মীর রাকিব হাসান
চমক হাসান পেশায় প্রকৌশলী। গণিতের নানা বিষয় নিয়ে বই লিখে, ভিডিও বানিয়ে চমক দেখান তিনি। আর শখে গান করেন। সে সব গানের কথা, সুর—সবই তাঁর নিজের। সম্প্রতি চমক হাসানের দুটি গান ব্যবহৃত হয়েছে টালিউডের ‘বাবা, বেবি, ও...’ সিনেমায়। চমকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মীর রাকিব হাসান
টালিউডের ‘বাবা বেবি ও…’ সিনেমায় আপনার দুই গান প্রশংসা পাচ্ছে। কেমন লাগছে?
চমক হাসান: কখনোই ভাবিনি আমার লেখা গান চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হবে। সেটা অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। অনেক মানুষ সেটা ভালোবাসবে। অবশ্যই এটা অনেক বড় পাওয়া।
‘এই মায়াবী চাঁদের রাতে’, ‘বাবা হওয়া এত সোজা নয়’—গানগুলো তৈরির পেছনের গল্পটা কী?
চমক হাসান: আমি ও আমার স্ত্রী ফিরোজা বহ্নি খাবার টেবিলে বসে ‘এই মায়াবী চাঁদের রাতে’ গানটি তৈরি করেছিলাম। গাইতে গাইতে অনেক সময় গানের কথা ভুলে যাই। সেখানে ঠেকনা দেওয়ার মতো হয়তো একটা লাইন গাইলাম। তার পর আর গানের কথা মনে নেই। এই যে ছোট বাক্য, এটাকেও চাইলে ভাবসম্প্রসারণের মতো করা যায়। সেটা করতে গিয়েই গানটি তৈরি হয়। সুর করতে গিয়ে সবসময়ই ভাবি, গান হতে হবে খুব সহজ, প্রাণের কাছাকাছি। আর ‘বাবা হওয়া এত সোজা নয়’ সিনেমার পরিস্থিতি বিবেচনায় তৈরি হওয়া গান। গানটি আগে তৈরি হয়েছিল, পরে সেটি সিনেমায় ব্যবহৃত হয়েছে।
সিনেমার নায়ক সারোগেসির মাধ্যমে বাবা হন, পরবর্তী সময়ে বুঝতে পারেন বাবা হওয়াটা বেশ কঠিন। নিজের সন্তানের দিকে তাকানো যেমন আনন্দের, তাকে বড় করে তোলার সংগ্রামটিও সহজ নয়। দুটো মিলে জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে গানটি তৈরি হয়েছে। তার কিছুদিন আগেই আমি দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হয়েছি। তবে আমার বড় মেয়ের যখন জন্ম হয়, প্রথম বাবা হওয়ার অবস্থাটা যা ছিল—একটা স্বর্গ পেলাম, সেই স্বর্গেও অনেক জ্বালা আছে। সেটাই গানের অনুপ্রেরণা।
এতদিন নিজের ইচ্ছেমতো গান বেঁধেছেন। সিনেমার জন্য এই প্রথম গাইলেন। কেমন চ্যালেঞ্জ ছিল?
চমক হাসান: খুবই চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ। যখন আপনাকে বেঁধে দেওয়া হবে, এই জিনিসগুলো আমি চাই, তখন সেটার মধ্যে গান তৈরি করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমার কথায় হয়তো উপমার ভারিক্কি অতটা নেই, আমি খুবই সরল কথায় গান লিখি। আমার সুরটাও ক্লাসিক্যাল ইন্সপায়ারড এমন কিছু না। আমার কথা ও সুর যেহেতু খুব সহজ, সে ক্ষেত্রে আমার শক্তির জায়গা যেটা আমি মনে করি, যেকোনো বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারি। সেখানে যখন বিষয়টা বেঁধে দেওয়া হয়, তখন ব্যাপারটি তো একটু কঠিনই।
দুই দেশের গানে কেমন পার্থক্য দেখলেন? কলকাতার সিনেমায় গান বানাতে গিয়ে কি কোনোভাবে আপনার স্বকীয়তা ক্ষুণ্ণ হয়েছে?
চমক হাসান: দুই দেশের গান—ব্যাপারটি এভাবে ভাবি না। সবই বাংলা গান। আমি গানে আমার অনুভূতি প্রকাশ করেছি। তাঁদের ফরমেটের সঙ্গে গিয়েছে বলে তাঁরা গ্রহণ করেছে। গানে এমন কোনো ভাষা ব্যবহার করিনি, যেটা বিশেষ কোনো এলাকার হতে পারে। তাতে আমার স্বকীয়তা ক্ষুণ্ন হয়নি।
নির্মাতার সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে হলো? গান তৈরীর আগের গল্পটা শুনতে চাই…
চমক হাসান: আমি আর আমার স্ত্রী বহ্নি মিলে ২০২০-এর জানুয়ারিতে ‘এই মায়াবী চাঁদের রাতে’ গানটি বেঁধেছিলাম খাবার টেবিলে বসে। সেই গানটা সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করলে খুব জনপ্রিয়তা পায়। এর পর আরেকটি লাইভ অনুষ্ঠানে গানটি গাওয়ার সময় আমাদের কন্যা বর্ণমালাও যোগ দেয় সেখানে। ওটাও বেশ ভাইরাল হয়, সেই গানটি দেখেন ‘বাবা বেবি ও..’ ছবির লেখিকা জিনিয়া সেন। তাঁর অনুরোধে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন লস অ্যাঞ্জেলেসে থাকা তাঁর এক বন্ধু বাবলি চক্রবর্তীর মাধ্যমে। আমি লস অ্যাঞ্জেলসের কাছাকাছি সান্তা ক্লারিটা শহরে থাকি। প্রযোজক ও পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যয়ের বন্ধু বাবলি চক্রবর্তী এখানে আছেন। শিবপ্রসাদ দা সরাসরি আমাকে ফোন করেন। তাঁর সিনেমা আগে আমি দেখেছি। চমৎকার নির্মাতা। তিনি আমাকে খুব সম্মান দিয়ে আন্তরিকভাবে কথা বলেছেন। এ কারণে গানটি করতে রাজি হয়ে যাই। তিনি তখন জানান, সিনেমাটি প্রযোজনা করছেন তিনি। অরিত্র মুখার্জি পরিচালনা করবেন; পরিচালক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
নিশ্চয়ই এখন কলকাতা থেকে আরও কাজের অফার আসছে? নতুন কোনো খবর পেতে পারি?
চমক হাসান: এখন পর্যন্ত নতুন কোনো কাজ চূড়ান্ত হয়নি। কিছু অফার পেয়েছি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান উইন্ডোজের সঙ্গেই আরও দুটি সিনেমায় কাজ করার কথা। সেখানে কেমন, কী গান হবে—সেগুলো এখনো চিন্তাভাবনার পর্যায়ে আছে।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া আপনার গান মাত্র একটি। এত অল্প কেন?
চমক হাসান: বাংলা ঢোল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘আসমানে উইঠাছে চান’ করেছিলাম। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশ হওয়া এটাই আমার একমাত্র গান। পেশাগতভাবে গানকে বেছে নেওয়ার চিন্তা কখনো করিনি। কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি। যে কারণে তেমন অফার পাইনি বলে আমার ধারণা।
বাংলাদেশ থেকেও যদি কেউ গান তৈরির প্রস্তাব দেয়?
চমক হাসান: অবশ্যই সেটা দারুণ ব্যাপার হবে। আমি খুব আগ্রহ নিয়েই কাজটি করব।
স্ত্রী ফিরোজা বহ্নি গানের কথা লিখছেন। আপনার সঙ্গে তাঁকে গাইতে দেখা যায়। দুই সন্তান বর্ণমালা ও পরশমণিকে নিয়ে আপনারা এখন চারজনের ব্যান্ড বলা যায়…
চমক হাসান: তা বলতে পারেন। আমাদের চারজনকে নিয়ে এখন পারিবারিক ব্যান্ড হয়ে গেছে। ‘পরিপাটি’ ব্যান্ড নামও দিয়ে দিতে পারি। বহ্নির সঙ্গে যখন আমার পরিচয়, তখন আমি বুয়েটে পড়তাম। একই বর্ষে আমরা পড়ালেখা করেছি। আমি ছিলাম তড়িৎকৌশল বিভাগে। ও ছিলো স্থাপত্য বিভাগে। একটা গানের অনুষ্ঠানেই প্রথম দুজনের পরিচয়। পরিচয় হওয়ার পর লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইটের একটা ব্যাপার। আমিই প্রথমে প্রেমে পড়ে যাই। পরিচয়ের সাড়ে চার বছর পর সাহস করে আমার মনের কথাটা বলতে পেরেছিলাম। তত দিনে ওর সঙ্গে আমার একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে আমাদের একটা সুন্দর পথচলা সেখান থেকে শুরু হয়েছিল। এই যে চার বছর অপেক্ষা করছিলাম ওকে বলার, আমার সেই সময়টার কথা খুব মনে পড়ে। ওই সময়টা খুব কঠিন একটা সময় ছিল। সেই অনুভূতিটা এখনো আমি লালন করি। আমাদের প্রেমটা এখনো খুব প্রাণ থেকে উপভোগ করি। দুজন মিলে গান বাঁধার এটাই আসলে মূল অনুঘটক।
গণিতকে যেমন সহজভাবে উপস্থাপন করেন, তেমনি আপনার গানের কথায়ও আছে সারল্য। গান, গণিত কিংবা সহজ বাক্য—এগুলোর ব্যাখ্যা কী আপনার কাছে?
চমক হাসান: সবকিছুই আমার জীবনের অংশ মনে হয়। আলাদা কিছু নয়। আমাদের সমাজে সায়েন্স, আর্টস এভাবে বিভক্ত বা বিভাজন করে দেওয়ার একটা ব্যাপার আছে। এগুলো আমাদের মনগড়া। গান কিংবা গণিত সবকিছুই মানুষের একেকটি অংশ। এগুলোর ভিত্তিটা কোন জায়গায়? আমার মনে হয়, কল্পনা থেকে সৃষ্টি। আমাদের কল্পনার সৌন্দর্যের ভেতর দিয়েই বেড়ে ওঠা। আমি যেভাবে জীবনকে সহজভাবে দেখি, উপভোগ করি, সেটারই প্রতিফলন ঘটে এই গান কিংবা গণিতে।
গান ও গণিতের ভিডিও বানিয়ে সর্বমহলে পরিচিত আপনি। লেখাও দারুণ জনপ্রিয়। নতুন ভিডিও ও লেখালেখির খবর জানতে চাচ্ছি…
চমক হাসান: নতুন একটা গান তৈরির পরিকল্পনা করছি। একুশে বইমেলাতে ‘নিবিড় গণিত’ নামে একটা বই প্রকাশিত হলো। বইটি গণিতের বিভিন্ন বিষয় ভিতর থেকে উপস্থাপন করার একটা চিন্তা থেকে। আমি ও বহ্ণি মিলে একটা বই লিখেছি ‘টুটুন জানতে চায় মেঘের কথা’। এটা একটা বাচ্চাদের বই। টুটুন নামে কৌতূহলী এক বাচ্চা আছে, সে অনেক কিছু জানতে চায়। তার প্রশ্নের উত্তরগুলোকে তার মতো করে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করা হয়েছে এই বইয়ে। এটা সিরিজ করার পরিকল্পনা আছে।
আপনার শৈশব কোথায় কেটেছে?
চমক হাসান: আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কুষ্টিয়াতে। এইচএসসি পর্যন্ত সেখানেই পড়াশোনা করেছি। কুষ্টিয়ার মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলজীবন শুরু, যেটা আমার জীবনের সবচেয়ে অসাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।
গান গাওয়ার শুরু কি তখন থেকেই?
চমক হাসান: ওখানে নিয়মিত গানের ক্লাস হতো। ওখানেই প্রথম গান মুখস্থ করা। প্রথম যে গানটি মুখস্থ করেছিলাম সেটা ছিল রবীন্দ্রসংগীত ‘আলো আমার আলো’।
আমাদের পরিবারে কিছুটা রক্ষণশীলতা ছিল। পরিবার থেকে বলা হতো, গানে যেন সময় না দিই; পড়ালেখাটাই মনোযোগ দিয়ে করি। ফলে আমার আসলে কখনো গান শেখা হয়ে ওঠেনি। গান যতটুকু জানা বা শেখা, সেটা হয়েছে শুনতে শুনতে, গাইতে গাইতে। একটা সময় গান নিয়ে অনেক পড়াশোনা করেছি। বোঝার চেষ্টা করেছি, কীভাবে একটা গান তৈরি হয়। এই চিন্তাভাবনা অনেকদিন নিজের মতো করে করেছি। শেখা যদি বলি, এভাবেই একটু একটু করে নিজের মতো করে।
যখন বুয়েটে প্রথম ভর্তি হলাম, তখন থেকে গান গাওয়ার শুরু বলা যায়। এর আগে কখনো স্টেজে গান করার সুযোগ হয়নি। ক্লাস সেভেন থেকেই টুকটাক নিজের মতো গান করতাম। ওই সময় থেকেই গান লিখি। সেগুলো যে খুব ভালো মানের হতো, তা নয়। কিন্তু লিখতে ভালো লাগত। গানের প্রতি এমন ভালোবাসা তৈরির পেছনে মনে হয় কুষ্টিয়া শহরের একটা অবদান আছে।
শহরটা বেশ সংস্কৃতিমনা। আমার বাড়ির খুব কাছেই লালনের আখড়া, রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ি। সেখানে নিয়মিত যাওয়া হতো। আমার জীবন পরিবর্তনকারী এক ঘটনা আছে, যেটা আমি প্রায়ই বলি। একটা প্রতিযোগিতায় বই পুরস্কার পেয়েছিলাম। সেটা ছিল দর্শনের ওপর একটা বই। সেখানে বাউল দর্শন ছিল, লালন ফকিরের একটা গানের কথা ছিল ‘মিলন হবে কতদিনে’। এটা আমার খুব প্রিয় একটা গান। ওখানে লেখা আছে—এই গানে জীবাত্মা ও অন্তরাত্মার কথা বলা হয়েছে। এই ছোট্ট একটা বাক্য আমার মনের মধ্যে ঝড় বইয়ে দিয়েছে। আমি তখন ক্লাস এইটে। তখন প্রথম বুঝতে পারলাম, একটা সহজ কথা যেটা এতদিন বুঝেছি একটা প্রেমের গান, যেটা দুজনের মিলন হবে, প্রথমবারের মতো বুঝলাম, একটা গানের কথার ভিতরেও অনেক ধরনের কথা থাকে। সহজ একটা কথা। খুব সুন্দর একটা সুর। তার অনেক গভীরেও যাওয়া যায়। ওটা থেকে গান লেখার একটা বড় অনুপ্রেরণা এসেছিল।
বুয়েটে আমি খুব সুন্দর একটা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল পেয়েছিলাম। সেখানে ‘মুর্ছনা’ নামে একটা সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল। ওখানে গিয়ে প্রথম গান গাইবার সুযোগ হলো। এ ছাড়া ওখানে ইলেকট্রিক্যাল ডে নামে একটা একটা প্রোগ্রাম হতো। ওখানে গান করেছি। এই জায়গাগুলোতে গাইতে গাইতে নিজের ভেতর একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হলো—আমিও হয়তো গাইতে পারব। মানুষ আমার গানও পছন্দ করতে পারে। এই আত্মবিশ্বাসটা খুব জরুরি।
বুয়েট শেষ করার পর যখন পিএইচডি করার জন্য আমেরিকায় আসি, তখন নিজের লেখা মৌলিক গান ‘সাড়ে আট হাজার মাইল দূরে’ করেছিলাম। যেটা এখনো আমার সবচেয়ে প্রিয় একটা গান।
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?
চমক হাসান: বর্তমান ব্যস্ততা মূলত পরিবারকে নিয়েই। পরিবারের সঙ্গে যতটা সময় পাই, সেটাকে মমতায় লালন করি। একসাথে স্মৃতি গড়ার খেলা খেলি। সেই খেলার অংশ আমাদের গান, ভ্রমণ, সংসার—সব। আমাদের দুই মেয়ে ৫ বছরের বর্ণমালা, আর ৪ মাস বয়সী পরশমণি। তা ছাড়া আমি যেখানে কাজ করছি (পেশাগতভাবে আমি ইঞ্জিনিয়ার, বোস্টন সায়েন্টিফিক করপোরেশন নামে একটা মেডিকেল ডিভাইস ম্যানুফেকচারার কম্পানিতে কর্মরত), সেখানেও কাজের যথেষ্ট চাপ আছে। এর পাশাপাশি ছুটির দিনগুলোতে গান কিংবা গণিতের ভিডিও করার পরিকল্পনা করি। কখনো কখনো বানাতে পারি আরকি।
সত্যি বলতে, এখানে গান চর্চা করা খুব একটা হয়ে ওঠে না। মাথার ভেতরেই প্রতিনিয়ত গান ভাসতে থাকে। সেই সুরের যে আবেগ, সেটা একটা অস্থিরতা তৈরি করে। সেখান থেকেই একটু একটু করে আমার গান তৈরি হয়।
চমক হাসান পেশায় প্রকৌশলী। গণিতের নানা বিষয় নিয়ে বই লিখে, ভিডিও বানিয়ে চমক দেখান তিনি। আর শখে গান করেন। সে সব গানের কথা, সুর—সবই তাঁর নিজের। সম্প্রতি চমক হাসানের দুটি গান ব্যবহৃত হয়েছে টালিউডের ‘বাবা, বেবি, ও...’ সিনেমায়। চমকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মীর রাকিব হাসান
টালিউডের ‘বাবা বেবি ও…’ সিনেমায় আপনার দুই গান প্রশংসা পাচ্ছে। কেমন লাগছে?
চমক হাসান: কখনোই ভাবিনি আমার লেখা গান চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হবে। সেটা অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। অনেক মানুষ সেটা ভালোবাসবে। অবশ্যই এটা অনেক বড় পাওয়া।
‘এই মায়াবী চাঁদের রাতে’, ‘বাবা হওয়া এত সোজা নয়’—গানগুলো তৈরির পেছনের গল্পটা কী?
চমক হাসান: আমি ও আমার স্ত্রী ফিরোজা বহ্নি খাবার টেবিলে বসে ‘এই মায়াবী চাঁদের রাতে’ গানটি তৈরি করেছিলাম। গাইতে গাইতে অনেক সময় গানের কথা ভুলে যাই। সেখানে ঠেকনা দেওয়ার মতো হয়তো একটা লাইন গাইলাম। তার পর আর গানের কথা মনে নেই। এই যে ছোট বাক্য, এটাকেও চাইলে ভাবসম্প্রসারণের মতো করা যায়। সেটা করতে গিয়েই গানটি তৈরি হয়। সুর করতে গিয়ে সবসময়ই ভাবি, গান হতে হবে খুব সহজ, প্রাণের কাছাকাছি। আর ‘বাবা হওয়া এত সোজা নয়’ সিনেমার পরিস্থিতি বিবেচনায় তৈরি হওয়া গান। গানটি আগে তৈরি হয়েছিল, পরে সেটি সিনেমায় ব্যবহৃত হয়েছে।
সিনেমার নায়ক সারোগেসির মাধ্যমে বাবা হন, পরবর্তী সময়ে বুঝতে পারেন বাবা হওয়াটা বেশ কঠিন। নিজের সন্তানের দিকে তাকানো যেমন আনন্দের, তাকে বড় করে তোলার সংগ্রামটিও সহজ নয়। দুটো মিলে জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে গানটি তৈরি হয়েছে। তার কিছুদিন আগেই আমি দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হয়েছি। তবে আমার বড় মেয়ের যখন জন্ম হয়, প্রথম বাবা হওয়ার অবস্থাটা যা ছিল—একটা স্বর্গ পেলাম, সেই স্বর্গেও অনেক জ্বালা আছে। সেটাই গানের অনুপ্রেরণা।
এতদিন নিজের ইচ্ছেমতো গান বেঁধেছেন। সিনেমার জন্য এই প্রথম গাইলেন। কেমন চ্যালেঞ্জ ছিল?
চমক হাসান: খুবই চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ। যখন আপনাকে বেঁধে দেওয়া হবে, এই জিনিসগুলো আমি চাই, তখন সেটার মধ্যে গান তৈরি করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমার কথায় হয়তো উপমার ভারিক্কি অতটা নেই, আমি খুবই সরল কথায় গান লিখি। আমার সুরটাও ক্লাসিক্যাল ইন্সপায়ারড এমন কিছু না। আমার কথা ও সুর যেহেতু খুব সহজ, সে ক্ষেত্রে আমার শক্তির জায়গা যেটা আমি মনে করি, যেকোনো বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারি। সেখানে যখন বিষয়টা বেঁধে দেওয়া হয়, তখন ব্যাপারটি তো একটু কঠিনই।
দুই দেশের গানে কেমন পার্থক্য দেখলেন? কলকাতার সিনেমায় গান বানাতে গিয়ে কি কোনোভাবে আপনার স্বকীয়তা ক্ষুণ্ণ হয়েছে?
চমক হাসান: দুই দেশের গান—ব্যাপারটি এভাবে ভাবি না। সবই বাংলা গান। আমি গানে আমার অনুভূতি প্রকাশ করেছি। তাঁদের ফরমেটের সঙ্গে গিয়েছে বলে তাঁরা গ্রহণ করেছে। গানে এমন কোনো ভাষা ব্যবহার করিনি, যেটা বিশেষ কোনো এলাকার হতে পারে। তাতে আমার স্বকীয়তা ক্ষুণ্ন হয়নি।
নির্মাতার সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে হলো? গান তৈরীর আগের গল্পটা শুনতে চাই…
চমক হাসান: আমি আর আমার স্ত্রী বহ্নি মিলে ২০২০-এর জানুয়ারিতে ‘এই মায়াবী চাঁদের রাতে’ গানটি বেঁধেছিলাম খাবার টেবিলে বসে। সেই গানটা সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করলে খুব জনপ্রিয়তা পায়। এর পর আরেকটি লাইভ অনুষ্ঠানে গানটি গাওয়ার সময় আমাদের কন্যা বর্ণমালাও যোগ দেয় সেখানে। ওটাও বেশ ভাইরাল হয়, সেই গানটি দেখেন ‘বাবা বেবি ও..’ ছবির লেখিকা জিনিয়া সেন। তাঁর অনুরোধে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন লস অ্যাঞ্জেলেসে থাকা তাঁর এক বন্ধু বাবলি চক্রবর্তীর মাধ্যমে। আমি লস অ্যাঞ্জেলসের কাছাকাছি সান্তা ক্লারিটা শহরে থাকি। প্রযোজক ও পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যয়ের বন্ধু বাবলি চক্রবর্তী এখানে আছেন। শিবপ্রসাদ দা সরাসরি আমাকে ফোন করেন। তাঁর সিনেমা আগে আমি দেখেছি। চমৎকার নির্মাতা। তিনি আমাকে খুব সম্মান দিয়ে আন্তরিকভাবে কথা বলেছেন। এ কারণে গানটি করতে রাজি হয়ে যাই। তিনি তখন জানান, সিনেমাটি প্রযোজনা করছেন তিনি। অরিত্র মুখার্জি পরিচালনা করবেন; পরিচালক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
নিশ্চয়ই এখন কলকাতা থেকে আরও কাজের অফার আসছে? নতুন কোনো খবর পেতে পারি?
চমক হাসান: এখন পর্যন্ত নতুন কোনো কাজ চূড়ান্ত হয়নি। কিছু অফার পেয়েছি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান উইন্ডোজের সঙ্গেই আরও দুটি সিনেমায় কাজ করার কথা। সেখানে কেমন, কী গান হবে—সেগুলো এখনো চিন্তাভাবনার পর্যায়ে আছে।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া আপনার গান মাত্র একটি। এত অল্প কেন?
চমক হাসান: বাংলা ঢোল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘আসমানে উইঠাছে চান’ করেছিলাম। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশ হওয়া এটাই আমার একমাত্র গান। পেশাগতভাবে গানকে বেছে নেওয়ার চিন্তা কখনো করিনি। কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি। যে কারণে তেমন অফার পাইনি বলে আমার ধারণা।
বাংলাদেশ থেকেও যদি কেউ গান তৈরির প্রস্তাব দেয়?
চমক হাসান: অবশ্যই সেটা দারুণ ব্যাপার হবে। আমি খুব আগ্রহ নিয়েই কাজটি করব।
স্ত্রী ফিরোজা বহ্নি গানের কথা লিখছেন। আপনার সঙ্গে তাঁকে গাইতে দেখা যায়। দুই সন্তান বর্ণমালা ও পরশমণিকে নিয়ে আপনারা এখন চারজনের ব্যান্ড বলা যায়…
চমক হাসান: তা বলতে পারেন। আমাদের চারজনকে নিয়ে এখন পারিবারিক ব্যান্ড হয়ে গেছে। ‘পরিপাটি’ ব্যান্ড নামও দিয়ে দিতে পারি। বহ্নির সঙ্গে যখন আমার পরিচয়, তখন আমি বুয়েটে পড়তাম। একই বর্ষে আমরা পড়ালেখা করেছি। আমি ছিলাম তড়িৎকৌশল বিভাগে। ও ছিলো স্থাপত্য বিভাগে। একটা গানের অনুষ্ঠানেই প্রথম দুজনের পরিচয়। পরিচয় হওয়ার পর লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইটের একটা ব্যাপার। আমিই প্রথমে প্রেমে পড়ে যাই। পরিচয়ের সাড়ে চার বছর পর সাহস করে আমার মনের কথাটা বলতে পেরেছিলাম। তত দিনে ওর সঙ্গে আমার একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে আমাদের একটা সুন্দর পথচলা সেখান থেকে শুরু হয়েছিল। এই যে চার বছর অপেক্ষা করছিলাম ওকে বলার, আমার সেই সময়টার কথা খুব মনে পড়ে। ওই সময়টা খুব কঠিন একটা সময় ছিল। সেই অনুভূতিটা এখনো আমি লালন করি। আমাদের প্রেমটা এখনো খুব প্রাণ থেকে উপভোগ করি। দুজন মিলে গান বাঁধার এটাই আসলে মূল অনুঘটক।
গণিতকে যেমন সহজভাবে উপস্থাপন করেন, তেমনি আপনার গানের কথায়ও আছে সারল্য। গান, গণিত কিংবা সহজ বাক্য—এগুলোর ব্যাখ্যা কী আপনার কাছে?
চমক হাসান: সবকিছুই আমার জীবনের অংশ মনে হয়। আলাদা কিছু নয়। আমাদের সমাজে সায়েন্স, আর্টস এভাবে বিভক্ত বা বিভাজন করে দেওয়ার একটা ব্যাপার আছে। এগুলো আমাদের মনগড়া। গান কিংবা গণিত সবকিছুই মানুষের একেকটি অংশ। এগুলোর ভিত্তিটা কোন জায়গায়? আমার মনে হয়, কল্পনা থেকে সৃষ্টি। আমাদের কল্পনার সৌন্দর্যের ভেতর দিয়েই বেড়ে ওঠা। আমি যেভাবে জীবনকে সহজভাবে দেখি, উপভোগ করি, সেটারই প্রতিফলন ঘটে এই গান কিংবা গণিতে।
গান ও গণিতের ভিডিও বানিয়ে সর্বমহলে পরিচিত আপনি। লেখাও দারুণ জনপ্রিয়। নতুন ভিডিও ও লেখালেখির খবর জানতে চাচ্ছি…
চমক হাসান: নতুন একটা গান তৈরির পরিকল্পনা করছি। একুশে বইমেলাতে ‘নিবিড় গণিত’ নামে একটা বই প্রকাশিত হলো। বইটি গণিতের বিভিন্ন বিষয় ভিতর থেকে উপস্থাপন করার একটা চিন্তা থেকে। আমি ও বহ্ণি মিলে একটা বই লিখেছি ‘টুটুন জানতে চায় মেঘের কথা’। এটা একটা বাচ্চাদের বই। টুটুন নামে কৌতূহলী এক বাচ্চা আছে, সে অনেক কিছু জানতে চায়। তার প্রশ্নের উত্তরগুলোকে তার মতো করে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করা হয়েছে এই বইয়ে। এটা সিরিজ করার পরিকল্পনা আছে।
আপনার শৈশব কোথায় কেটেছে?
চমক হাসান: আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কুষ্টিয়াতে। এইচএসসি পর্যন্ত সেখানেই পড়াশোনা করেছি। কুষ্টিয়ার মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলজীবন শুরু, যেটা আমার জীবনের সবচেয়ে অসাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।
গান গাওয়ার শুরু কি তখন থেকেই?
চমক হাসান: ওখানে নিয়মিত গানের ক্লাস হতো। ওখানেই প্রথম গান মুখস্থ করা। প্রথম যে গানটি মুখস্থ করেছিলাম সেটা ছিল রবীন্দ্রসংগীত ‘আলো আমার আলো’।
আমাদের পরিবারে কিছুটা রক্ষণশীলতা ছিল। পরিবার থেকে বলা হতো, গানে যেন সময় না দিই; পড়ালেখাটাই মনোযোগ দিয়ে করি। ফলে আমার আসলে কখনো গান শেখা হয়ে ওঠেনি। গান যতটুকু জানা বা শেখা, সেটা হয়েছে শুনতে শুনতে, গাইতে গাইতে। একটা সময় গান নিয়ে অনেক পড়াশোনা করেছি। বোঝার চেষ্টা করেছি, কীভাবে একটা গান তৈরি হয়। এই চিন্তাভাবনা অনেকদিন নিজের মতো করে করেছি। শেখা যদি বলি, এভাবেই একটু একটু করে নিজের মতো করে।
যখন বুয়েটে প্রথম ভর্তি হলাম, তখন থেকে গান গাওয়ার শুরু বলা যায়। এর আগে কখনো স্টেজে গান করার সুযোগ হয়নি। ক্লাস সেভেন থেকেই টুকটাক নিজের মতো গান করতাম। ওই সময় থেকেই গান লিখি। সেগুলো যে খুব ভালো মানের হতো, তা নয়। কিন্তু লিখতে ভালো লাগত। গানের প্রতি এমন ভালোবাসা তৈরির পেছনে মনে হয় কুষ্টিয়া শহরের একটা অবদান আছে।
শহরটা বেশ সংস্কৃতিমনা। আমার বাড়ির খুব কাছেই লালনের আখড়া, রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ি। সেখানে নিয়মিত যাওয়া হতো। আমার জীবন পরিবর্তনকারী এক ঘটনা আছে, যেটা আমি প্রায়ই বলি। একটা প্রতিযোগিতায় বই পুরস্কার পেয়েছিলাম। সেটা ছিল দর্শনের ওপর একটা বই। সেখানে বাউল দর্শন ছিল, লালন ফকিরের একটা গানের কথা ছিল ‘মিলন হবে কতদিনে’। এটা আমার খুব প্রিয় একটা গান। ওখানে লেখা আছে—এই গানে জীবাত্মা ও অন্তরাত্মার কথা বলা হয়েছে। এই ছোট্ট একটা বাক্য আমার মনের মধ্যে ঝড় বইয়ে দিয়েছে। আমি তখন ক্লাস এইটে। তখন প্রথম বুঝতে পারলাম, একটা সহজ কথা যেটা এতদিন বুঝেছি একটা প্রেমের গান, যেটা দুজনের মিলন হবে, প্রথমবারের মতো বুঝলাম, একটা গানের কথার ভিতরেও অনেক ধরনের কথা থাকে। সহজ একটা কথা। খুব সুন্দর একটা সুর। তার অনেক গভীরেও যাওয়া যায়। ওটা থেকে গান লেখার একটা বড় অনুপ্রেরণা এসেছিল।
বুয়েটে আমি খুব সুন্দর একটা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল পেয়েছিলাম। সেখানে ‘মুর্ছনা’ নামে একটা সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল। ওখানে গিয়ে প্রথম গান গাইবার সুযোগ হলো। এ ছাড়া ওখানে ইলেকট্রিক্যাল ডে নামে একটা একটা প্রোগ্রাম হতো। ওখানে গান করেছি। এই জায়গাগুলোতে গাইতে গাইতে নিজের ভেতর একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হলো—আমিও হয়তো গাইতে পারব। মানুষ আমার গানও পছন্দ করতে পারে। এই আত্মবিশ্বাসটা খুব জরুরি।
বুয়েট শেষ করার পর যখন পিএইচডি করার জন্য আমেরিকায় আসি, তখন নিজের লেখা মৌলিক গান ‘সাড়ে আট হাজার মাইল দূরে’ করেছিলাম। যেটা এখনো আমার সবচেয়ে প্রিয় একটা গান।
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?
চমক হাসান: বর্তমান ব্যস্ততা মূলত পরিবারকে নিয়েই। পরিবারের সঙ্গে যতটা সময় পাই, সেটাকে মমতায় লালন করি। একসাথে স্মৃতি গড়ার খেলা খেলি। সেই খেলার অংশ আমাদের গান, ভ্রমণ, সংসার—সব। আমাদের দুই মেয়ে ৫ বছরের বর্ণমালা, আর ৪ মাস বয়সী পরশমণি। তা ছাড়া আমি যেখানে কাজ করছি (পেশাগতভাবে আমি ইঞ্জিনিয়ার, বোস্টন সায়েন্টিফিক করপোরেশন নামে একটা মেডিকেল ডিভাইস ম্যানুফেকচারার কম্পানিতে কর্মরত), সেখানেও কাজের যথেষ্ট চাপ আছে। এর পাশাপাশি ছুটির দিনগুলোতে গান কিংবা গণিতের ভিডিও করার পরিকল্পনা করি। কখনো কখনো বানাতে পারি আরকি।
সত্যি বলতে, এখানে গান চর্চা করা খুব একটা হয়ে ওঠে না। মাথার ভেতরেই প্রতিনিয়ত গান ভাসতে থাকে। সেই সুরের যে আবেগ, সেটা একটা অস্থিরতা তৈরি করে। সেখান থেকেই একটু একটু করে আমার গান তৈরি হয়।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৪ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৮ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৮ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৮ দিন আগে