হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
বেলা তখন পৌনে ১টা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকেই বাবার মরদেহ খুঁজছিলেন মাহমুদা ফেরদৌস সীমা। সেখানে কর্তব্যরত নারী আনসার সদস্যরা তাঁকে নিয়ে যান নিরাপত্তা কক্ষে। খানিক আগেই এই হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে সীমার বাবা ট্রাফিক কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে। যিনি নগরীর খুলশী এলাকায় ডেমু ট্রেন-বাস-সিএনজিচালিত অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে প্রাণ হারান।
আত্মীয়-স্বজনেরা সীমাকে সান্ত্বনা দিলেও তখনো অঝোরে কেঁদে যাচ্ছিলেন তিনি। খানিক পর সেখান থেকে বেরিয়ে এক চাচার মোবাইল ফোনে কল করে বিলাপ করছিলেন সীমা, ‘আমার বাবা নেই। বাবা মারা গেছে। আমরা কী করব? আমাদের ভালোবাসবে কে?’
মনিরুলের মেয়ের এই আকুতি হাসপাতালে উপস্থিত সবাইকে ছুঁয়ে যায়। জানা গেছে, মনিরুল ইসলামের দুই মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে মাহমুদা ফেরদৌস সীমার বিয়ে হয়েছে দুই বছর আগে। আরেক মেয়ে বিবি ফাতেমা সমুনা এসএসসি পরীক্ষার্থী। ছেলে হামীম পড়ছে চতুর্থ শ্রেণিতে। বড় বোন সীমা যখন বিলাপ করছিলেন, তখন ছোট মেয়ে সমুনা কাঁদছিলেন অঝোরে।
চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকায় গতকাল শনিবার সকালে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ট্রেন-বাস-সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে তিনি প্রাণ। দুর্ঘটনার পর মনিরুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন দুই মেয়ে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মনিরুলের সহকর্মী ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মাহমুদুল হাসান জুয়েল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম রেললাইনের পশ্চিম পাশে সড়কে ছিলেন। নাজিরহাট থেকে ডেমু ট্রেনটি রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় লাইনম্যান ওই পাশের ব্যারিয়ারটি ফেলেননি। এ সময় একটি যাত্রীবাহী বাস মনিরুলকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি অপেক্ষমাণ ম্যাক্সিমা (ছোট যান) এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার নিচে পড়েন।’
এ সময় বাসের ধাক্কায় অটোরিকশাটি গিয়ে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এর পরপরেই মনিরুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান সহকর্মীরা। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মনিরুলের জামাতা আবু সালেহ শ্যামল বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় তাঁর শ্বশুর বাসা থেকে বের হন। দুপুরে বাসায় ফিরে খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর বাসায় ফেরা হয়নি তাঁর।
শ্যামল বলেন, ‘দুই মাস আগে আমার ছেলে হয়েছে। বাসায় যতক্ষণ থাকতেন, পুরো সময় তাকে ঘিরে কাটাতেন। আজ সকালেও তাকে আদর করে বাসা থেকে বের হন। আমার ছেলেকে নিয়ে উনার খুব স্বপ্ন ছিল। কিন্তু নানা ডাক শোনার আগেই তিনি চলে গেলেন।’
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের খোয়াজপুর গ্রামে মনিরুল ইসলামের জন্ম। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। ২০১৩ সালে ১৭ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) যোগ দেন। এরপর ২০১৯ সালের ৮ জুন থেকে নগর ট্রাফিক পুলিশের উত্তর জোনে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও দুজন। তাঁদের একজন নগরীর পাহাড়তলী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী শারতাজ উদ্দিন শাহীন। অপর জন ডালি কনস্ট্রাকশনের ডিপ্লোমা প্রকৌশলী বাহা উদ্দিন সোহাগ। তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়।
ত্রিমুখী সংঘর্ষে ম্যাক্সিমা হিউম্যান হলার (ছোট পরিবহন) থেকে ছিটকে পড়ে ট্রেনের নিচে ঢুকে যান শাহীন। এরপর সেখান থেকে বাঁচার জন্য বারবার আকুতি জানিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শী শাহেনা আক্তার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ট্রেনের নিচে পড়ে শাহীন “বাঁচাও বাঁচাও” বলে চিৎকার করেছিল। কিন্তু কেউ তাঁকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসেনি। পরে আমি গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করি।’
অপর নিহত বাহা উদ্দিন সোহাগের বোনজামাই হামিদ হাসান নোমানী বলেন, সোহাগ থার্ড পার্টির মাধ্যমে গ্রামীণফোনের টাওয়ারের কাজ করতেন। সকালে মুরাদপুরের বাসা থেকে খুলশীর অফিসে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। তাঁর এক বছর বয়সী সন্তান আছে বলে তিনি জানান।
এই দুর্ঘটনা আহত হন আরও ৬ জন। তাঁরা হলেন সমীর মজুমদার (৪০), শহীদুল ইসলাম (৪০), জয়নাল (২৬), জোবাইদা (২০), শামীমা (১১) ও আদনান (৭)।
বেলা তখন পৌনে ১টা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকেই বাবার মরদেহ খুঁজছিলেন মাহমুদা ফেরদৌস সীমা। সেখানে কর্তব্যরত নারী আনসার সদস্যরা তাঁকে নিয়ে যান নিরাপত্তা কক্ষে। খানিক আগেই এই হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে সীমার বাবা ট্রাফিক কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে। যিনি নগরীর খুলশী এলাকায় ডেমু ট্রেন-বাস-সিএনজিচালিত অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে প্রাণ হারান।
আত্মীয়-স্বজনেরা সীমাকে সান্ত্বনা দিলেও তখনো অঝোরে কেঁদে যাচ্ছিলেন তিনি। খানিক পর সেখান থেকে বেরিয়ে এক চাচার মোবাইল ফোনে কল করে বিলাপ করছিলেন সীমা, ‘আমার বাবা নেই। বাবা মারা গেছে। আমরা কী করব? আমাদের ভালোবাসবে কে?’
মনিরুলের মেয়ের এই আকুতি হাসপাতালে উপস্থিত সবাইকে ছুঁয়ে যায়। জানা গেছে, মনিরুল ইসলামের দুই মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে মাহমুদা ফেরদৌস সীমার বিয়ে হয়েছে দুই বছর আগে। আরেক মেয়ে বিবি ফাতেমা সমুনা এসএসসি পরীক্ষার্থী। ছেলে হামীম পড়ছে চতুর্থ শ্রেণিতে। বড় বোন সীমা যখন বিলাপ করছিলেন, তখন ছোট মেয়ে সমুনা কাঁদছিলেন অঝোরে।
চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকায় গতকাল শনিবার সকালে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ট্রেন-বাস-সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে তিনি প্রাণ। দুর্ঘটনার পর মনিরুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন দুই মেয়ে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মনিরুলের সহকর্মী ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মাহমুদুল হাসান জুয়েল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম রেললাইনের পশ্চিম পাশে সড়কে ছিলেন। নাজিরহাট থেকে ডেমু ট্রেনটি রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় লাইনম্যান ওই পাশের ব্যারিয়ারটি ফেলেননি। এ সময় একটি যাত্রীবাহী বাস মনিরুলকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি অপেক্ষমাণ ম্যাক্সিমা (ছোট যান) এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার নিচে পড়েন।’
এ সময় বাসের ধাক্কায় অটোরিকশাটি গিয়ে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এর পরপরেই মনিরুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান সহকর্মীরা। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মনিরুলের জামাতা আবু সালেহ শ্যামল বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় তাঁর শ্বশুর বাসা থেকে বের হন। দুপুরে বাসায় ফিরে খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর বাসায় ফেরা হয়নি তাঁর।
শ্যামল বলেন, ‘দুই মাস আগে আমার ছেলে হয়েছে। বাসায় যতক্ষণ থাকতেন, পুরো সময় তাকে ঘিরে কাটাতেন। আজ সকালেও তাকে আদর করে বাসা থেকে বের হন। আমার ছেলেকে নিয়ে উনার খুব স্বপ্ন ছিল। কিন্তু নানা ডাক শোনার আগেই তিনি চলে গেলেন।’
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের খোয়াজপুর গ্রামে মনিরুল ইসলামের জন্ম। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। ২০১৩ সালে ১৭ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) যোগ দেন। এরপর ২০১৯ সালের ৮ জুন থেকে নগর ট্রাফিক পুলিশের উত্তর জোনে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও দুজন। তাঁদের একজন নগরীর পাহাড়তলী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী শারতাজ উদ্দিন শাহীন। অপর জন ডালি কনস্ট্রাকশনের ডিপ্লোমা প্রকৌশলী বাহা উদ্দিন সোহাগ। তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়।
ত্রিমুখী সংঘর্ষে ম্যাক্সিমা হিউম্যান হলার (ছোট পরিবহন) থেকে ছিটকে পড়ে ট্রেনের নিচে ঢুকে যান শাহীন। এরপর সেখান থেকে বাঁচার জন্য বারবার আকুতি জানিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শী শাহেনা আক্তার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ট্রেনের নিচে পড়ে শাহীন “বাঁচাও বাঁচাও” বলে চিৎকার করেছিল। কিন্তু কেউ তাঁকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসেনি। পরে আমি গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করি।’
অপর নিহত বাহা উদ্দিন সোহাগের বোনজামাই হামিদ হাসান নোমানী বলেন, সোহাগ থার্ড পার্টির মাধ্যমে গ্রামীণফোনের টাওয়ারের কাজ করতেন। সকালে মুরাদপুরের বাসা থেকে খুলশীর অফিসে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। তাঁর এক বছর বয়সী সন্তান আছে বলে তিনি জানান।
এই দুর্ঘটনা আহত হন আরও ৬ জন। তাঁরা হলেন সমীর মজুমদার (৪০), শহীদুল ইসলাম (৪০), জয়নাল (২৬), জোবাইদা (২০), শামীমা (১১) ও আদনান (৭)।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৪ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৮ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৮ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৮ দিন আগে