চট্টগ্রাম থেকে আন্তজেলা সড়কগুলোতে স্বাভাবিক সময়ে ৬০০ থেকে ৭০০ দূরপাল্লার বাস চলাচল করে থাকে। প্রতিবার ঈদযাত্রার আগে এর বাইরে বাড়তি বাস নামানোর ঘোষণা দেন মালিকেরা। কিন্তু এবার তাঁরা বাড়তি বাস নামাচ্ছেন না। ঈদে লম্বা ছুটি থাকা ও তুলনামূলক যাত্রী কম থাকার অজুহাতে মালিকেরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন বলেন, ‘ঈদে রোটেশন অনুযায়ী আমাদের নিয়মিত ৬-৭ শ বাস চলাচল করবে। তবে বাস বাড়ানোর প্রয়োজন হলে বাড়ানো হবে। বাসের কোনো সমস্যা হবে না।’

কফিল উদ্দিন বলেন, ‘এবার ঈদে লম্বা ছুটি থাকছে। আবার কেউ আগেভাগে ছুটি নিয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে। মানুষজন ভেঙে ভেঙে বাড়ি যাচ্ছে। এখন থেকেই লোকজন বিচ্ছিন্নভাবে বাড়ি যাওয়া শুরু করেছে। এতে যাত্রীদের চাপ তেমনটা থাকবে না বলে আমরা ধারণা করছি।’

কফিল উদ্দিন আরও বলেন, ‘ঈদে যাত্রীর চাপ থাকবে না, কিন্তু জট থাকবে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবস্থাও ভালো। আশা করি, সড়কপথে যাত্রীরা ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নে করতে পারবেন।’

নগরীর বিআরটিসি, অলংকার মোড়, এ কে খান, জিইসি মোড়ের কাউন্টারগুলোতে গতকাল শুক্রবার খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সেখানে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ। কাউন্টারগুলোতে অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নির্ধারিত দিনের নিয়মিত টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন।

গত ১৫ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রামে বাসের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। বাস মালিক সমিতির নেতা কফিল বলেন, আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে মূলত মানুষ ঘরমুখী হবে। ঈদ যাত্রা শুরু হলে তা বোঝা যাবে। তিনি বলেন, ‘যারা অগ্রিম টিকিট কিনে রেখেছেন। তাঁরা বেশির ভাগই দূরবর্তী গন্তব্যের যাত্রী। তবে আমাদের টিকিটের কোনো সমস্যা নেই।’

যাত্রীরা দিনের মধ্যে টিকিট কেটে বাড়ি ফিরতে পারবেন। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ আশপাশের জেলাগুলোর গন্তব্যের টিকিট সব সময় পাওয়া যাবে বলে কফিল উদ্দিন জানান।

এদিকে ঈদ এলেই দূরপাল্লার বাসে বাড়ে দুর্ভোগ। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। গত বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর বিআরটিসি এলাকায় বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে এ অভিযোগের সত্যতা মেলে। বিভিন্ন পথে দেড় শ থেকে ৪ শ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রমাণ মেলে।

অধিকাংশ কাউন্টারে ছিল না প্রদর্শিত ভাড়ার মূল্য তালিকাও। অনিয়ম পাওয়ায় দুটি বাস কাউন্টারকে ১ লাখ টাকা ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান চট্টগ্রাম জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও নগরীর দামপাড়া দুটি বাস কাউন্টারকে জরিমানা করেন।

এ প্রসঙ্গে সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী আমরা ভাড়া আদায় করছি। এখানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। যাত্রী না থাকায় এত দিন ভাড়া কমিয়ে কেউ কেউ গাড়ি চালিয়েছেন। এখন যেহেতু ঈদের মৌসুম, যাত্রী নামিয়ে গাড়িগুলোকে খালি ফিরতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সামান্য কিছু টাকা বাড়তি নিচ্ছে। কিন্তু তা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশি না।’

আমাদের মিরসরাই প্রতিনিধি নুরুল আলম জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিরসরাই এলাকায় বর্তমানে রাস্তার কাজ চলছে। রাস্তার কাজের সময় দুদিকের গাড়ি এক লেনে চলাচল করে। বাকি লেনটি বন্ধ রাখা হয়। এতে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এ ছাড়া মহাসড়কের পাশে বড় বড় লরি, কাভার্ড ভ্যান পার্কিং করে রাখা হয়।