটি যেহেতু ড্রাগন ফলের জন্য উপযোগী, তাই আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় আমরা করব। এলাকায় কোনো দ্বীপ যেন অনাবাদি না থাকে সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, রাঙামাটি জেলায় ১৫ হেক্টর, রাঙামাটি সদরে ৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের আবাদ হচ্ছে। প্রতি বছর আবাদ বাড়ছে। বছরে এ এলাকা থেকে ৭৫ মেট্রিক টন ড্রাগন উৎপাদন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ। রাঙামাটি বাজারে ড্রাগন ৩-৪ শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত