জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের মেসার্স জিন্স এক্সপ্রেস লিমিটেড। তিন মাসের প্রায় ৩০ লাখ টাকা গ্যাস বিল বকেয়া। এ কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। চার মাস পর বকেয়া পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি। আর পুনঃসংযোগের জন্য আবেদন করে তিন বছর পর। কিন্তু এই তিন বছর জালিয়াতি করে গ্যাস ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি। অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে এই সুযোগ করে দিয়েছেন কেজিডিসিএলের বিপণন-দক্ষিণ ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান।
সম্প্রতি পেট্রোবাংলার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে শুধু আমিনুর নন, কেজিডিসিএলের প্রধান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদের বিরুদ্ধেও অনিয়ম-জালিয়াতির নানা অভিযোগ আনা হয়। মহাব্যবস্থাপক ফিরোজ খানও বাদ যাননি। দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন বিপণন-উত্তরের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শফিউল আজম খান, ব্যবস্থাপক বাসুদেব বিশ্বাস, মো. হাবিবুল গণি, উপমহাব্যবস্থাপক এ জে এম ছালেহউদ্দিন সারওয়ারসহ এক ডজন কর্মকর্তা। তাঁদের বিরুদ্ধে ১৪টি খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
গত মাসের শেষের দিকে তদন্ত কমিটি পরিচালনা পর্ষদের কাছে ৩২ পাতার প্রতিবেদন জমা দেয়। পেট্রোবাংলার পরিচালনা পর্ষদের প্রধান হলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ, মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মহ. নজরুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) ডি এম জোবায়েদ হোসেনকে সদস্য ও মহাব্যবস্থাপক (সংস্থাপন) মো. আমজাদ হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়। কেজিডিসিএল হলো পেট্রোবাংলার আওতাধীন গ্যাস বিপণন কোম্পানি। এর গ্রাহকসংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৩৩।
যেসব বিষয়ে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে
৫ কোটি ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৩৯ টাকা বকেয়া থাকায় মেসার্স মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্স লিমিটেডের গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় ২০২১ সালের ৭ জুন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মিটারও খুলে নেওয়া হয়। তিন মাস পর পুনঃসংযোগের জন্য অনুমোদন দেয় কেজিডিসিএল। কিন্তু পুনঃসংযোগের আগে বকেয়ার ৫০ শতাংশ ও বাকি টাকা ৬ মাসের কিস্তিতে পরিশোধের নীতিমালা থাকলেও তা মানা হয়নি। পুনঃসংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নথিতেও জালিয়াতি করা হয়।
কমিটি মনে করছে, এ জন্য কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদ, মহাব্যবস্থাপক শফিউল আজম খান, মো. ফিরোজ খান ও ব্যবস্থাপক বাসুদেব বিশ্বাস দায়ী।
প্রতিষ্ঠানটিতে বর্ধিত গ্যাস লোড দিতেও জালিয়াতি করেন কর্মকর্তারা।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে মেসার্স মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্সকে বর্ধিত গ্যাস-সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে এম এ মাজেদ, শফিউল আজম খান এবং নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তারা দায়ী বলে কমিটি মনে করে।
এদিকে এম এ মাজেদ, ফিরোজ খান ও শফিউল আজম খানের বিরুদ্ধে মেসার্স আল রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সকে জালিয়াতির মাধ্যমে গ্যাস-সংযোগ দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। একইভাবে আরেকটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সায়মা সামিরা টেক্সটাইল মিলসকে (সাদ মুছা গ্রুপ) গ্যাস-সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। এ জন্যও ওই তিন কর্মকর্তা দায়ী।
পদোন্নতি-নিয়োগেও দুর্নীতি
চলতি বছর কেজিডিসিএলের একটি প্রকল্পের জন্য সহকারী হিসাব কর্মকর্তা পদের ১৫টি পদে অস্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনিয়র সিলেকশন কমিটি একটি মেধাতালিকা প্রকাশ করে। কিন্তু ১৫ জনের মধ্যে ৭ জন চাকরিতে যোগ দেননি। তাই বাকি ৭ শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ব্যবস্থাপক (পার্সোনেল) মো. হাবিবুল গণির কাছে পাঠানো হয়। তিনি নিজেই ৭টি পদের বিপরীতে ৬ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেন। এ অনিয়মের জন্য তদন্ত কমিটি ফিরোজ খানকে দায়ী করেছে। কারণ, তিনি সিনিয়র সিলেকশন কমিটির সুপারিশ প্রতিপালন না করে কোম্পানির কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করেন। তিনি ছাড়াও কোম্পানির প্রশাসন বিভাগের তৎকালীন ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গণি, উপমহাব্যবস্থাপক এ জে এম ছালেহউদ্দিন সারওয়ারও দায়ী।
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, সিনিয়র সিলেকশন কমিটির সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও সহকারী ব্যবস্থাপক পর্যায়ের ১৩ জন কর্মকর্তাকে উপব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতি না দেওয়ার ঘটনায় ফিরোজ খানের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদ দায়ী।
সরকারের ক্ষতি সাড়ে ৩ কোটি টাকা
৩ মাসের প্রায় ৩০ লাখ টাকা বকেয়া থাকায় মেসার্স জিন্স এক্সপ্রেসের গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রতিষ্ঠানটি চার মাস পর বকেয়া টাকা পরিশোধ করে। নীতিমালা অনুযায়ী, বিচ্ছিন্নের পর এক বছরের মধ্যে পুনঃসংযোগ না নিলে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তিন বছর পর পুনঃসংযোগের আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুনঃসংযোগের বিষয়টি বোর্ডকে না জানানো এবং স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন না করে প্রতিষ্ঠানটিকে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনায় আমিনুর রহমান দায়ী। তিন বছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি গ্যাস ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্ধিত গ্যাস-সংযোগের অনুমোদন
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মেসার্স ইয়ং ইন্টারন্যাশনাল (বিডি) লিমিটেডকে ঘণ্টাপ্রতি ২৪ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১০ ঘনফুট, দৈনিক শূন্য দশমিক ২৩৩৯ ও মাসে ১ লাখ ৭২ হাজার ২২৪ ঘনমিটার বর্ধিত গ্যাস-সংযোগের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৩০ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১০ ঘনফুট, দৈনিক শূন্য দশমিক ৩১০৭ ও মাসে ২ লাখ ২৮ হাজার ৭৬৭ ঘনমিটার বর্ধিত গ্যাস-সংযোগের অনুমোদন দেয় কোম্পানি।
এ জন্য নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তা প্রকৌশলী লোকমান হোসেন গাজী, মিজানুর রহমান, মো. আমিনুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদ দায়ী।
এ ছাড়া পরিচালনা পর্ষদকে না জানিয়ে ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডকে অনিয়ম করে গ্যাস-সংযোগ দেওয়ায় এম এ মাজেদ, শফিউল আজম খান ও নথি উপস্থাপনকারীদের কমিটি দায়ী করেছে।
কমিটির সার্বিক মতামত ও সুপারিশ
নিয়ম অনুযায়ী বকেয়া গ্যাস বিল আদায় না করে এবং কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে পাশ কাটিয়ে নতুন সংযোগ/পুনঃসংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে একদিকে নিয়মকানুন লঙ্ঘিত হয়েছে, অপরদিকে কোম্পানি তথা রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য কেজিডিসিএলের বিপণন-দক্ষিণ ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান, বিপণন-উত্তর ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক (চ. দা) প্রকৌশলী সফিউল আজম খান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে কমিটি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সবার দপ্তরে গেলেও তাঁরা সাক্ষাতের সুযোগ দেননি। মোবাইলে জানতে চাইলে ফিরোজ খান ও শফিউল আজম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলেছি। পত্রিকায় কোনো কমেন্ট দিতে পারব না।’
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মাজেদের বাসায় গিয়েও সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি।
তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মহাব্যবস্থাপক (সংস্থাপন) আমজাদ হোসেন বলেন, ‘কার কী দোষ, সে বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।’
চট্টগ্রামের মেসার্স জিন্স এক্সপ্রেস লিমিটেড। তিন মাসের প্রায় ৩০ লাখ টাকা গ্যাস বিল বকেয়া। এ কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। চার মাস পর বকেয়া পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি। আর পুনঃসংযোগের জন্য আবেদন করে তিন বছর পর। কিন্তু এই তিন বছর জালিয়াতি করে গ্যাস ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি। অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে এই সুযোগ করে দিয়েছেন কেজিডিসিএলের বিপণন-দক্ষিণ ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান।
সম্প্রতি পেট্রোবাংলার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে শুধু আমিনুর নন, কেজিডিসিএলের প্রধান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদের বিরুদ্ধেও অনিয়ম-জালিয়াতির নানা অভিযোগ আনা হয়। মহাব্যবস্থাপক ফিরোজ খানও বাদ যাননি। দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন বিপণন-উত্তরের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শফিউল আজম খান, ব্যবস্থাপক বাসুদেব বিশ্বাস, মো. হাবিবুল গণি, উপমহাব্যবস্থাপক এ জে এম ছালেহউদ্দিন সারওয়ারসহ এক ডজন কর্মকর্তা। তাঁদের বিরুদ্ধে ১৪টি খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
গত মাসের শেষের দিকে তদন্ত কমিটি পরিচালনা পর্ষদের কাছে ৩২ পাতার প্রতিবেদন জমা দেয়। পেট্রোবাংলার পরিচালনা পর্ষদের প্রধান হলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ, মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মহ. নজরুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) ডি এম জোবায়েদ হোসেনকে সদস্য ও মহাব্যবস্থাপক (সংস্থাপন) মো. আমজাদ হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়। কেজিডিসিএল হলো পেট্রোবাংলার আওতাধীন গ্যাস বিপণন কোম্পানি। এর গ্রাহকসংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৩৩।
যেসব বিষয়ে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে
৫ কোটি ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৩৯ টাকা বকেয়া থাকায় মেসার্স মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্স লিমিটেডের গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় ২০২১ সালের ৭ জুন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মিটারও খুলে নেওয়া হয়। তিন মাস পর পুনঃসংযোগের জন্য অনুমোদন দেয় কেজিডিসিএল। কিন্তু পুনঃসংযোগের আগে বকেয়ার ৫০ শতাংশ ও বাকি টাকা ৬ মাসের কিস্তিতে পরিশোধের নীতিমালা থাকলেও তা মানা হয়নি। পুনঃসংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নথিতেও জালিয়াতি করা হয়।
কমিটি মনে করছে, এ জন্য কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদ, মহাব্যবস্থাপক শফিউল আজম খান, মো. ফিরোজ খান ও ব্যবস্থাপক বাসুদেব বিশ্বাস দায়ী।
প্রতিষ্ঠানটিতে বর্ধিত গ্যাস লোড দিতেও জালিয়াতি করেন কর্মকর্তারা।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে মেসার্স মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্সকে বর্ধিত গ্যাস-সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে এম এ মাজেদ, শফিউল আজম খান এবং নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তারা দায়ী বলে কমিটি মনে করে।
এদিকে এম এ মাজেদ, ফিরোজ খান ও শফিউল আজম খানের বিরুদ্ধে মেসার্স আল রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সকে জালিয়াতির মাধ্যমে গ্যাস-সংযোগ দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। একইভাবে আরেকটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সায়মা সামিরা টেক্সটাইল মিলসকে (সাদ মুছা গ্রুপ) গ্যাস-সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। এ জন্যও ওই তিন কর্মকর্তা দায়ী।
পদোন্নতি-নিয়োগেও দুর্নীতি
চলতি বছর কেজিডিসিএলের একটি প্রকল্পের জন্য সহকারী হিসাব কর্মকর্তা পদের ১৫টি পদে অস্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনিয়র সিলেকশন কমিটি একটি মেধাতালিকা প্রকাশ করে। কিন্তু ১৫ জনের মধ্যে ৭ জন চাকরিতে যোগ দেননি। তাই বাকি ৭ শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ব্যবস্থাপক (পার্সোনেল) মো. হাবিবুল গণির কাছে পাঠানো হয়। তিনি নিজেই ৭টি পদের বিপরীতে ৬ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেন। এ অনিয়মের জন্য তদন্ত কমিটি ফিরোজ খানকে দায়ী করেছে। কারণ, তিনি সিনিয়র সিলেকশন কমিটির সুপারিশ প্রতিপালন না করে কোম্পানির কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করেন। তিনি ছাড়াও কোম্পানির প্রশাসন বিভাগের তৎকালীন ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গণি, উপমহাব্যবস্থাপক এ জে এম ছালেহউদ্দিন সারওয়ারও দায়ী।
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, সিনিয়র সিলেকশন কমিটির সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও সহকারী ব্যবস্থাপক পর্যায়ের ১৩ জন কর্মকর্তাকে উপব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতি না দেওয়ার ঘটনায় ফিরোজ খানের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদ দায়ী।
সরকারের ক্ষতি সাড়ে ৩ কোটি টাকা
৩ মাসের প্রায় ৩০ লাখ টাকা বকেয়া থাকায় মেসার্স জিন্স এক্সপ্রেসের গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রতিষ্ঠানটি চার মাস পর বকেয়া টাকা পরিশোধ করে। নীতিমালা অনুযায়ী, বিচ্ছিন্নের পর এক বছরের মধ্যে পুনঃসংযোগ না নিলে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তিন বছর পর পুনঃসংযোগের আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুনঃসংযোগের বিষয়টি বোর্ডকে না জানানো এবং স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন না করে প্রতিষ্ঠানটিকে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনায় আমিনুর রহমান দায়ী। তিন বছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি গ্যাস ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্ধিত গ্যাস-সংযোগের অনুমোদন
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মেসার্স ইয়ং ইন্টারন্যাশনাল (বিডি) লিমিটেডকে ঘণ্টাপ্রতি ২৪ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১০ ঘনফুট, দৈনিক শূন্য দশমিক ২৩৩৯ ও মাসে ১ লাখ ৭২ হাজার ২২৪ ঘনমিটার বর্ধিত গ্যাস-সংযোগের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৩০ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১০ ঘনফুট, দৈনিক শূন্য দশমিক ৩১০৭ ও মাসে ২ লাখ ২৮ হাজার ৭৬৭ ঘনমিটার বর্ধিত গ্যাস-সংযোগের অনুমোদন দেয় কোম্পানি।
এ জন্য নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তা প্রকৌশলী লোকমান হোসেন গাজী, মিজানুর রহমান, মো. আমিনুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদ দায়ী।
এ ছাড়া পরিচালনা পর্ষদকে না জানিয়ে ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডকে অনিয়ম করে গ্যাস-সংযোগ দেওয়ায় এম এ মাজেদ, শফিউল আজম খান ও নথি উপস্থাপনকারীদের কমিটি দায়ী করেছে।
কমিটির সার্বিক মতামত ও সুপারিশ
নিয়ম অনুযায়ী বকেয়া গ্যাস বিল আদায় না করে এবং কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে পাশ কাটিয়ে নতুন সংযোগ/পুনঃসংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে একদিকে নিয়মকানুন লঙ্ঘিত হয়েছে, অপরদিকে কোম্পানি তথা রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য কেজিডিসিএলের বিপণন-দক্ষিণ ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান, বিপণন-উত্তর ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক (চ. দা) প্রকৌশলী সফিউল আজম খান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে কমিটি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সবার দপ্তরে গেলেও তাঁরা সাক্ষাতের সুযোগ দেননি। মোবাইলে জানতে চাইলে ফিরোজ খান ও শফিউল আজম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলেছি। পত্রিকায় কোনো কমেন্ট দিতে পারব না।’
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মাজেদের বাসায় গিয়েও সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি।
তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মহাব্যবস্থাপক (সংস্থাপন) আমজাদ হোসেন বলেন, ‘কার কী দোষ, সে বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।’
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে