ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজে আটকে সেতুর সুফল

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১২: ৫৫

ধরলা নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতু উদ্বোধনের পাঁচ বছরেও সুফল পাচ্ছে না লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামের লাখ লাখ মানুষ। সেতুর পশ্চিম দিকে লালমনিরহাট প্রান্তে রত্নাই নদীর ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওই সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ৩০ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে মানুষের।

জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে রত্নাই নদীর ওপর ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ দিয়ে চলছে হালকা যানবাহন। সেতুটি সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মিত না করায় ধরলা নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতু দিয়ে বাস, ট্রাক ও ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার লাখো মানুষ। এই ব্রিজের কয়েক জায়গায় পাটাতনের স্টিলের পাত উঠে গেছে। তাতে ঝালাই ও জোড়াতালি দিয়ে চলছে। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে যেতে পারে। এতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে রংপুর ও লালমনিরহাটের সঙ্গে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। এদিকে বেইলি ব্রিজ দিয়ে পাঁচ টনের বেশি পণ্য পরিবহন না করতে সতর্কতা জারি করেছে লালমনিরহাট সড়ক বিভাগ।

২০১৮ সালের ৩০ জুন শেখ হাসিনা ধরলা সেতু উদ্বোধন করা হয়। নদীশাসন ও সংযোগ সড়কসহ এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৯৫ কোটি টাকা। ৯৫০ মিটার দীর্ঘ এই সেতু দিয়ে প্রথমদিকে বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

লালমনিরহাট সরকারি কলেজের প্রভাষক শরিফুল হক সাথী জানান, বেইলি ব্রিজটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারী পণ্য নিয়ে যাতায়াত করলে সেতুটি কেঁপে ওঠে। তিনি সংযোগ সেতু নির্মাণের দাবি করেন।

কুলাঘাট এলাকার অটোরিকশাচালক মফিজুল ইসলাম মফু বলেন, ‘সরকার শতকোটি টাকা ব্যয় করি এত বড় একখান সেতু করি দিছে। হামরা  যাত্রী নিয়ে ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী যাতায়াত করি। যাতায়াতের সময় বেইলি ব্রিজে গাড়ি নিয়ে উঠলে ভয় লাগে।’

লালমনিরহাটের ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, ধরলা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী দুই জেলার মানুষের প্রাণের দাবি পূরণ করেছেন। কিন্তু রত্নাই নদীর ওপর বেইলি ব্রিজটি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন মানুষ।

লালমনিরহাটের আরেক ব্যবসায়ী আবু হাসনাত রানা জানান, সংযোগ সেতুটি হবে দুই জেলার অর্থনীতির কর্মকাণ্ডের লাইফ লাইন। ধরলা সেতু দিয়ে ট্রাক চলাচল না করায় ফুলবাড়ীসহ কুড়িগ্রামে পণ্য পরিবহনে তাঁদের বেশি খরচ হচ্ছে।

লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি শেখ আব্দুল হামিদ বাবু বলেন, ভগ্ন রত্নাই বেইলি ব্রিজের স্থলে নতুন সেতু নির্মিত হলে পাল্টে যাবে দুই জেলার অর্থনীতির চিত্র। কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার জানান, বেইলি ব্রিচটি নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ের সেতু ডিজাইন বিভাগের কাজ শেষ হয়েছে। ১৩৮ দশমিক ৪৪ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার চওড়া সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। শিগগিরই দরপত্র আহ্বান করা হলে ডিসেম্বর নাগাদ কাজ শুরু হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত