ষড়যন্ত্র করে মেয়ের লাশ আটকে রেখেছিল, কোনো প্রমাণ ছিল না: বৃষ্টির বাবা

দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪, ০৯: ৪০
Thumbnail image

আছেন আত্মীয়স্বজন। আছেন প্রতিবেশীরাও। এরপরও নীরবতা। তাই দূর থেকেই শোনা যাচ্ছিল ঘরের ভেতরের বিলাপের সুর। এই চিত্র সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনকে সমাধিস্থ করার পর তাঁর বাড়ির। 

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান বৃষ্টি। এর ১১ দিন পর গত সোমবার স্বজনদের কাছে তাঁর লাশ হস্তান্তর করা হয়। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায়। এই গ্রামে সোমবার রাতে তাঁকে দাফন করা হয়। 

গতকাল মঙ্গলবার বৃষ্টির গ্রামে যান এই প্রতিবেদক। বাড়ির ভেতর থেকে যখন কান্নার শব্দ ভেসে আসছিল, তখন তাঁর ফুফু রোজিনা খাতুন বললেন, অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও বৃষ্টির মাকে থামানো যাচ্ছে না। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও আসলে নেই।

ঘরের ভেতর গিয়ে দেখা যায়, ‘বারবার মেয়ের নাম ধরে চিৎকার করছেন মা বিউটি বেগম। বিলাপ করছিলেন নিজের সন্তান, নিজের কাছে নিয়ে আসছি, শান্তি তো লাগবেই। আমার যে বুকভরা আশা, তা যে ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে।’

একদিকে মেয়েকে হারানোর কষ্ট, অন্যদিকে লাশ ফেরত পাওয়া নিয়ে জটিলতা—সব মিলে কাহিল বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ। আদরের বড় মেয়েকে বড় ভাইয়ের কবরের পাশে নিজ হাতে সমাহিত করেছেন। ‘যারা ষড়যন্ত্র করে মেয়ের লাশ আটকে রেখেছিল, তাদের কাছে কোনো প্রমাণ ছিল না। একটা সাদা কাগজে এটুকু দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে ১১ দিন হয়রানি করা হয়েছে। ১১ দিন কেন, ১১ বছর লাগলেও আমার মেয়ের লাশ আমি ফিরিয়ে আনতাম। আমার মেয়ের লাশ নিতে যারা বিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল, আল্লাহ এর বিচার করবেন। আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন’, বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা সবুজ শেখ।

বৃষ্টি খাতুন ঢাকায় সাংবাদিকতা করতেন। তিনি সেখানে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে বৃষ্টি খাতুন নাম রয়েছে। বেইলি রোডের ঘটনার পরদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে এসে বৃষ্টির মরদেহ শনাক্ত করেছিলেন তাঁর বাবা। তবে রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা দাবি করেন, মৃতের নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। এরপর জটিলতা সৃষ্টি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত