কেমন হলো কারাগার পার্ট ২

Thumbnail image

হইচইয়ে প্রচারিত কারাগার পার্ট ওয়ানে চঞ্চল চৌধুরীর নির্বাক অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শককে। প্রথম ভাগে নির্মাতা একে একে জন্ম দিয়েছেন নানা রহস্যের। পরিচয় করিয়েছেন সিরিজের চরিত্রগুলোর সঙ্গে। দর্শককে দাঁড় করিয়েছেন একের পর এক প্রশ্নের মুখে। ১৪৫ নম্বর সেলের কয়েদি আসলে কে? কী করে এল জেলের ভেতর? সে কি সত্যিই ২৫০ বছর ধরে বেঁচে রয়েছে? সে কি সত্যিই বোবা? জেলার মোস্তাকের ছেলের গল্পটাই বা কী? মাহার বাবা কে? এত সব রহস্যের মধ্যে প্রথম ভাগ শেষ হয়েছে একটি রহস্যের সমাধান দিয়ে, সেটা হলো ১৪৫ নম্বর সেলের কয়েদি কথা বলতে পারে।

দ্বিতীয় ভাগের শুরু হয় একটি মানবশিশুর জন্মমুহূর্ত দিয়ে। আসলে পুরো সিরিজটাই মানবজন্ম নিয়ে। এরপর নির্মাতা একে একে রহস্যের জট খুলেছেন। জানিয়েছেন চরিত্রগুলোর আসল পরিচয়, কী তাঁদের উদ্দেশ্য। কেনই বা তারা ছুটছে কারাগার থেকে বাড়িতে, বাড়ি থেকে গির্জায়, এখানে ওখানে। পুরো সিরিজে প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশের এক হৃদয়স্পর্শী কাহিনি।

আফজাল হোসেনচঞ্চল চৌধুরী মূলত একজন যুদ্ধশিশু। নাম ডেভিড। তার মতো আরও অনেক যুদ্ধশিশু যারা যুদ্ধপরবর্তী সময়ে একে একে ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন দেশে, তারা ফিরে আসতে শুরু করে। খুঁজে ফেরে তাদের জন্মপরিচয়। সারা দেশ চষে বেড়ায় মায়ের খোঁজে। এমনি কজন মানুষ এক হয়েছে মর্মস্পর্শী এক মিশনে। সেই মিশনের অন্যতম সদস্য শতাব্দী ওয়াদুদকে সিরিজের প্রথম ভাগের শেষ পর্বেই দেখেছেন দর্শকেরা। এই পর্বে যুক্ত হয়েছেন তানভীন সুইটিসহ আরও অনেক অভিনেতা। একই সঙ্গে গল্প এগিয়েছে ফারিণ অভিনীত মাহার চরিত্রটির জন্মরহস্য নিয়ে।

সিরিজের প্রথম ভাগে নির্মাতা গল্পটাকে এমন সব রহস্যের চাদরে মুড়ে দিয়েছেন যে দর্শকের প্রত্যাশার পারদ চড়েছে অনেক উঁচুতে। ফলে, দ্বিতীয় ভাগে এসে সেই প্রত্যাশার পুরোটা পূরণ করা নির্মাতার জন্য বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু বিষয় দর্শককে আশাহত করতেই পারে। যেহেতু এই ভাগে নতুন করে কোনো রহস্যের জন্ম নিচ্ছে না, তাই গল্পের গতি কিছুটা ধীর মনে হবে। প্রথম ভাগে গল্পের কিছু শাখা-প্রশাখা বেশ যত্ন নিয়েই ছড়ানো হয়েছিল, যা দ্বিতীয় ভাগে অবহেলিত রয়ে গেল। মূল গল্পটা ঠিকভাবে বলতে গিয়ে পার্শ্ব গল্পগুলো অল্পতেই সমাপ্তি টানা হলো। যেমন আফজাল হোসেনের মতো রহস্যময় একটি চরিত্র কিংবা জেলার মোস্তাকের ছেলের ঘটনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আফজাল অভিনীত জল্লাদ চরিত্রটিকে শেষ ভাগে কেবল গল্পের গতি বাড়াতেই কাজে লাগিয়েছেন গল্পকার।

ইন্তেখাব দিনারএই ভাগেও চঞ্চলের অভিনয় মন ছুঁয়েছে। মন ছুঁয়েছে ইন্তেখাব দিনার ও তাসনিয়া ফারিণের অভিনয়। নাঈম অভিনীত চরিত্রটিকে অবহেলাই করা হলো। আফজাল হোসেন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, শতাব্দী ওয়াদুদ, তানভীন সুইটি, এ কে আজাদ সেতু নিজ নিজ চরিত্রাভিনয়ে দারুণ করেছেন। আর নওফেল জিসান অভিনীত রাজু চরিত্রটি পুরু গল্পে দাপটের সঙ্গে ছুটে বেড়িয়েছে। যদিও দুই-এক জায়গায় খেই হারিয়েছে বলে মনে হয়। ভালো হয়েছে লাইট ও ক্যামেরার কাজ।

শাওকিআসলে কারাগার সিরিজটি নিয়েই বলার অনেক সুযোগ রয়েছে। তবে দ্বিতীয় ভাগে দর্শক তেমন কোনো রহস্যের মুখোমুখি হবেন না বরং আগের রহস্যগুলোর সমাধান পাবেন। পাবেন মন ছুঁয়ে যাওয়া, চোখে জল আনার মতো অনেক মুহূর্ত, অনেক দৃশ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত