মাসুদ উর রহমান
শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি এবং প্রণীত শিক্ষাক্রম নিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে হতে থাকা আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমিও বেশ কয়েকটি নিবন্ধ আজকের পত্রিকায় লিখেছি। অনেকেই লিখছে, লিখবে। গঠনমূলক এই পর্যালোচনায় দৃষ্টি পড়বে শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের এবং হয়তো এভাবেই ত্রুটি-বিচ্যুতি যতটা সম্ভব কমিয়ে এনে দাঁড়িয়ে যাবে নতুন শিক্ষাক্রম।
শুরুতেই শিক্ষাক্রম বিষয়টি একটু পরিষ্কার করি। শিক্ষাক্রম হচ্ছে একটি পদ্ধতি, যেটি অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার দিকে আগ্রহী ও মনোযোগী করে তোলা যায়। সে লক্ষ্যেই শিক্ষাব্যবস্থার সকল পর্যায়ে দায়িত্বশীল, স্বপ্রণোদিত, দক্ষ ও সংবেদনশীল, জবাবদিহিমূলক, একীভূত ও অংশগ্রহণমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নতুন শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান, যোগ্যতা, মূল্যবোধ ও সক্ষমতা বাড়াতেই দুই বছর আগে জাতীয় শিক্ষাক্রমের মূল ভিত্তিটি তৈরি করা হয়েছে। আর সেই ভিত্তিকে টেকসই রূপ দিতে যে শিক্ষাপদ্ধতিটিকে শ্রেণিকক্ষে অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে, সেটি পেডাগোজি; অর্থাৎ কোনো একটি শিক্ষাকার্যক্রম কী উদ্দেশ্যে পরিচালিত হবে, কী বিষয়বস্তুর মাধ্যমে উদ্দেশ্য অর্জিত হবে; কখন, কীভাবে, কার সহায়তায় এবং কী উপকরণের সাহায্যে তা বাস্তবায়িত হবে, শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে—এসবের যাবতীয় পরিকল্পনার যে শিক্ষাদান পদ্ধতি, সেটিই আসলে পেডাগোজি।
আরও স্পষ্ট করে বললে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ৪০-৫০ মিনিটের একটি লেকচার দিয়ে থাকেন, সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী থাকে নিষ্প্রভ-নিষ্ক্রিয় শ্রোতা। এই নিষ্ক্রিয় শ্রোতাদের ছাত্র-শিক্ষকের পারস্পরিক পর্যালোচনার মাধ্যমে সক্রিয় করে তোলার অন্যতম শিক্ষাদান পদ্ধতিটিই হচ্ছে পেডাগোজি। যার একটি সংক্ষিপ্ত অথচ চমকপ্রদ রূপ হচ্ছে—Lo-Lo-La-La! এখানে,
Lo: Learning objectives
Lo: Learning outcomes
La: Learning activities
La: Learning assessment.
অনুসন্ধান, ফলাফল, কার্যক্রম এবং মূল্যায়নের এই চারটি ধারা একজন শিক্ষার্থীকে আরও নেতৃত্ব এবং সহযোগিতামূলক মনোভাব প্রদান করে, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-৪ (এসডিজি-৪) অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আলোচ্য বিষয়ের ওপর সম্প্রতি আমি ১৪ দিনের একটি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে এসেছি, যার শিরোনাম ‘কন্টিনিউয়াস প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (সিডিপি) অন পেডাগোজি ফর কলেজ টিচারস’। এটি বাস্তবায়ন করেছে কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি)। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় পরিচালিত এই প্রশিক্ষণের সফল বাস্তবায়নে, শিক্ষার মানের যে ক্রমাবনতি আমরা লক্ষ করছি তা থেকে উত্তরণ ঘটাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তবে চ্যালেঞ্জ অনেক:
১. প্রধান চ্যালেঞ্জ আমাদের শ্রেণিকক্ষ। পেডাগোজি সিস্টেমে একটি শ্রেণিকক্ষে সর্বোচ্চ শিক্ষার্থীর সংখ্যা হবে ৪০, অথচ আমাদের দেশে ক্ষেত্রবিশেষে সেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা গিয়ে ঠেকে ২০০-৩০০! যোগ্যতাসম্পন্ন এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষক যেমন থাকতে হবে, থাকতে হবে ডিজিটাল লিটারেসি, ডিজিটাল ক্লাসরুম, সঙ্গে ডিজিটাল টুলস; অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে অন্তত মাল্টিমিডিয়া স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে। কলেজ পর্যায়ে এটি সম্ভব। আমার ধারণা, কলেজ পর্যায়ের প্রায় সব শিক্ষার্থীরই একটি স্মার্টফোন আছে, দরকার শুধু ইন্টারনেট যুক্ত করার ব্যবস্থা করা, কিংবা নির্দিষ্ট পরিমাণ ডেটা সরবরাহ করা। যদি শিক্ষার্থীরা এর অপব্যবহার না করে তাহলে এ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন সম্ভব।
এ দেশীয় বাস্তবতায় একেবারে সবাইকে এই ডিজিটাল টুলস ব্যবহারের আওতায় রাতারাতি আনা সম্ভব না হলেও পেডাগোজির লার্নিং অ্যাকটিভিটিতে ‘ওয়ান মিনিট পেপার’, ‘থিংক-পেয়ার-শেয়ার’, ‘পোস্টার পেপার প্রেজেন্টেশন’-এর মাধ্যমে ‘অ্যাকটিভ এনগেজমেন্ট’ সম্ভব। সম্ভব কোলাবরেশনের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করা। এ ক্ষেত্রে শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষে একটু বেশি শ্রম দিতে হবে।
২. সব শিক্ষককে প্রশিক্ষিত করা। শুধু প্রশিক্ষিত করলেই হবে না। প্রশিক্ষণকে শ্রেণিকক্ষে বাস্তবায়িত করার জন্য শিক্ষক যেন উদ্বুদ্ধ হন, সেই লক্ষ্যে তাঁদের জীবনমান উন্নয়নের পথে কার্যকর ভূমিকা নিতে কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত (বলা ভালো রাজি-খুশি) কি না; নাকি আগের মতোই জোড়াতালি আর অনুদাননির্ভরতায় দায়সারাগোছের কিছুই পেছনে ভর করে আছে! কম করে হলেও ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো বেসরকারি। ব্যতিক্রম বাদ দিলে ম্যানেজিং কমিটি নামক পরিচালনা কমিটির মনোযোগ সত্যিকার অর্থে কোন দিকে, সেটি স্পষ্ট করে না বললেও চলে। আছে দলাদলি, পরচর্চা, পরনিন্দা।
একটি সফল এবং কার্যকর ক্লাস শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে একজন শিক্ষকের যে চিন্তার স্বাধীনতা থাকা দরকার, দরকার সৃজনশীল হওয়ার মতো অনুকূল পরিবেশ তথা নিয়ামক, তা কয়টা প্রতিষ্ঠানে বর্তমান? একটি ভালো ক্লাসের চেয়ে বিশেষ কায়দার সালামের গুরুত্ব সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানে আজও অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।
ঠকবাজি, ভাউচারবাজি, টেন্ডারবাজির সঙ্গে আছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক কর্তৃত্বের খবরদারি! আরও বেশি আছে কিছু হুজুগে লোক, যারা শিক্ষাক্রমের পজিটিভ দিকগুলো আড়ালে রেখে আলুভাজি, ডিমভাজির মতো গৌণ বিষয়গুলো উপজীব্য করে আমাদের সরলবিশ্বাসী সাধারণের মগজধোলাই করতে বেশি উৎসাহী হয়। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে একটা অস্থির পরিবেশ সৃষ্টির পটভূমি তৈরিতে অধিক তৎপরতা দেখায়। তার ওপর আছে ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার। এদের নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পারাটাও একটা চ্যালেঞ্জ।
শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে আপাত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি আশানুরূপ করা না গেলেও অন্তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি রোধসহ একটি মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকের সমন্বয়ে করা গেলে পেডাগোজি হতে পারে এসডিজি-৪ বাস্তবায়নে প্রধান নিয়ামক। সে পথে কি হাঁটতে পারব আমরা? পেডাগোজিই কি তবে পথ দেখাবে?
লেখক: মাসুদ উর রহমান, কলেজশিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী
শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি এবং প্রণীত শিক্ষাক্রম নিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে হতে থাকা আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমিও বেশ কয়েকটি নিবন্ধ আজকের পত্রিকায় লিখেছি। অনেকেই লিখছে, লিখবে। গঠনমূলক এই পর্যালোচনায় দৃষ্টি পড়বে শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের এবং হয়তো এভাবেই ত্রুটি-বিচ্যুতি যতটা সম্ভব কমিয়ে এনে দাঁড়িয়ে যাবে নতুন শিক্ষাক্রম।
শুরুতেই শিক্ষাক্রম বিষয়টি একটু পরিষ্কার করি। শিক্ষাক্রম হচ্ছে একটি পদ্ধতি, যেটি অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার দিকে আগ্রহী ও মনোযোগী করে তোলা যায়। সে লক্ষ্যেই শিক্ষাব্যবস্থার সকল পর্যায়ে দায়িত্বশীল, স্বপ্রণোদিত, দক্ষ ও সংবেদনশীল, জবাবদিহিমূলক, একীভূত ও অংশগ্রহণমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নতুন শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান, যোগ্যতা, মূল্যবোধ ও সক্ষমতা বাড়াতেই দুই বছর আগে জাতীয় শিক্ষাক্রমের মূল ভিত্তিটি তৈরি করা হয়েছে। আর সেই ভিত্তিকে টেকসই রূপ দিতে যে শিক্ষাপদ্ধতিটিকে শ্রেণিকক্ষে অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে, সেটি পেডাগোজি; অর্থাৎ কোনো একটি শিক্ষাকার্যক্রম কী উদ্দেশ্যে পরিচালিত হবে, কী বিষয়বস্তুর মাধ্যমে উদ্দেশ্য অর্জিত হবে; কখন, কীভাবে, কার সহায়তায় এবং কী উপকরণের সাহায্যে তা বাস্তবায়িত হবে, শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে—এসবের যাবতীয় পরিকল্পনার যে শিক্ষাদান পদ্ধতি, সেটিই আসলে পেডাগোজি।
আরও স্পষ্ট করে বললে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ৪০-৫০ মিনিটের একটি লেকচার দিয়ে থাকেন, সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী থাকে নিষ্প্রভ-নিষ্ক্রিয় শ্রোতা। এই নিষ্ক্রিয় শ্রোতাদের ছাত্র-শিক্ষকের পারস্পরিক পর্যালোচনার মাধ্যমে সক্রিয় করে তোলার অন্যতম শিক্ষাদান পদ্ধতিটিই হচ্ছে পেডাগোজি। যার একটি সংক্ষিপ্ত অথচ চমকপ্রদ রূপ হচ্ছে—Lo-Lo-La-La! এখানে,
Lo: Learning objectives
Lo: Learning outcomes
La: Learning activities
La: Learning assessment.
অনুসন্ধান, ফলাফল, কার্যক্রম এবং মূল্যায়নের এই চারটি ধারা একজন শিক্ষার্থীকে আরও নেতৃত্ব এবং সহযোগিতামূলক মনোভাব প্রদান করে, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-৪ (এসডিজি-৪) অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আলোচ্য বিষয়ের ওপর সম্প্রতি আমি ১৪ দিনের একটি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে এসেছি, যার শিরোনাম ‘কন্টিনিউয়াস প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (সিডিপি) অন পেডাগোজি ফর কলেজ টিচারস’। এটি বাস্তবায়ন করেছে কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি)। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় পরিচালিত এই প্রশিক্ষণের সফল বাস্তবায়নে, শিক্ষার মানের যে ক্রমাবনতি আমরা লক্ষ করছি তা থেকে উত্তরণ ঘটাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তবে চ্যালেঞ্জ অনেক:
১. প্রধান চ্যালেঞ্জ আমাদের শ্রেণিকক্ষ। পেডাগোজি সিস্টেমে একটি শ্রেণিকক্ষে সর্বোচ্চ শিক্ষার্থীর সংখ্যা হবে ৪০, অথচ আমাদের দেশে ক্ষেত্রবিশেষে সেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা গিয়ে ঠেকে ২০০-৩০০! যোগ্যতাসম্পন্ন এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষক যেমন থাকতে হবে, থাকতে হবে ডিজিটাল লিটারেসি, ডিজিটাল ক্লাসরুম, সঙ্গে ডিজিটাল টুলস; অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে অন্তত মাল্টিমিডিয়া স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে। কলেজ পর্যায়ে এটি সম্ভব। আমার ধারণা, কলেজ পর্যায়ের প্রায় সব শিক্ষার্থীরই একটি স্মার্টফোন আছে, দরকার শুধু ইন্টারনেট যুক্ত করার ব্যবস্থা করা, কিংবা নির্দিষ্ট পরিমাণ ডেটা সরবরাহ করা। যদি শিক্ষার্থীরা এর অপব্যবহার না করে তাহলে এ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন সম্ভব।
এ দেশীয় বাস্তবতায় একেবারে সবাইকে এই ডিজিটাল টুলস ব্যবহারের আওতায় রাতারাতি আনা সম্ভব না হলেও পেডাগোজির লার্নিং অ্যাকটিভিটিতে ‘ওয়ান মিনিট পেপার’, ‘থিংক-পেয়ার-শেয়ার’, ‘পোস্টার পেপার প্রেজেন্টেশন’-এর মাধ্যমে ‘অ্যাকটিভ এনগেজমেন্ট’ সম্ভব। সম্ভব কোলাবরেশনের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করা। এ ক্ষেত্রে শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষে একটু বেশি শ্রম দিতে হবে।
২. সব শিক্ষককে প্রশিক্ষিত করা। শুধু প্রশিক্ষিত করলেই হবে না। প্রশিক্ষণকে শ্রেণিকক্ষে বাস্তবায়িত করার জন্য শিক্ষক যেন উদ্বুদ্ধ হন, সেই লক্ষ্যে তাঁদের জীবনমান উন্নয়নের পথে কার্যকর ভূমিকা নিতে কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত (বলা ভালো রাজি-খুশি) কি না; নাকি আগের মতোই জোড়াতালি আর অনুদাননির্ভরতায় দায়সারাগোছের কিছুই পেছনে ভর করে আছে! কম করে হলেও ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো বেসরকারি। ব্যতিক্রম বাদ দিলে ম্যানেজিং কমিটি নামক পরিচালনা কমিটির মনোযোগ সত্যিকার অর্থে কোন দিকে, সেটি স্পষ্ট করে না বললেও চলে। আছে দলাদলি, পরচর্চা, পরনিন্দা।
একটি সফল এবং কার্যকর ক্লাস শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে একজন শিক্ষকের যে চিন্তার স্বাধীনতা থাকা দরকার, দরকার সৃজনশীল হওয়ার মতো অনুকূল পরিবেশ তথা নিয়ামক, তা কয়টা প্রতিষ্ঠানে বর্তমান? একটি ভালো ক্লাসের চেয়ে বিশেষ কায়দার সালামের গুরুত্ব সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানে আজও অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।
ঠকবাজি, ভাউচারবাজি, টেন্ডারবাজির সঙ্গে আছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক কর্তৃত্বের খবরদারি! আরও বেশি আছে কিছু হুজুগে লোক, যারা শিক্ষাক্রমের পজিটিভ দিকগুলো আড়ালে রেখে আলুভাজি, ডিমভাজির মতো গৌণ বিষয়গুলো উপজীব্য করে আমাদের সরলবিশ্বাসী সাধারণের মগজধোলাই করতে বেশি উৎসাহী হয়। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে একটা অস্থির পরিবেশ সৃষ্টির পটভূমি তৈরিতে অধিক তৎপরতা দেখায়। তার ওপর আছে ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার। এদের নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পারাটাও একটা চ্যালেঞ্জ।
শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে আপাত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি আশানুরূপ করা না গেলেও অন্তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি রোধসহ একটি মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকের সমন্বয়ে করা গেলে পেডাগোজি হতে পারে এসডিজি-৪ বাস্তবায়নে প্রধান নিয়ামক। সে পথে কি হাঁটতে পারব আমরা? পেডাগোজিই কি তবে পথ দেখাবে?
লেখক: মাসুদ উর রহমান, কলেজশিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে