ভুলতে কি পারি শিমুলে পলাশে হেরি লালে লাল খুন

শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯: ২৭
Thumbnail image

ছেলের কাছে মায়ের যতনে লেখা চিঠি। জানতে চাওয়া—‘খোকা তুই কবে আসবি? কবে ছুটি?’ খোকা আসেনি। ফাগুনরঙা এক বিকেলে লুটিয়ে পড়ে পথে। পিচের বুকে শিমুল-পলাশের লালে মিশে যায় খোকার খুন। সেই খুনে গজিয়ে ওঠে বর্ণমালা অ আ ক খ। এই তো এই দিনে। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে।

বছর ঘুরে আবার এসেছে সেই অমর একুশে, পলাশ ফোটানো দিনে। ‘এদিন আমার ভায়েরা আমায় বেঁধেছে রক্তঋণে।’

আজ সেই দিন। ভাইদের, শহীদদের, বীরদের শ্রদ্ধা জানানোর দিন। পুবের আকাশ ফরসা হতেই রফিক, সালাম, বরকতদের উত্তরসূরিরা বেরিয়ে পড়বে। কি বৃদ্ধ, কি তরুণ; হাতে শ্রদ্ধার ফুল, মুখে একুশের গান—‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই হাজারো মানুষ হাতে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে যান লাইনে। একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ বেদিতে পুষ্পাস্তবক অর্পণ করে প্রথমেই শহীদদের শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দলের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান। পরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদের বিরোধী দলের নেতা জি এম কাদের, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম। প্রথম প্রহরের অনুষ্ঠানের পর শহীদ মিনার সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য খুলে দেওয়া হয়।

আজ সরকারি ছুটির দিন। দেশের সব জায়গায় আজ প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

ফাগুনের এই আগুনঝরা দিনে যারা দিয়েছিল প্রাণ ভাষার তরে, তাদের কি ভোলা যায়? ভুলি কেমনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত