পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ কালো ধান চাষ হচ্ছে রাজবাড়ীতে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২২, ১২: ২৭
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২২, ১৫: ২১

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় চাষ হচ্ছে ব্ল্যাক রাইস, যা কালো ধান নামে পরিচিত। এই ধানের চাল পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ হওয়ায় আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন চাষিরা। তাঁরা বলছেন, কালো ধানে খরচ কম, প্রতি কেজি ধান বিক্রি হয় ৫৫৫ টাকায়, যে কারণে অনেকেই এই ধান চাষে আগ্রহী। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকদের ধান বিক্রির সুযোগ করে দিতে পারলে এর আবাদ আরও বাড়বে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাংশা পৌর শহরের কুড়াপাড়া এলাকায় ডা. আব্দুল কাদের বালিকা মাদ্রাসার সুপার আব্দুল কুদ্দুস এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে ব্ল্যাক রাইস চাষ করেছেন। বাড়ির পাশেই জমিতে সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খাচ্ছে কালো রঙের ধান। এই ধান থেকেই হবে কালো রঙের চাল। এটি ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান নামে পরিচিত। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও বাজারে দাম বেশি হওয়ায় ব্ল্যাক রাইস চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেকেই।

আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তিনি ইউটিউব থেকে এই ধানের চাষাবাদ দেখেছেন। চীনের রাজা-বাদশাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কালো ধান চাষ হতো, যা ছিল প্রজাদের জন্য নিষিদ্ধ। ঔষধি গুণাগুণের কারণে এই ধান চাষের ইচ্ছা জাগে তাঁর। পরবর্তী সময়ে তিনি ২০০ গ্রাম ধানের বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে ৪ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন।

আব্দুল কুদ্দুস আরও বলেন, চারা রোপণের নব্বই দিনের মধ্যে ধান ঘরে তোলা যায়। অন্যান্য ধানের থেকে রোগবালাইও কম। ফলনও ভালো পাবেন বলে আশা করছেন। এই জমি থেকে যে পরিমাণ ধান হবে, পুরোটাই রেখে দিয়ে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে রোপণ করতে পারবেন।

আরেক চাষি আল আমিন হোসেন বলেন, তিনিও ইউটিউবে এই ধানের চাষ দেখেছেন। এই ধান প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৫০০ টাকায়। তিনি জানতে পেরেছেন, পাংশা পৌর শহরে এই ধানের চাষ হচ্ছে, তাই দেখতে এসেছেন। আগামীতে তিনি এই ধানের চাষ করবেন বলে জানান।

শাহীন রেজা বলেন, ‘ধান গাছগুলো বেশ সুন্দর। স্বাভাবিক ধান গাছের মতোই। শুধু ধানগুলো কালো আর এই কালো ধান থেকেই বের হবে কালো রঙের চাল। শুনেছি, এই চালে ঔষধি গুণ আছে। অনেক রোগবালাই কমে যায় এই চালের ভাত খেলে। এই চালের ভাত কেমন তা খাওয়ার জন্য ধান সংগ্রহ করে চাষাবাদ করব।’

পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, সাধারণ ধানের চেয়ে কালো ধানের দাম ও চাহিদা অনেক বেশি। কালো ধানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিজেন থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ প্রতিরোধী। পাংশা উপজেলার অনেক কৃষকই এই ধানের চাষ করছেন। কৃষকদের এই ধান বিক্রির সুযোগ করে দিতে পারলে এর আবাদ আরও বাড়বে বলে আশা এই কর্মকর্তার।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত