Ajker Patrika

৮ বছর ধরে বন্ধ অস্ত্রোপচার

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ১২: ৫৯
৮ বছর ধরে বন্ধ অস্ত্রোপচার

চিকিৎসাসেবাসহ বেশ কয়েকটি কারণে চারবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদক পেয়েছিল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রটি। যন্ত্রপাতি, সরাঞ্জমসহ হাসপাতালটিতে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থাকলেও নেই প্রসূতি, অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্টসহ ১১ পদের জনবল। এ কারণে প্রায় ৮ বছর বন্ধ রয়েছে অস্ত্রোপচার।

হাসপাতালটিতে অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত নানান ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনেরা। অস্ত্রোপচারে জন্য রোগীদের যেতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। সে সময় রোগীর খাবার ও ওষুধের অনুমোদন দেওয়া হলেও চিকিৎসক পদগুলো ফাঁকা ছিল। ২০২১ সালে চিকিৎসকের অনুমোদন দেওয়া হয়। সম্প্রতি কয়েকজন চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন হাসপাতালে।

আরও জানা গেছে, প্রায় ৪ লাখ মানুষের একমাত্র আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি এটি। এখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এ থেকে আয়ও করছে হাসপাতালটি। মে মাসে বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা আয় হয়েছে। কিন্তু যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম থাকলেও জনবলের অভাবে ২০১৪ সাল থেকে বন্ধ আছে অস্ত্রোপচার।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে, হাসপাতালে পুরুষের তুলনা নারী ও শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। রোগী ভর্তি আছে শতাধিক। শয্যা সংকটে বারান্দায় ও মেঝেতে রয়েছেন রোগীরা। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বহির্বিভাগে দেখা যায়, নারীদের লম্বা সারি। অর্ধশতাধিক নারী টিকিট কেটে ও টিকিটের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ জন মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময় কথা হয় বাগুলাট ইউনিয়নের কালুপাড়া গ্রামের গৃহিণী চায়না খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। অস্বস্তি, গরম। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষ।’ যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের ফরিদুজ্জামান বলেন, ‘অনেকে আগে টিকিট কাটার জন্য লাফালাফি করছে। অনেকে আবার জড়াচ্ছেন বাগ্‌বিতণ্ডায়।’

বহির্বিভাগ ও ভর্তি রোগী এবং স্বজনরা জানান, যেসব রোগীদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ছে, তাঁদের বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। অতি সাধারণ অস্ত্রোপচারের জন্য যেতে হচ্ছে অন্যত্র। তাঁরা আরও জানান, অন্তঃসত্ত্বা রোগীর অনেকেই নরমাল ডেলিভারির জন্য হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অনেক সময় নানাবিধ কারণে স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে।

চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, প্রসূতি ও অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্ট ১১ পদের সব ফাঁকা। কর্তৃপক্ষের বারবার চিঠি দিয়ে জানিয়েও কোনো ফল হচ্ছে না। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জনগণ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আকুল উদ্দিন বলেন, ‘যন্ত্রপাতি ও সব সরঞ্জাম আছে হাসপাতালে। কিন্তু জনবল না থাকায় ২০১৪ সাল থেকে অস্ত্রোপচার বন্ধ আছে। ফলে রোগীরা এ সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বারবার পত্র দিয়েও ফল হয়নি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে লিখিত জানানো হলে জনবলের জন্য সুপারিশ পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত