শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের এই প্রতিযোগিতার নাম ‘ড্র্যাগ রেস’ (DRAG RACE)। এসব প্রতিযোগিতায় যেমন হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটে, তেমনি স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রচণ্ড বিরক্ত। কিন্তু দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কেউই এতে গা করেন না। কারণ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের আটকে রাখার ক্ষমতা তাঁদের নেই।
খোদ ট্রাফিক পুলিশের হিসাবে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতার কারণে ৩১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশত মানুষ। কিন্তু একটি ঘটনায়ও থানা-পুলিশ সরাসরি কোনো মামলা নেয়নি। তারা মামলা করেছে মোটরযান আইনে, তবে সে সংখ্যাও কম নয়। এ সময়ে মোটরযান আইনে ১৭৩টি গাড়ির জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো আপসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে পুলিশ।
বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের এই গোপন প্রতিযোগিতার কথা গুলশান ও বনানী থানার পুলিশ, গুলশান বিভাগের পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, চোখের সামনে পড়লেই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। তবে গভীর রাতে সব পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ না থাকার সুযোগে কেউ কেউ বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। আর গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, বড়লোকের ছেলেরা এসব গাড়ি চালান। ধরলেও আটকে রাখা যায় না। নানা মহলের ফোন আসতে থাকে।
সম্প্রতি এই প্রতিযোগিতা নিয়ে গুলশানের বাসিন্দা সাবেক এক বিচারপতি অভিযোগ করার পর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২৫টি গাড়ি ও গাড়ির চালককে চিহ্নিত করেছিল গুলশান থানার পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, প্রতিযোগীদের বেশির ভাগই পড়াশোনা করেন অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা বা যুক্তরাষ্ট্রে। ছুটিতে এসে তাঁরা গাড়ি নিয়ে মধ্যরাতে বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের বাবারা কেউ শিল্পপতি, কেউ পোশাক কারখানা বা রেস্তোরাঁর মালিক, কেউবা রাজনীতিবিদ। বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের মালিকও আছেন এই তালিকায়। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের খোঁজ নেওয়ার পর কেউ কেউ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বন্ধ করেছেন।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা ধরে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে অনেকের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাঁদের অভিভাবকেরা এসব মানতে নারাজ। তাঁরা বলেছেন, ছেলেরা যে একটু জোরে গাড়ি চালায়, সেটা নিছক বিনোদন; কোনো অপরাধ নয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার নাঈম আহমেদ বলেছেন, এসব ঘটনায় সব সময় দণ্ডবিধির ৩৩৮ ক ধারা অনুযায়ী বেপরোয়া বা অবহেলা করে জনপথে গাড়ি চালানোর অভিযোগ এনে মামলা করা প্রয়োজন। যার শাস্তি হবে তিন বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনা শ্রম কারাদণ্ড। প্রতিযোগিতার মতো ঘটনায় পুলিশকে মোটরযান আইনের মামলা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। কেননা ওই তরুণদের কাছে ১০-২০ হাজার টাকা জরিমানা কিছুই না।
এই প্রতিবেদক এক মাস ধরে খোঁজ করে জানতে পারেন, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার গভীর রাতে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতা হয়। কখনো নির্দিষ্ট দূরত্বে সময় ধরে আবার কখনো দল বেঁধে প্রতিযোগিতা চলে। এর রুটগুলো হলো, গুলশান পুলিশ প্লাজা থেকে গুলশান-১ চত্বর, গুলশান-১ থেকে ২ নম্বর চত্বর, গুলশান-২ থেকে পাকিস্তান দূতাবাস, মহাখালী থেকে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে আবার মহাখালী ফিরে আসা। তবে এসব প্রতিযোগিতায় কোনো আর্থিক লেনদেন বা পুরস্কার আছে কি না তা কেউ বলতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট সবাই বলেছেন, এটা উঠতি বয়সী তরুণদের বাহাদুরি দেখানোর প্রতিযোগিতা।
৫ জানুয়ারি রাতে গুলশান-২-এ হোটেল ওয়েস্টিনের সামনে দিয়ে বিকট শব্দ করে গুলশান-২ চত্বরের দিকে যাচ্ছিল একটি গাড়ি। গাড়িটির পিছু নেয় ট্রাফিক পুলিশের একটি বাইক। বুঝতে পেরে গাড়িটি পিংক সিটির সামনে এসে আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। এই প্রতিবেদক গাড়িটির পিছু নিয়ে দেখতে পান এটি গুলশানের ১২৯ রোডের ২২ নম্বর বাসায় ঢুকেছে। কিন্তু বাড়ির কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনার তিন দিন পর ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আবার ওই বাসায় যান এই প্রতিবেদক। জানতে পারেন, সেদিন গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তাহমিদুর রহমান নামের এক তরুণ। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। উচ্চ শব্দে গাড়ি চালানো এবং প্রতিযোগিতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুলশানের সব ওসি-ডিসি আমাকে চেনেন। কেউ কখনো বাধা দেননি।’
গুলশানের ব্যবসায়ী নাহিদ নেওয়াজ নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে জানান, গত বছরের আগস্টে তিনি স্ত্রীসহ (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা) রাতে গুলশান-২ থেকে নিকেতনের বাসায় ফিরছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে এসে একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের গাড়ি একটা দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। গাড়ি থেকে নেমে দেখেন, তাঁদের ধাক্কা দেওয়া গাড়িটি রেসিং কার। সেই দুর্ঘটনায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে গেলেও ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তাঁদের গাড়িটি।
এদিকে পুলিশের প্রতিবেদনের তথ্য ও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকার রাস্তায় যাঁরা প্রতিযোগিতা করেন, তাঁদের একজন বারিধারার শেইরেন ইসলাম। বাবা শিল্পপতি শাহরিয়ার আহম্মেদ। তাঁদের বাসার তত্ত্বাবধায়ক রিয়াজ বলেন, ছয় মাস আগে মিতসুবিশি একটি গাড়ি নিয়ে রেসিং করছিলেন শেইরেন। দুর্ঘটনার পর গাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। ঘটনাটির তদন্ত করেন গুলশান থানার এএসআই সাহবুদ্দিন। জানতে চাইলে শাহরিয়ার আহম্মেদ এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
গত বছর ২৩ জুন বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি গুলশান-২ নম্বর চত্বরের আইল্যান্ডে তুলে দেন জিয়াদ রহমান নামে এক তরুণ। ওই সময় এক পথচারী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। থাকেন গুলশানের ৯৫ সড়কে। পড়াশোনা করেন মালয়েশিয়া। করোনার পর দেশে এসেছেন। জিয়ানের বাবার নাম আরিফ ইবনে রহমান একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মালিক। সন্তানের রেসিং নিয়ে তিনি বলেন, একটু বেশি গতিতে গাড়ি চালালেই রেসিং হয় না।
নিজের মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের গাড়িতে অতিরিক্ত হলার বা স্পোর্টস সাইলেন্সার লাগিয়ে চলাফেরা করেন গুলশান-২-এর ৭২ নম্বর রোডের তরুণ হাসানুল ইসলাম। ২৮ বছরের এই তরুণ দুটি তৈরি পোশাক কারখানা দেখাশোনা করেন। রেসিং নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ঠিক রেসিং না, তবে শব্দ করে গাড়ি চালাতে ভালো লাগে।
গুলশানেরই আরেক তরুণ সাদ্দাম হোসেন পড়াশোনা করেন কানাডায়। গত বছরের জুলাইয়ে রেসিং করতে গিয়ে গুলশান থানার পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। পুলিশ তাঁর বাবাকে থানায় ডেকে ছেলেকে বুঝিয়ে দেয়।
গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মোটরযান আইনে মামলা দিয়ে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রেগুলার মামলা দেওয়া যায় না।
গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা করেন বনানীর আই ব্লকের এক নম্বর রোডের সৈয়দ তানজিল আহম্মেদ। একাধিকবার তিনি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। তানজিলের বাবা সৈয়দ গালিব আহমেদ তৈরি পোশাক কারখানার মালিক। ছেলের রেসিং নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে গালিব আহমেদ বলেন, দুর্ঘটনা না ঘটালে এতে কোনো সমস্যা নেই।
মধ্যরাতে রেসিং করতে গিয়ে পুলিশের জরিমানা গুনেছেন পূর্ব জুরাইনের তরুণ তারেক আজিজ। ২৬ জুন রাতে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে তাঁকে। গুলশান থানার এসআই সুজন চন্দ্র দে বলেন, তারেক আজিজ মাঝেমধ্যেই গুলশানে রেসিং করতে আসেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মধ্যরাতে যাঁরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান, তাঁদের প্রায় সবার গাড়িতেই বিশেষ ধরনের সাইলেন্সার (ধোঁয়া নির্গমনের পথ) লাগানো আছে। এর নাম স্পোর্টস সাইলেন্সার বা হলার। এতে গাড়ি চলার সময় বিকট শব্দ হয়। সেই শব্দের তালে বাড়তে থাকে গাড়ির গতি।
রাজধানীর কাকরাইলের কার হাউস ও বাংলামোটরে একাধিক গাড়ির দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সাইলেন্সারের দাম ৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মাদ মাহবুব ই রব্বানী বলেন, দেশে আইন অনুযায়ী গাড়িতে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ হয়, এমন কিছু গাড়ি ব্যবহারের অনুমোদন নেই।
পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট কাজল বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৮৪ ধারা অনুযায়ী শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা পরিবর্তন করা হলে জরিমানা করার বিধান রয়েছে।
অভিজাত এলাকার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সপ্তাহে এই তিন দিন পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় চেকপোস্ট বাড়ানো হয়। এমনই এক চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকেন গুলশান থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ছুটির দিনে শুধু গুলশানেই ১২টি চেকপোস্ট থাকে। চেকপোস্টে প্রতিরাতে ৭-৮টি করে মামলা দেওয়া হয়।পুলিশের এই এসআইয়ের অভিযোগ, যাঁরা এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, তাঁরা অধিকাংশই মাদকাসক্ত। প্রায় সময়ই গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের মাদক পাওয়া যায়।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, গুলশানে বসবাসকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মাঝে মাঝে পুলিশ অভিযানে নামে। গত কয়েক মাসে অন্তত এমন ৩০টি স্পোর্টস হলারের গাড়ি আটক করে ১৫-২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। তবে রেসিং এখন অনেকটাই কমেছে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আছে, উচ্চবিত্ত পরিবারের এই সন্তানরা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটালেও এসব দুর্ঘটনায় ফৌজদারি মামলা নেয় না পুলিশ। আর কোনো ভুক্তভোগী মামলা করতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষ হয়ে পুলিশই আপস করার প্রস্তাব দেয়।
গত ১১ ডিসেম্বর রাতে মহাখালী থেকে বিমানবন্দরে দিকে প্রতিযোগিতা করার সময় মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের একটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌসদর দপ্তরের সামনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে পাঁচজন আহত হন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরে গাড়িসহ দুজনকেই ছেড়ে দেন বনানী থানা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাড়িচালক ছিলেন জিন্নাত জামান নামের এক তরুণ। জিন্নাতের বাবা একটি শিল্প গ্রুপের মালিক। জিন্নাতের সঙ্গে থাকা মুশফিক বলেন, বেশি গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি বলেই আপস হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ঢাকার রাস্তায় এই ঘটনাগুলো পুলিশের সামনেই হয়। কিন্তু তাদের জবাবদিহি আনতে পুলিশ ব্যর্থ হয়। কারণ পুলিশ সদস্যরা মনে করেন, এরা কোনো না কোনোভাবে প্রভাবশালী। তবে এসব বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।
গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের এই প্রতিযোগিতার নাম ‘ড্র্যাগ রেস’ (DRAG RACE)। এসব প্রতিযোগিতায় যেমন হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটে, তেমনি স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রচণ্ড বিরক্ত। কিন্তু দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কেউই এতে গা করেন না। কারণ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের আটকে রাখার ক্ষমতা তাঁদের নেই।
খোদ ট্রাফিক পুলিশের হিসাবে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতার কারণে ৩১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশত মানুষ। কিন্তু একটি ঘটনায়ও থানা-পুলিশ সরাসরি কোনো মামলা নেয়নি। তারা মামলা করেছে মোটরযান আইনে, তবে সে সংখ্যাও কম নয়। এ সময়ে মোটরযান আইনে ১৭৩টি গাড়ির জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো আপসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে পুলিশ।
বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের এই গোপন প্রতিযোগিতার কথা গুলশান ও বনানী থানার পুলিশ, গুলশান বিভাগের পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, চোখের সামনে পড়লেই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। তবে গভীর রাতে সব পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ না থাকার সুযোগে কেউ কেউ বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। আর গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, বড়লোকের ছেলেরা এসব গাড়ি চালান। ধরলেও আটকে রাখা যায় না। নানা মহলের ফোন আসতে থাকে।
সম্প্রতি এই প্রতিযোগিতা নিয়ে গুলশানের বাসিন্দা সাবেক এক বিচারপতি অভিযোগ করার পর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২৫টি গাড়ি ও গাড়ির চালককে চিহ্নিত করেছিল গুলশান থানার পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, প্রতিযোগীদের বেশির ভাগই পড়াশোনা করেন অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা বা যুক্তরাষ্ট্রে। ছুটিতে এসে তাঁরা গাড়ি নিয়ে মধ্যরাতে বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের বাবারা কেউ শিল্পপতি, কেউ পোশাক কারখানা বা রেস্তোরাঁর মালিক, কেউবা রাজনীতিবিদ। বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের মালিকও আছেন এই তালিকায়। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের খোঁজ নেওয়ার পর কেউ কেউ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বন্ধ করেছেন।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা ধরে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে অনেকের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাঁদের অভিভাবকেরা এসব মানতে নারাজ। তাঁরা বলেছেন, ছেলেরা যে একটু জোরে গাড়ি চালায়, সেটা নিছক বিনোদন; কোনো অপরাধ নয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার নাঈম আহমেদ বলেছেন, এসব ঘটনায় সব সময় দণ্ডবিধির ৩৩৮ ক ধারা অনুযায়ী বেপরোয়া বা অবহেলা করে জনপথে গাড়ি চালানোর অভিযোগ এনে মামলা করা প্রয়োজন। যার শাস্তি হবে তিন বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনা শ্রম কারাদণ্ড। প্রতিযোগিতার মতো ঘটনায় পুলিশকে মোটরযান আইনের মামলা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। কেননা ওই তরুণদের কাছে ১০-২০ হাজার টাকা জরিমানা কিছুই না।
এই প্রতিবেদক এক মাস ধরে খোঁজ করে জানতে পারেন, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার গভীর রাতে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতা হয়। কখনো নির্দিষ্ট দূরত্বে সময় ধরে আবার কখনো দল বেঁধে প্রতিযোগিতা চলে। এর রুটগুলো হলো, গুলশান পুলিশ প্লাজা থেকে গুলশান-১ চত্বর, গুলশান-১ থেকে ২ নম্বর চত্বর, গুলশান-২ থেকে পাকিস্তান দূতাবাস, মহাখালী থেকে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে আবার মহাখালী ফিরে আসা। তবে এসব প্রতিযোগিতায় কোনো আর্থিক লেনদেন বা পুরস্কার আছে কি না তা কেউ বলতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট সবাই বলেছেন, এটা উঠতি বয়সী তরুণদের বাহাদুরি দেখানোর প্রতিযোগিতা।
৫ জানুয়ারি রাতে গুলশান-২-এ হোটেল ওয়েস্টিনের সামনে দিয়ে বিকট শব্দ করে গুলশান-২ চত্বরের দিকে যাচ্ছিল একটি গাড়ি। গাড়িটির পিছু নেয় ট্রাফিক পুলিশের একটি বাইক। বুঝতে পেরে গাড়িটি পিংক সিটির সামনে এসে আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। এই প্রতিবেদক গাড়িটির পিছু নিয়ে দেখতে পান এটি গুলশানের ১২৯ রোডের ২২ নম্বর বাসায় ঢুকেছে। কিন্তু বাড়ির কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনার তিন দিন পর ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আবার ওই বাসায় যান এই প্রতিবেদক। জানতে পারেন, সেদিন গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তাহমিদুর রহমান নামের এক তরুণ। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। উচ্চ শব্দে গাড়ি চালানো এবং প্রতিযোগিতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুলশানের সব ওসি-ডিসি আমাকে চেনেন। কেউ কখনো বাধা দেননি।’
গুলশানের ব্যবসায়ী নাহিদ নেওয়াজ নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে জানান, গত বছরের আগস্টে তিনি স্ত্রীসহ (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা) রাতে গুলশান-২ থেকে নিকেতনের বাসায় ফিরছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে এসে একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের গাড়ি একটা দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। গাড়ি থেকে নেমে দেখেন, তাঁদের ধাক্কা দেওয়া গাড়িটি রেসিং কার। সেই দুর্ঘটনায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে গেলেও ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তাঁদের গাড়িটি।
এদিকে পুলিশের প্রতিবেদনের তথ্য ও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকার রাস্তায় যাঁরা প্রতিযোগিতা করেন, তাঁদের একজন বারিধারার শেইরেন ইসলাম। বাবা শিল্পপতি শাহরিয়ার আহম্মেদ। তাঁদের বাসার তত্ত্বাবধায়ক রিয়াজ বলেন, ছয় মাস আগে মিতসুবিশি একটি গাড়ি নিয়ে রেসিং করছিলেন শেইরেন। দুর্ঘটনার পর গাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। ঘটনাটির তদন্ত করেন গুলশান থানার এএসআই সাহবুদ্দিন। জানতে চাইলে শাহরিয়ার আহম্মেদ এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
গত বছর ২৩ জুন বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি গুলশান-২ নম্বর চত্বরের আইল্যান্ডে তুলে দেন জিয়াদ রহমান নামে এক তরুণ। ওই সময় এক পথচারী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। থাকেন গুলশানের ৯৫ সড়কে। পড়াশোনা করেন মালয়েশিয়া। করোনার পর দেশে এসেছেন। জিয়ানের বাবার নাম আরিফ ইবনে রহমান একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মালিক। সন্তানের রেসিং নিয়ে তিনি বলেন, একটু বেশি গতিতে গাড়ি চালালেই রেসিং হয় না।
নিজের মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের গাড়িতে অতিরিক্ত হলার বা স্পোর্টস সাইলেন্সার লাগিয়ে চলাফেরা করেন গুলশান-২-এর ৭২ নম্বর রোডের তরুণ হাসানুল ইসলাম। ২৮ বছরের এই তরুণ দুটি তৈরি পোশাক কারখানা দেখাশোনা করেন। রেসিং নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ঠিক রেসিং না, তবে শব্দ করে গাড়ি চালাতে ভালো লাগে।
গুলশানেরই আরেক তরুণ সাদ্দাম হোসেন পড়াশোনা করেন কানাডায়। গত বছরের জুলাইয়ে রেসিং করতে গিয়ে গুলশান থানার পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। পুলিশ তাঁর বাবাকে থানায় ডেকে ছেলেকে বুঝিয়ে দেয়।
গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মোটরযান আইনে মামলা দিয়ে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রেগুলার মামলা দেওয়া যায় না।
গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা করেন বনানীর আই ব্লকের এক নম্বর রোডের সৈয়দ তানজিল আহম্মেদ। একাধিকবার তিনি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। তানজিলের বাবা সৈয়দ গালিব আহমেদ তৈরি পোশাক কারখানার মালিক। ছেলের রেসিং নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে গালিব আহমেদ বলেন, দুর্ঘটনা না ঘটালে এতে কোনো সমস্যা নেই।
মধ্যরাতে রেসিং করতে গিয়ে পুলিশের জরিমানা গুনেছেন পূর্ব জুরাইনের তরুণ তারেক আজিজ। ২৬ জুন রাতে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে তাঁকে। গুলশান থানার এসআই সুজন চন্দ্র দে বলেন, তারেক আজিজ মাঝেমধ্যেই গুলশানে রেসিং করতে আসেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মধ্যরাতে যাঁরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান, তাঁদের প্রায় সবার গাড়িতেই বিশেষ ধরনের সাইলেন্সার (ধোঁয়া নির্গমনের পথ) লাগানো আছে। এর নাম স্পোর্টস সাইলেন্সার বা হলার। এতে গাড়ি চলার সময় বিকট শব্দ হয়। সেই শব্দের তালে বাড়তে থাকে গাড়ির গতি।
রাজধানীর কাকরাইলের কার হাউস ও বাংলামোটরে একাধিক গাড়ির দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সাইলেন্সারের দাম ৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মাদ মাহবুব ই রব্বানী বলেন, দেশে আইন অনুযায়ী গাড়িতে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ হয়, এমন কিছু গাড়ি ব্যবহারের অনুমোদন নেই।
পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট কাজল বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৮৪ ধারা অনুযায়ী শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা পরিবর্তন করা হলে জরিমানা করার বিধান রয়েছে।
অভিজাত এলাকার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সপ্তাহে এই তিন দিন পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় চেকপোস্ট বাড়ানো হয়। এমনই এক চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকেন গুলশান থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ছুটির দিনে শুধু গুলশানেই ১২টি চেকপোস্ট থাকে। চেকপোস্টে প্রতিরাতে ৭-৮টি করে মামলা দেওয়া হয়।পুলিশের এই এসআইয়ের অভিযোগ, যাঁরা এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, তাঁরা অধিকাংশই মাদকাসক্ত। প্রায় সময়ই গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের মাদক পাওয়া যায়।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, গুলশানে বসবাসকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মাঝে মাঝে পুলিশ অভিযানে নামে। গত কয়েক মাসে অন্তত এমন ৩০টি স্পোর্টস হলারের গাড়ি আটক করে ১৫-২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। তবে রেসিং এখন অনেকটাই কমেছে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আছে, উচ্চবিত্ত পরিবারের এই সন্তানরা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটালেও এসব দুর্ঘটনায় ফৌজদারি মামলা নেয় না পুলিশ। আর কোনো ভুক্তভোগী মামলা করতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষ হয়ে পুলিশই আপস করার প্রস্তাব দেয়।
গত ১১ ডিসেম্বর রাতে মহাখালী থেকে বিমানবন্দরে দিকে প্রতিযোগিতা করার সময় মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের একটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌসদর দপ্তরের সামনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে পাঁচজন আহত হন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরে গাড়িসহ দুজনকেই ছেড়ে দেন বনানী থানা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাড়িচালক ছিলেন জিন্নাত জামান নামের এক তরুণ। জিন্নাতের বাবা একটি শিল্প গ্রুপের মালিক। জিন্নাতের সঙ্গে থাকা মুশফিক বলেন, বেশি গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি বলেই আপস হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ঢাকার রাস্তায় এই ঘটনাগুলো পুলিশের সামনেই হয়। কিন্তু তাদের জবাবদিহি আনতে পুলিশ ব্যর্থ হয়। কারণ পুলিশ সদস্যরা মনে করেন, এরা কোনো না কোনোভাবে প্রভাবশালী। তবে এসব বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে