তিন চাকার যানে ঝুঁকি

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২২, ১১: ১১
Thumbnail image

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কে চলছে ব্যাটারিচালিত মাহিন্দ্র, সিএনজি, অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের তিন চাকার যান। আইন ও নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব যান। অথচ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কে এ ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ।

এদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পর্যটন নগরী কুয়াকাটার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার সড়ক যোগাযোগ ভালো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে পরিবহনের সংখ্যা। প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন বিলাসবহুল বাস। কিন্তু তিন চাকার ব্যাটারিচালিত যান মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়ানোয় ব্যাহত হচ্ছে পরিবহন চলাচল। কুয়াকাটা-পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তাতেই তিন চাকার ব্যাটারিচালিত যান মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এতে মহাসড়কে পরিবহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ঘটছে দুর্ঘটনা।

এদিকে মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান চলাচলের ক্ষেত্রে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত যান চলাচলে সমস্যার কথা জানিয়ে গ্রিন লাইন পরিবহনের চালক বায়জিদ হোসেন বলেন, ‘মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন চলাচল করায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে না পারলে ভোগান্তি কমবে না, সময়ও বেশি লাগবে।’

জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, বর্তমানে পটুয়াখালীর অভ্যন্তরীণ রুটে ১৪১টি এবং দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটে শতাধিক বাস চলাচল করে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এই রুটে নতুন বিলাসবহুল বাস চলাচল শুরু করেছে। তবে তিন চাকার ধীরগতির যানবাহন আগে থেকেই মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাই আমাদের প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা ঘটেছে। সরকারের এখনই মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা না হলে এই সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা বাড়বে।

জেলা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অটোবাইক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন তালুকদার বলেন, ‘আমরা জনগণের সুবিধার্থে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ৬০টি গাড়ি জেলা শহরের আশপাশের সড়ক ও মহাসড়কে চলাচলের ব্যবস্থা করি। কিন্তু এখন মহাসড়কে এদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এখন প্রতিদিন শত শত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অটোবাইক মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, মরছে মানুষ। এটা রোধ করতে হলে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

পটুয়াখালীর সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সচেতন নাগরিক নাসরিন মোজাম্মেল এমা বলেন, ‘মহাসড়ক বলতেই বোঝা যায় চার লেন। কিন্তু আমাদের পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক দুই লেনের। সর্বপ্রথম এ সড়কটি চার লেনে রূপান্তর করতে হবে। আমি বিভিন্ন দেশে ঘুরেছি এবং দেখেছি কোথাও মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল করে না। সেখানে আমাদের দেশে চলে এবং প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।’

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় মাওয়া থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ছয় লেনের সড়কে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে দুর্ঘটনা কমবে।

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত