আজকের পত্রিকা ডেস্ক
গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা। যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া জামে মসজিদের পাশে সুপেয় পানির নলকূপ। কিছুক্ষণ দাঁড়াতেই কলসে পানি নিতে আসলেন নুর নাহার (৪৫) নামের এক গৃহবধূ।
জানতে চাইলে বলেন, চার সদস্যের পরিবার তাঁর। বাড়িতে নলকূপ থাকলেও বেশ কয়েক দিন ধরে পানি উঠছে না। তাই প্রায় আধা কিলোমিটার দূরের এই নলকূপে পানি নিতে এসেছেন তিনি।
কলসে পানি ভরা শেষে নুর নাহার জানালেন, হাতলে ৮০ থেকে ৯০ বার চাপ দিয়ে ১২ লিটারের কলসটি ভরতে পেরেছেন তিনি। শুধু যশোরের চাঁচড়ার নুর নাহারের পরিবার নয়; পানির জন্য এমন হাহাকার বিভিন্ন জেলায়।
বৃষ্টি না হওয়ায় খাল, বিল, পুকুর শুকিয়ে কাঠ। ভূগর্ভস্থ পানিও নেমে গেছে অনেক নিচে। ফলে অগভীর-গভীর অনেক নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। খাওয়ার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেচের জন্যও বেকায়দায় পড়েছেন কৃষক।
পানির স্তর এখন কোথায়?
পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) পক্ষ থেকে গত বছর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে কোথাও কোথাও পানির স্তর মাটির ১২০ ফুট পর্যন্ত গভীরে নেমে গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার একটি স্থানে পানির স্তর ১৫৩ ফুট গভীরে নেমে গেছে। রাজশাহী, নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন আর অগভীর নলকূপে পানি ওঠে না।
এ বছর ভূগর্ভস্থ পানি নেমে যাওয়ার কেন্দ্রীয় হিসাব পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন জেলার গৃহস্থ, কৃষক ও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসাবে আগের বছরের তুলনায় কয়েক ফুট নেমেছে। আগের বছরের চেয়ে কষ্টও বেড়েছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) জয়পুরহাটের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত বছর জয়পুরহাটে ভূগর্ভস্থ পানির স্বাভাবিক স্তর ছিল ৩৫ থেকে ৩৬ ফুট। চলতি বছর সেই পানির স্তর পৌঁছেছে ৪৩ থেকে ৪৪ ফুটে। গত বছরের তুলনায় এ স্তরের দূরত্ব বেড়েছে ৭ ফুট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জনস্বাস্থ্য দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার সরকার বলেন, প্রতিবছর শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে ছয় ইঞ্চি করে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে এর চেয়ে দ্বিগুণ নামছে পানির স্তর।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, বছর দশেক আগেও দামুড়হুদায় ৪০-৬০ ফুটের মধ্যে ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর ছিল। এখন বর্ষা মৌসুমেও ১০০-১৪০ ফুটের মধ্যে পানির স্তর পাওয়া যাচ্ছে না।
যশোরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ পারভেজ বলেন, গত বছর যশোরে পানির স্তর নেমেছে ৩৭ ফুট। এ বছর যশোর সদর উপজেলায় ৩৪ ফুট পানির স্তর নেমেছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) নাটোরের বড়াইগ্রামের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, বড়াইগ্রামে ২০২১ সালে পানির স্তর ছিল ৯ দশমিক ৬০ মিটার, ২০২২ সালে ১০ মিটার, ২০২৩ সালে ১১ দশমিক ৬০ মিটার এবং ২০২৪ সালে এসে ১৪ দশমিক ৪০ মিটার নেচে নেমে গেছে।
ঝিনাইদহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঝিনাইদহের অধিকাংশ এলাকায় ৩৫ থেকে ৪০ ফুট পানির স্তর নিচে নেমে গেছে।
রাজবাড়ীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাকারিয়া বলেন, বর্তমানে রাজবাড়ীতে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে ৩০ থেকে ৩৫ ফুট।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২৮ ফুট পর্যন্ত নেমে গেছে।
কৃষকের দুর্ভোগ
রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, রাতে জমিতে সেচ দিলে দুপুরের পর তা শুকিয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা হতে হতে ধানখেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া একবার সেচ দেওয়ার পর এক সপ্তাহের আগে আবার সেচ দেওয়ার জন্য বরেন্দ্রর গভীর নলকূপে সিরিয়াল পাওয়া যায় না। ফলে এখন জমির বোরো ধান রক্ষাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ধানের জমিতে সেচের জন্য পানি পাওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। পুকুরগুলোতেও পানি নেই। বিএমডিএর গভীর নলকূপগুলোতেও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। আগে যেখানে এক ঘণ্টায় জমি ভিজে যেত; এখন দুই ঘণ্টা পানি দিয়েও জমিতে পানি রাখা যাচ্ছে না।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, এভাবে আরও এক-দুই সপ্তাহ চললে উত্তরাঞ্চলজুড়ে বোরো ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বোরো ফলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বড়টিয়ার গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, ‘এ বছর মাঠে ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। পানির অভাবে খেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এভাবে আর সপ্তাহখানেক গেলে জমিতে ধানের থেকে চিটার ভাগ বেশি হবে।’
ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, ঘিওরে এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭৬০ হেক্টর।আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। খরা ও দাবদাহে এ বছর উপজেলায় আমের ফলনে বিপর্যয় ঘটতে পারে।
খাবার পানিসহ গৃহস্থালি কাজে সংকট
রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন জানান, বাড়িতে গোসল-খাওয়া থেকে শুরু করে গরুকে পানি পান করানো—সবই হয়ে থাকে নলকূপের পানিতে। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে পানি পাচ্ছেন না নলকূপে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের দশমীপাড়ার মানিক আলী বলেন, ‘আগে ১৫-২০ মিনিট মোটর চালালেই বাড়ির ছাদের ট্যাংক ভরে যেত। প্রায় দুই মাসের মতো লক্ষ করছি, দুই থেকে তিন ঘণ্টা মোটর চালু থাকলেও ট্যাংক ভরছে না।’
ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকায় নলকূপ স্থাপনের কাজ করা শ্রমিক মো. রাকিব ও অহিদুজ্জামান জানান, সাধারণত ২০ থেকে ২৫ ফুট মাটির নিচে পানি পাওয়া যায়। কিন্তু এখন নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ ফুট নিচেও পানি মিলছে না।
কারণ কী
গ্রিন ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন, যশোরের নির্বাহী পরিচালক আশিক মাহমুদ সবুজ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের চারপাশের পুকুর ও জলাশয় ভরাট করছি। জলাধার বলতে আর কিছু বাকি নেই। এখন ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ পড়েছে। যে যার মতো গভীর নলকূপ স্থাপন করে পানির সংস্থান করছে। এতে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। আর জলাধার না থাকায় ভূ-উপরিস্থ ও ভূগর্ভস্থ পানির মধ্যে সাইকেলটি পূর্ণ হতে পারছে না; যার প্রভাবে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।’
ঝিনাইদহের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাসুদ আহম্মদ সঞ্জু বলেন, ‘মানুষ নিজেরাই আজকের এ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পুকুর ভরাট করেছে, গাছগুলো কেটে ফেলেছে। সংযুক্তি আরব আমিরাত, সৌদি আরবে বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তন ঘটেছে, বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে মাটির উপরিভাগ কেটে বড় যাহাজে করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা সবুজায়ন করার চেষ্টা করছে। আর আমরা গাছ লাগাচ্ছি, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ করছি না।’
বিএমডিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তীব্র খরা এবং বৃষ্টিপাত না হওয়া বরেন্দ্র অঞ্চলে পানিসংকটের মূল কারণ। খরায় পুকুর, খাল, বিল, নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে পানির সংকট দীর্ঘ হচ্ছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে বিএমডিএর গভীর নলকূপের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেক গভীর নলকূপ খনন করা হয়েছে। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আরও নিচে নেমে গেছে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা এবং যত্রতত্র পুকুর-খাল-বিল ভরাট করে ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
পানি নিয়ে কয়েক বছর ধরে চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে কাজ করছে সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা রিসো। রিসোর নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি হিসাবে সেচকাজে জেলায় ৯০ শতাংশ পানি ভূগর্ভস্থ থেকে ব্যবহার করা হয়। তবে আমাদের হিসাবে চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রায় ৯৭ শতাংশ সেচ পানিই ভূগর্ভস্থ।’
কর্তৃপক্ষ যা বলছে
বিএমডিএর পরিচালক মো. আব্দুর রশীদ বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নেমে যাবে, আবার বর্ষা মৌসুমে উঠলে খুব একটা সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে বর্ষা মৌসুমে যেসব এলাকায় স্তর ওঠে না, আমরা সেসব এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে পানির স্তর স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’
রাজশাহীর পবা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শাহিনুল হক বলেন, ‘প্রতিবছরই খরার সময়ে বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট দেখা যায়। এবার সংকট একটু বেশি দেখা দিয়েছে। আশা করছি, বৃষ্টি নামলেই আবার পানির স্তর আগের জায়গায় ফিরে আসবে এবং পানির সংকট কমবে।’
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, উপজেলায় সরকারি সাড়ে পাঁচ হাজার ও ব্যক্তিমালিকানা মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার নলকূপ রয়েছে। অগভীর নলকূপে পানি না ওঠায় গভীর নলকূপ বসানোর দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। কেউ কেউ ১০-১২ ফুট গর্ত খুঁড়ে মাটির রিং বসিয়ে পাম্প নিচে নামিয়ে পানি ওঠানোর চেষ্টা করছেন।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, ‘নদী, খাল, পুকুর ও জলাশয় ভরাট করার কারণে পানির লেয়ার যে রিচার্জ হতো, সেটা হয় না।’
রাজবাড়ীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাকারিয়া বলেন, সরকারিভাবে জেলায় মোট ১৯ হাজার ২২৮টি টিউবওয়েল বসানো আছে। জেলায় কী পরিমাণ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, সেটার কোনো তথ্য নেই।
সুপারিশ
যশোর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে উপরিভাগের জলাধার সংরক্ষণ জরুরি। সে জন্য ভরাট করা দিঘিগুলো পুনঃখনন করার উদ্যোগ নিতে হবে।
বিএমডিএ জয়পুরহাটের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাকের মতে, পানির অপচয় রোধ করতে হবে। সরকারি সেচ নীতিমালার বিধান মেনে গভীর বা অগভীর নলকূপ স্থাপন করতে হবে। নদী-পুকুর ও জলাশয়গুলো সংস্কার করে পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
পানি ও ভূগর্ভ নিয়ে গবেষণা করা কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম জানান, ‘সবাই সাবমারসিবলের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে নদী কিংবা খালের পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে আমাদের চরম বিপাকে পড়তে হবে।’
ঝিনাইদহের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাসুদ আহম্মদ সঞ্জু বলেন, সরকারের নিয়ম আছে, এক কিলোমিটারের মধ্যে গভীর নলকূপ করা যাবে না। কিন্তু এ নিয়ম কেউ মানছে না। পানিপ্রবাহের উৎস নদ-নদী ভরাট করে দখল হয়ে যাচ্ছে; যে কারণে গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। এখন পানির স্তর স্বাভাবিক রাখতে নদী খনন করতে হবে। নিয়ম মেনে গভীর নলকূপ স্থাপনে নজরদারি করতে হবে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝিনাইদহ ও বড়াইগ্রাম (নাটোর), ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি]
গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা। যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া জামে মসজিদের পাশে সুপেয় পানির নলকূপ। কিছুক্ষণ দাঁড়াতেই কলসে পানি নিতে আসলেন নুর নাহার (৪৫) নামের এক গৃহবধূ।
জানতে চাইলে বলেন, চার সদস্যের পরিবার তাঁর। বাড়িতে নলকূপ থাকলেও বেশ কয়েক দিন ধরে পানি উঠছে না। তাই প্রায় আধা কিলোমিটার দূরের এই নলকূপে পানি নিতে এসেছেন তিনি।
কলসে পানি ভরা শেষে নুর নাহার জানালেন, হাতলে ৮০ থেকে ৯০ বার চাপ দিয়ে ১২ লিটারের কলসটি ভরতে পেরেছেন তিনি। শুধু যশোরের চাঁচড়ার নুর নাহারের পরিবার নয়; পানির জন্য এমন হাহাকার বিভিন্ন জেলায়।
বৃষ্টি না হওয়ায় খাল, বিল, পুকুর শুকিয়ে কাঠ। ভূগর্ভস্থ পানিও নেমে গেছে অনেক নিচে। ফলে অগভীর-গভীর অনেক নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। খাওয়ার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেচের জন্যও বেকায়দায় পড়েছেন কৃষক।
পানির স্তর এখন কোথায়?
পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) পক্ষ থেকে গত বছর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে কোথাও কোথাও পানির স্তর মাটির ১২০ ফুট পর্যন্ত গভীরে নেমে গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার একটি স্থানে পানির স্তর ১৫৩ ফুট গভীরে নেমে গেছে। রাজশাহী, নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন আর অগভীর নলকূপে পানি ওঠে না।
এ বছর ভূগর্ভস্থ পানি নেমে যাওয়ার কেন্দ্রীয় হিসাব পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন জেলার গৃহস্থ, কৃষক ও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসাবে আগের বছরের তুলনায় কয়েক ফুট নেমেছে। আগের বছরের চেয়ে কষ্টও বেড়েছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) জয়পুরহাটের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত বছর জয়পুরহাটে ভূগর্ভস্থ পানির স্বাভাবিক স্তর ছিল ৩৫ থেকে ৩৬ ফুট। চলতি বছর সেই পানির স্তর পৌঁছেছে ৪৩ থেকে ৪৪ ফুটে। গত বছরের তুলনায় এ স্তরের দূরত্ব বেড়েছে ৭ ফুট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জনস্বাস্থ্য দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার সরকার বলেন, প্রতিবছর শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে ছয় ইঞ্চি করে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে এর চেয়ে দ্বিগুণ নামছে পানির স্তর।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, বছর দশেক আগেও দামুড়হুদায় ৪০-৬০ ফুটের মধ্যে ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর ছিল। এখন বর্ষা মৌসুমেও ১০০-১৪০ ফুটের মধ্যে পানির স্তর পাওয়া যাচ্ছে না।
যশোরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ পারভেজ বলেন, গত বছর যশোরে পানির স্তর নেমেছে ৩৭ ফুট। এ বছর যশোর সদর উপজেলায় ৩৪ ফুট পানির স্তর নেমেছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) নাটোরের বড়াইগ্রামের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, বড়াইগ্রামে ২০২১ সালে পানির স্তর ছিল ৯ দশমিক ৬০ মিটার, ২০২২ সালে ১০ মিটার, ২০২৩ সালে ১১ দশমিক ৬০ মিটার এবং ২০২৪ সালে এসে ১৪ দশমিক ৪০ মিটার নেচে নেমে গেছে।
ঝিনাইদহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঝিনাইদহের অধিকাংশ এলাকায় ৩৫ থেকে ৪০ ফুট পানির স্তর নিচে নেমে গেছে।
রাজবাড়ীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাকারিয়া বলেন, বর্তমানে রাজবাড়ীতে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে ৩০ থেকে ৩৫ ফুট।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২৮ ফুট পর্যন্ত নেমে গেছে।
কৃষকের দুর্ভোগ
রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, রাতে জমিতে সেচ দিলে দুপুরের পর তা শুকিয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা হতে হতে ধানখেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া একবার সেচ দেওয়ার পর এক সপ্তাহের আগে আবার সেচ দেওয়ার জন্য বরেন্দ্রর গভীর নলকূপে সিরিয়াল পাওয়া যায় না। ফলে এখন জমির বোরো ধান রক্ষাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ধানের জমিতে সেচের জন্য পানি পাওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। পুকুরগুলোতেও পানি নেই। বিএমডিএর গভীর নলকূপগুলোতেও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। আগে যেখানে এক ঘণ্টায় জমি ভিজে যেত; এখন দুই ঘণ্টা পানি দিয়েও জমিতে পানি রাখা যাচ্ছে না।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, এভাবে আরও এক-দুই সপ্তাহ চললে উত্তরাঞ্চলজুড়ে বোরো ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বোরো ফলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বড়টিয়ার গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, ‘এ বছর মাঠে ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। পানির অভাবে খেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এভাবে আর সপ্তাহখানেক গেলে জমিতে ধানের থেকে চিটার ভাগ বেশি হবে।’
ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, ঘিওরে এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭৬০ হেক্টর।আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। খরা ও দাবদাহে এ বছর উপজেলায় আমের ফলনে বিপর্যয় ঘটতে পারে।
খাবার পানিসহ গৃহস্থালি কাজে সংকট
রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন জানান, বাড়িতে গোসল-খাওয়া থেকে শুরু করে গরুকে পানি পান করানো—সবই হয়ে থাকে নলকূপের পানিতে। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে পানি পাচ্ছেন না নলকূপে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের দশমীপাড়ার মানিক আলী বলেন, ‘আগে ১৫-২০ মিনিট মোটর চালালেই বাড়ির ছাদের ট্যাংক ভরে যেত। প্রায় দুই মাসের মতো লক্ষ করছি, দুই থেকে তিন ঘণ্টা মোটর চালু থাকলেও ট্যাংক ভরছে না।’
ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকায় নলকূপ স্থাপনের কাজ করা শ্রমিক মো. রাকিব ও অহিদুজ্জামান জানান, সাধারণত ২০ থেকে ২৫ ফুট মাটির নিচে পানি পাওয়া যায়। কিন্তু এখন নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ ফুট নিচেও পানি মিলছে না।
কারণ কী
গ্রিন ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন, যশোরের নির্বাহী পরিচালক আশিক মাহমুদ সবুজ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের চারপাশের পুকুর ও জলাশয় ভরাট করছি। জলাধার বলতে আর কিছু বাকি নেই। এখন ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ পড়েছে। যে যার মতো গভীর নলকূপ স্থাপন করে পানির সংস্থান করছে। এতে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। আর জলাধার না থাকায় ভূ-উপরিস্থ ও ভূগর্ভস্থ পানির মধ্যে সাইকেলটি পূর্ণ হতে পারছে না; যার প্রভাবে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।’
ঝিনাইদহের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাসুদ আহম্মদ সঞ্জু বলেন, ‘মানুষ নিজেরাই আজকের এ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পুকুর ভরাট করেছে, গাছগুলো কেটে ফেলেছে। সংযুক্তি আরব আমিরাত, সৌদি আরবে বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তন ঘটেছে, বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে মাটির উপরিভাগ কেটে বড় যাহাজে করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা সবুজায়ন করার চেষ্টা করছে। আর আমরা গাছ লাগাচ্ছি, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ করছি না।’
বিএমডিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তীব্র খরা এবং বৃষ্টিপাত না হওয়া বরেন্দ্র অঞ্চলে পানিসংকটের মূল কারণ। খরায় পুকুর, খাল, বিল, নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে পানির সংকট দীর্ঘ হচ্ছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে বিএমডিএর গভীর নলকূপের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেক গভীর নলকূপ খনন করা হয়েছে। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আরও নিচে নেমে গেছে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা এবং যত্রতত্র পুকুর-খাল-বিল ভরাট করে ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
পানি নিয়ে কয়েক বছর ধরে চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে কাজ করছে সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা রিসো। রিসোর নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি হিসাবে সেচকাজে জেলায় ৯০ শতাংশ পানি ভূগর্ভস্থ থেকে ব্যবহার করা হয়। তবে আমাদের হিসাবে চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রায় ৯৭ শতাংশ সেচ পানিই ভূগর্ভস্থ।’
কর্তৃপক্ষ যা বলছে
বিএমডিএর পরিচালক মো. আব্দুর রশীদ বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নেমে যাবে, আবার বর্ষা মৌসুমে উঠলে খুব একটা সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে বর্ষা মৌসুমে যেসব এলাকায় স্তর ওঠে না, আমরা সেসব এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে পানির স্তর স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’
রাজশাহীর পবা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শাহিনুল হক বলেন, ‘প্রতিবছরই খরার সময়ে বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট দেখা যায়। এবার সংকট একটু বেশি দেখা দিয়েছে। আশা করছি, বৃষ্টি নামলেই আবার পানির স্তর আগের জায়গায় ফিরে আসবে এবং পানির সংকট কমবে।’
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, উপজেলায় সরকারি সাড়ে পাঁচ হাজার ও ব্যক্তিমালিকানা মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার নলকূপ রয়েছে। অগভীর নলকূপে পানি না ওঠায় গভীর নলকূপ বসানোর দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। কেউ কেউ ১০-১২ ফুট গর্ত খুঁড়ে মাটির রিং বসিয়ে পাম্প নিচে নামিয়ে পানি ওঠানোর চেষ্টা করছেন।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, ‘নদী, খাল, পুকুর ও জলাশয় ভরাট করার কারণে পানির লেয়ার যে রিচার্জ হতো, সেটা হয় না।’
রাজবাড়ীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাকারিয়া বলেন, সরকারিভাবে জেলায় মোট ১৯ হাজার ২২৮টি টিউবওয়েল বসানো আছে। জেলায় কী পরিমাণ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, সেটার কোনো তথ্য নেই।
সুপারিশ
যশোর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে উপরিভাগের জলাধার সংরক্ষণ জরুরি। সে জন্য ভরাট করা দিঘিগুলো পুনঃখনন করার উদ্যোগ নিতে হবে।
বিএমডিএ জয়পুরহাটের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাকের মতে, পানির অপচয় রোধ করতে হবে। সরকারি সেচ নীতিমালার বিধান মেনে গভীর বা অগভীর নলকূপ স্থাপন করতে হবে। নদী-পুকুর ও জলাশয়গুলো সংস্কার করে পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
পানি ও ভূগর্ভ নিয়ে গবেষণা করা কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম জানান, ‘সবাই সাবমারসিবলের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে নদী কিংবা খালের পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে আমাদের চরম বিপাকে পড়তে হবে।’
ঝিনাইদহের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাসুদ আহম্মদ সঞ্জু বলেন, সরকারের নিয়ম আছে, এক কিলোমিটারের মধ্যে গভীর নলকূপ করা যাবে না। কিন্তু এ নিয়ম কেউ মানছে না। পানিপ্রবাহের উৎস নদ-নদী ভরাট করে দখল হয়ে যাচ্ছে; যে কারণে গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। এখন পানির স্তর স্বাভাবিক রাখতে নদী খনন করতে হবে। নিয়ম মেনে গভীর নলকূপ স্থাপনে নজরদারি করতে হবে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝিনাইদহ ও বড়াইগ্রাম (নাটোর), ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি]
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে