আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশব্যাপী বিভাগীয় সমাবেশ করছে বিএনপি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১১ নভেম্বরের পর সারা দেশে রাজপথ দখলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। গতকাল শনিবার রংপুর জেলা যুবলীগের সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। দীর্ঘ ২৬ বছর পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে যুবলীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে মাঠ।

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ মামুনের সভাপতিত্বে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন মিছিল-সমাবেশ করছে। আমরা বলছি, এখন যত মিছিল সমাবেশ করার ইচ্ছে করে নেন। আগামী ১১ নভেম্বর যুবলীগ সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন করবে। ওই দিনের পর সারা দেশের রাজপথে যুবলীগ থাকবে।তখন দেখা যাবে কত ধানে কত চাল।’

সম্মেলনের প্রধান বক্তা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে হলে পরিবহন ধর্মঘট আওয়ামী লীগ দেয় না। এই ধর্মঘট দেন পরিবহন শ্রমিকেরা। কারণ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা জানে বিএনপি অতীতে আন্দোলন-সমাবেশের নামে জ্বালাও-পোড়াও করেছে, ভাঙচুর করেছে, পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এ কারণে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা বিএনপির হামলা-ভাঙচুরের ভয়ে পরিবহন ধর্মঘট দেন। তাঁরা ভয়ে গাড়ি বের করেন না। বিএনপির ভয়ে মানুষ ঘর থেকে বের হতে চায় না।’

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, শাজাহান খান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক ও কার্যনির্বাহী সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া।

রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ‘এ দেশ নিয়ে সব সময়ই ষড়যন্ত্র হয়ে আসছে। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি, তারা এখনো এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সব ষড়যন্ত্রের জবাব জনগণ দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। এখন আর কোনো ষড়যন্ত্রকারীকে ছাড় দেওয়া যাবে না।’

শাজাহান খান বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অপশক্তি এখন শেখ হাসিনাকে উৎখাত করতে চায়। তারা বলতে চায়, শেখ হাসিনাকে তারা টেনেহিঁচড়ে নামাবে, আওয়ামী লীগের শেকড় কেটে দেবে। আওয়ামী লীগের শেকড় জনগণের হৃদয়ে প্রোথিত। এই শেকড় উপড়ে ফেলানো যায় না। এই শেকড় এত গভীরে, যা কেউ উপড়ে ফেলতে পারে নাই। বিগত দিনেও পারে নাই, আজকেও পারবে না।’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বিএনপিকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আরেকবার যুদ্ধে যেতে হবে।পরাজিত শক্তি বারবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। পরাজিত শক্তিকে আবার পরাজিত করার জন্য আরেকটা যুদ্ধের প্রয়োজন।’

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ কে এম ছায়াৎ হোসেন বকুল।