বছর না ঘুরতেই সড়ক বেহাল

মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ০৬: ৪৬
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১২: ১৮

নোয়াখালীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বেশির ভাগ সড়কই বেহাল। সামান্য বৃষ্টিতে উপজেলার ভাঙা ও গর্ত থাকা সড়গুলোতে পানি জমে যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়ায়। প্রতি অর্থবছরে ১০০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হলেও বছর না ঘুরতেই সেই সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিবৃষ্টি আর অতিরিক্ত ভারবোঝাই গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কগুলো স্থায়ী হচ্ছে না। অপরদিকে সড়কে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকির অভাবকে দায়ী করেছেন এলাকাবাসী।

সর্বশেষ ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুই ভাগে সংস্কার করা হয় জেলার সদর-সুবর্ণচরের সংযোগ সড়কটি। সোনাপুর থেকে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে সুবর্ণচরের পাশাপাশি হাতিয়ায় যাওয়ারও অন্যতম সড়ক এটি। ১৯ কিলোমিটারের সড়কটি সংস্কারে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৪ কোটি টাকা। কিন্তু বর্তমানে এ সড়কের ৯০ শতাংশই খানাখন্দে ভরে গেছে।

একই অর্থবছরে সংস্কার হয়েছিল জেলা সদরের সঙ্গে কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জের অন্যতম সংযোগ সড়কটি। মাইজদী বছিরার দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়া প্রায় ২০ কিলোমিটারের সড়কটি সংস্কারে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। বর্তমানে ওই সড়কটিরও একই দশা, একটু বৃষ্টিতেই স্থানে স্থানে পানি জমে। দুর্ভোগের শেষ নেই এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ ও যানবাহন চালকদের।

নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকি না থাকাই অল্প সময়ে সড়কের বেহাল দশার কারণ। এ বছর গর্তগুলোতে আস্ত ইট ফেলেছে এলজিইডি। এ কারণে সমস্যা আরও বেড়েছে।

শুধু এ দুটি সড়ক নয়। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলা সংযোগ সড়কগুলোরও বেহাল দশা। উপজেলার অভ্যন্তরীণ বা গ্রামীণ সড়কগুলোর চিত্র আরও খারাপ। এতে সড়কগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সংস্কারের পর বছর না ঘুরতেই সড়কগুলোর এই অবস্থা হচ্ছে।

জেলা এলজিইডির দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় গত ১২ বছরে নতুন সড়ক উন্নয়ন হয়েছে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার। সব মিলিয়ে বর্তমানে তাদের পাকা সড়ক রয়েছে প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার। যার ৪৫ শতাংশের বেশি সড়ক চলাচলের অনুপযোগী। কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বল্প বরাদ্দের মধ্য দিয়েও সংস্কার করছে তারা। পর্যায়ক্রমে এসব সড়ক সংস্কার করা হবে। তবে সড়ক উন্নয়নে মানসম্মত নির্মাণসামগ্রী ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি অভিজ্ঞ ঠিকাদারের মাধ্যমে সড়ক সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।

বেসরকারি চাকরিজীবী রফিক উল্যা সুমন জানান, প্রতিদিন আদর্শ স্কুলের সামনের সড়ক দিয়ে তাঁকে ছয়বার যাতায়াত করতে হয়। তিন দিন আগে অটোরিকশা বিকল হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। তাই তিনি সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।

সোনাপুর-সুবর্ণচর সড়কের সিএনজিচালিত অটোচালক সেলিম জানান, দিন দিন সড়কটির অবস্থা করুণ হচ্ছে। ‘আমাদের নতুন গাড়িগুলো স্বাভাবিকভাবে ১০ বছর চালাতে পারলেও এ সড়ক দিয়ে চলাচলের ১ বছর পর গাড়ির বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকরামুল হক বলেন, ‘ভাঙাচোরা সড়কগুলোর তালিকা করে পর্যায়ক্রমে কাজ করার চেষ্টা করছি। বরাদ্দ কম হওয়ায় একসঙ্গে সব সড়কের কাজ করা সম্ভব হয় না। তবে ব্যবহার অনুপযোগী ও মানুষের বেশি ভোগান্তি হচ্ছে ওই সড়কগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত