ভ্যানে চড়িয়া হাঁটিয়া চলিল

সেলিম সুলতান সাগর, চিতলমারী (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২২, ০৬: ৪৩
আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ১২: ০৪

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশে তিনটি কাঁচা রাস্তায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অথচ এ উপজেলার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সদরের কাছেই অবহেলায় পড়ে আছে একাধিক কাঁচা রাস্তা, ভাঙা সেতু ও কালভার্ট।

উপজেলা সদর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে তিনটি কাঁচা রাস্তার অবস্থা এখন খুবই খারাপ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার দাবি করেও সড়কগুলোতে তেমন বরাদ্দ হচ্ছে না।

জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দুরে হিজলা ইউনিয়নের কুড়ালতলা গ্রাম। কুড়ালতলা এসডিএফ অফিস থেকে শহীদুল হকের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার, চিতলমারী-শৈলদাহ প্রধান সড়কের বোয়ালিয়া থেকে আল আমীনের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার এবং কুড়ালতলা গাজীপাড়ার কমলেশ বিশ্বাসের বাড়ি থেকে গণেশ কির্ত্তনীয়ার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে এসব রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। শিক্ষার্থী, কৃষিজীবী থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষ বছরের পর বছর এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

উপজেলার চরকুড়ালতলা গ্রামের বাসিন্দা জামাল শেখ, আল আমীন শেখ, সালমা বেগম, আকাশী বেগম, রিয়াজ শেখ, স্বপ্নপুরের আব্দুল কাদের, কুড়ালতলার বাসিন্দা ইরাবতী মজুমদার, মো. এমদাদুল ইসলাম, মো. জাবরুন শেখ ও মো. সোহাগ শিকদার বলেন, তাঁদের উৎপাদিত শাকসবজি, ঘেরের মাছসহ নানা ফসল নিয়ে এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যা খুবই কষ্টসাধ্য। বছরের পর বছর তাঁদের গ্রামের এক কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা পড়ে আছে। মেম্বার-চেয়ারম্যানেরা ভোটের সময় আসলে উন্নয়নের নানা কথা বলেন। কিন্তু তাঁদের রাস্তা, কালভার্ট নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

শিবপুর সিরাজনগর কওমি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাঈম শেখ, তার বন্ধু সপ্তম শ্রেণির আউয়াল শেখ ও অষ্টম শ্রেণির সামিউল শেখ কর্দমাক্ত পথ মাড়িয়ে প্রতিদিন মাদ্রাসায় যায়। তারা বলে, যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়, অনেক সময় আছাড়ও খেতে হয়। তবু এই পথে যাতায়াত করতে হয়। রাস্তাটা পাকা হলে অনেক ভালো হতো।

হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মেহেদী হাসান সবুজ মুন্সী ওই তিনটি রাস্তার দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, উপজেলা সদর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের তিনটি কাঁচা রাস্তা। এই এলাকায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ বসবাস করেন। উপজেলায় উন্নয়নমূলক কত কাজ হয়। অথচ এই রাস্তাগুলো উন্নয়নের জন্য কোনো বরাদ্দ হয় না। এটা খুব দুঃখজনক। রাস্তাগুলো পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবু শাহীন বলেন, এই ইউনিয়নে যাতায়াতের প্রধান সড়কসহ (কুড়ালতলা জীবনের দোকান থেকে বোয়ালিয়া ফরিদ গাজীর বাড়ি পর্যন্ত) ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। স্থানীয়দের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তা পাকাকরণ ও সংস্কারের জন্য উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ে সম্প্রতি ৩১টি রাস্তার তালিকা দেওয়া হয়েছে। রাস্তাগুলোর জন্য বরাদ্দ এবং যথাযথভাবে কাজ হলে এই দুর্ভোগ কেটে যাবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত