ভুয়া ও মৃত জেলেদের নামে চাল আত্মসাৎ চেয়ারম্যানের

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১৩: ৫৬

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে জেলেদের ভিজিএফের চাল আত্মসাৎ করেছেন সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান মামুন খান। গত তিন অর্থবছরে ৭৮ জন ভুয়া ও ১৯ মৃত জেলের নামে তিনি আনুমানিক ৭৭ টন ২০৬ কেজি চাল আত্মসাৎ করেন। জেলা প্রশাসনের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এর সত্যতা মিলেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান।

এদিকে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ২৮ দিনেও ইউপি চেয়ারম্যান মামুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগকারী জেলেরা ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গাবালী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মামুনের বিরুদ্ধে জেলেদের মানবিক সহায়তা ভিজিএফের চাল ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫১ জন জেলের নামে দুবার দেওয়া এবং ১২ মৃত ব্যক্তির নামে চাল উত্তোলন নিয়ে ওই ইউনিয়নের ৪২ জন জেলে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। গত ২৭ এপ্রিল তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ৭৮ জন জেলের ভুয়া তথ্য এবং ১৯ জন মৃত জেলের নাম পায়, যারা ২০১৯-২০, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে টিপ সই দিয়ে চাল উত্তোলন করে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯ জন মৃত জেলে এবং ৭৮ জন ভুয়া তথ্য দিয়ে তিন অর্থবছরে এসব জেলের চাল আত্মসাৎ করেন ইউপি চেয়ারম্যান। আর এ তদন্ত প্রতিবেদন ১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের কমিটি ভোটার তালিকা সংগ্রহ করে ভিজিএফ তালিকার সঙ্গে যাচাই-বাছাই এবং পর্যালোচনা করে দেখতে পায়, ১৯ জন মৃত ব্যক্তির নাম জেলেদের ভিজিএফের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ভিজিএফের তালিকায় থাকা ৭৮ জনের কোনো নাম-পরিচয় কিংবা অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।’

এ বিষয়ে ইউএনও মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘দুদকের দায়ের করা একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরীণ একটি কমিটির মাধ্যমে তদন্ত সম্পন্ন করিয়েছি। তদন্তে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।’

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জেলা প্রশাসক মোহম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘রাঙ্গাবালী সদর ইউপির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত