নদীর পাড়ে জিও ব্যাগ ফেলেও থামানো যাচ্ছে না ভাঙন

আরিফুল হক তারেক, মুলাদী
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০৬: ৪৭
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৮: ০৪

মুলাদীতে নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার পরেও রোধ করা যাচ্ছে না ভাঙন। নদীভাঙন রোধে নেওয়া কোনো ব্যবস্থাই কাজে আসছে না। উপজেলার আড়িয়াল খাঁ ও জয়ন্তী নদীর মোহনায় বাটামারা ইউনিয়নের আলীমাবাদ এলাকায় নতুন করে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নদীভাঙনে ভুক্তভোগীরা জানান, সাধারণত বর্ষা মৌসুমের শুরু এবং শেষের দিকে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু চলতি বছর আলীমাবাদ রামচর এলাকায় শীতকালেও নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এই এলাকায় ইতিপূর্বে কয়েকবার জিও ব্যাগ ফেলে নদীভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থাই কাজে আসছে না। ভাঙনে বাটামারা ইউনিয়নের এবিআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে।

আলীমাবাদ গ্রামের আবুল হোসেন জানান, বাটামারা ইউনিয়নে এই গ্রামটি অনেক বড় ছিল। কয়েক বছর নদীভাঙনে বেশ কিছু অংশ বিলীন হয়ে গেছে। অনেক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। গত বর্ষা মৌসুমে আড়িয়াল খাঁ ও জয়ন্তী নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছিল। বর্ষার পরে কিছুটা কমে যায়। এখন আবার ভাঙন শুরু হয়েছে।

একই গ্রামের শামীম খান জানান, বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে ভাঙন সৃষ্টি হয়। বালু ব্যবসায়ীরা রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করেন। অধিকাংশ বালু উত্তোলনকারী দিনের বেলায় পাশের কালকিনি উপজেলায় চলে যান। রাত হলেই আলীমাবাদ এলাকায় ঢুকে বালু কেটে নেন। রাতের বেলায় এসব নদীতে অভিযান চালালে নদীভাঙন রোধ করা সম্ভব হতো। এ ছাড়া এসব বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁরা তাঁদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বালু ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও নদীভাঙনে কয়েকশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

রামচর এলাকার আবদুল হান্নান বলেন, নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে জিও ব্যাগ ফেলেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশগাছ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে নদীভাঙন রোধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নদীভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। কয়েক জায়গা দিয়ে জিও ব্যাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হলে হয়তো ভাঙন রোধ করা সম্ভব হতো।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাবুগঞ্জ উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, মুলাদী উপজেলার আলীমাবাদ এলাকায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এ বছরও ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রিয়াজুর রহমান জানান, মুলাদী উপজেলায় কোনো বালুমহাল নেই। তাই যেকোনো স্থান থেকে বালু উত্তোলন অবৈধ। প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে নাজিরপুর এলাকায় একটি ড্রেজার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরেও কেউ বালু উত্তোলন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত