দীপংকর গৌতম, সাংবাদিক
একসময় কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র একতায় মিছিলের ছবি ছাপা হলে অনেকের ভেতরে দেখা যেত এক সংগ্রামী নারীর মুখ। ইস্পাতদৃঢ় মুষ্টিবদ্ধ হাতে স্লোগান দিচ্ছেন। তিনি আর কেউ নন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষ্ণা রহমান। সংগ্রামী এই নারীর জীবনাবসান হয়েছে গতকাল ২৬ ডিসেম্বর।
আন্দোলন-সংগ্রাম ছিল যাঁর প্রাত্যহিক বিষয়, এরপর সংসার সামলানো ইত্যাদি। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর বিশ্বজুড়ে কমিউনিস্ট আন্দোলনে যে পরিবর্তন হয়, তার ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে বিভক্তি দেখা দেয়। যাঁরা পার্টির লাল পতাকা ধরে রাখেন, কৃষ্ণা তাঁদের একজন।
ভীষণ বিনয়ী অথচ লড়াকু। যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থাকতেন, প্রয়োজনে থাকতেন মানুষের পাশে। কার কী খেতে পছন্দ, কে কোন সংকটে আছে, কার ঘরে ডাক্তার দেখানোর কেউ নেই—সেই সব মানুষ তাঁর কাজের অংশ। এলাকার মানুষের পরম শ্রদ্ধেয় ছিলেন তিনি।
কৃষ্ণা রহমানের গোটা জীবন সংগ্রামের স্রোতোধারায় প্রোজ্জ্বল। খুলনায় তাঁর জন্ম। বাবা ও কাকা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাজনৈতিক পরিবেশেই তাঁর বেড়ে ওঠা। শৈশবে পড়েছেন বড় বড় রাজনৈতিক নেতার জীবনী। সেই সব জীবনী পড়ে আলোড়িত হয়েছেন। নিজের বোঝাপড়া থেকে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন শ্রমিক-মেহনতি মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে। তারপর আর পেছনে তাকাননি।
খুলনা পিটিআই স্কুলে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের শাসনামলে শরীফ কমিশনের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছিল। কৃষ্ণা ওই আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নের একজন কর্মী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী খান এ সবুরের উসকানিতে খুলনায় দাঙ্গা সৃষ্টি হয় এবং সেই দাঙ্গায় বহু লোক মারা যায়। ওই সময় তিনি শান্তি মিছিল করেন, গান গেয়ে টাকা তোলেন এবং রুটি বিতরণ করেন। ১৯৬৬ সালে খুলনায় ডায়রিয়া মহামারি আকার নিলে হাজার হাজার মানুষ এতে আক্রান্ত হয়। ওই সময় তিনি ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দিতেন। এভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে একপর্যায়ে তিনি নিজেও আক্রান্ত হন এবং পরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও কৃষ্ণা রহমান অংশ নেন। সে সময়ের মিটিং-মিছিলে থাকার কারণে তাঁর নামে হুলিয়া জারি হলেও সব উপেক্ষা করে তিনি সক্রিয় থাকেন।
এরপর আসে ১৯৭১ সাল, মুক্তির ডাক। স্বাধীনতার স্বপ্নে উত্তাল দেশ। আর সেই উত্তাল স্রোতে ঝাঁপ দেন সংগ্রামী এই নারী। স্বপ্ন দেখেন এক নতুন দেশ ও নতুন মানচিত্রের।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ খুলনা শহরে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। তাদের নারকীয়তা যেকোনো বর্বরতাকে হার মানায়। ১ এপ্রিল ছাত্রলীগের নেতা কামারুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে একটি দল গল্লামারী রেডিও স্টেশন দখল করতে যায়, কিন্তু মাত্র কয়েকটি থ্রিনটথ্রি রাইফেল সঙ্গে থাকায় কাজটি সফল হয়নি; বরং দলের বেশির ভাগ সদস্য পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ হন। এরপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নারকীয় হত্যাকাণ্ড শুরু করলে ওই রাতেই কৃষ্ণা তাঁর পরিবারের সঙ্গে বাগেরহাটের কারাপাড়ায় চলে যান।
কারাপাড়া থেকে চিতলমারী যাওয়ার পথে খড়মখালী গ্রামের মালেক মোল্লার বাড়িতে আশ্রয় নেন। ওই সময় চিতলমারীতে ইপিআর, পুলিশ এবং সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাবিব বাহিনী নামে একটি মুক্তিবাহিনী গঠন করে। কৃষ্ণা চিতলমারী পৌঁছালে হাবিব বাহিনীর কমান্ডার হাবিব তাঁকে যুদ্ধে যেতে ইচ্ছুক কি না, জানতে চান। গেলে তাঁদের কাছে ট্রেনিং নিতে পারেন বলে জানান। চিতলমারী বাজারে খড়মখালী নামে একটা জায়গায় অস্ত্র চালনার ট্রেনিং হতো। সেখানে কৃষ্ণা ২০ দিনের ট্রেনিং নেন। সে সময় রাজাকাররা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত। চিতলমারী ছিল হিন্দু-অধ্যুষিত। রাজাকাররা হিন্দু বাড়িতে অত্যাচার, লুটপাট, ধর্ষণ করত। তাদের অত্যাচারে সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এরপর মুক্তিবাহিনীর একটি দল রাজাকারদের ওপর হামলা করে, সেই দলে কৃষ্ণাও ছিলেন। জয় তাঁদেরই হয়। তাঁরা রাজাকারদের সব অস্ত্র ছিনিয়ে নেন।
এরপর কৃষ্ণা ভারতে চলে যান। সেই স্মৃতিও দুঃসহ। মানুষের অজস্র লাশ মাড়িয়ে পথচলা। সেই বিভীষিকা বর্ণনা করার মতো নয়। অ্যালেন গিনসবার্গের কবিতার প্রেক্ষাপট দেশজুড়ে। শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে কমিউনিস্ট পার্টির একটা মিছিল চোখে পড়লে তিনি যেন ভরা অন্ধকারে একটু আলোর ফুলকি খুঁজে পান। তাঁর এত পথপরিক্রমার ক্লান্তি ধীরে ধীরে উবে যায়। মনে হয় জায়গা পেয়েছেন। এরপর মিশে যান তাঁদের সঙ্গে। কলকাতার পদ্মপুকুরে লেনিন স্কুলে কৃষ্ণা রহমানের জায়গা হয়।
আওয়ামী লীগের নেত্রী সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে নারীদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণের জন্য গোবরা ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করা হলে কৃষ্ণা সেখানে যোগ দেন। গোবরা ক্যাম্পে অবস্থানকালে তিনি তিন ধরনের কাজ করেছেন। প্রথমত, জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ, দ্বিতীয়ত, নার্সিং এবং তৃতীয়ত সশস্ত্র প্রশিক্ষণ। নিজস্ব দক্ষতা ও যোগ্যতায় তাঁকে বাড়তি কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে, যেমন যেসব মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল, তাদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।
গোবরা ক্যাম্পে থাকার সময় তিনি যে জরুরি কাজটি করতেন তা হলো, এক ক্যাম্প থেকে আরেক ক্যাম্পে সংবাদ বহন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মুক্তিসেনাদের বিজয়ের খবরও তিনি বিভিন্ন ক্যাম্পে আনা-নেওয়া করতেন।
যুদ্ধ শেষে এই বীর মুক্তিসংগ্রামী দেশে এসে তাঁর রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট পার্টিতে কাজ শুরু করেন। মিছিল-মিটিং-সভায় তাঁর উপস্থিতি ছিল যথারীতি এবং গোপীবাগ এলাকার মানুষ হয়ে ওঠে তাঁর সন্তান, ভাইবোন। এলাকার মানুষের উপকারে নিবেদিত এই বীর যোদ্ধা মনে করেন, মানুষের মুক্তির সংগ্রাম শিগগিরই শেষ হয় না। নিজের তিন সন্তান, গোপীবাগের জনগণ নিয়ে কেটেছে তাঁর দিন। মুক্তিসংগ্রামী কৃষ্ণা রহমানের জীবনসংগ্রাম ছোটখাটো নয়। কিন্তু সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। চারদিকে কত লোকের অঢেল সম্পত্তি কত দ্রুত হয়েছে। কিন্তু নির্লোভ এই সংগ্রামী নারী আমৃত্যু সাধারণই ছিলেন।
এই জীবনসংগ্রামী নারীর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
একসময় কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র একতায় মিছিলের ছবি ছাপা হলে অনেকের ভেতরে দেখা যেত এক সংগ্রামী নারীর মুখ। ইস্পাতদৃঢ় মুষ্টিবদ্ধ হাতে স্লোগান দিচ্ছেন। তিনি আর কেউ নন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষ্ণা রহমান। সংগ্রামী এই নারীর জীবনাবসান হয়েছে গতকাল ২৬ ডিসেম্বর।
আন্দোলন-সংগ্রাম ছিল যাঁর প্রাত্যহিক বিষয়, এরপর সংসার সামলানো ইত্যাদি। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর বিশ্বজুড়ে কমিউনিস্ট আন্দোলনে যে পরিবর্তন হয়, তার ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে বিভক্তি দেখা দেয়। যাঁরা পার্টির লাল পতাকা ধরে রাখেন, কৃষ্ণা তাঁদের একজন।
ভীষণ বিনয়ী অথচ লড়াকু। যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থাকতেন, প্রয়োজনে থাকতেন মানুষের পাশে। কার কী খেতে পছন্দ, কে কোন সংকটে আছে, কার ঘরে ডাক্তার দেখানোর কেউ নেই—সেই সব মানুষ তাঁর কাজের অংশ। এলাকার মানুষের পরম শ্রদ্ধেয় ছিলেন তিনি।
কৃষ্ণা রহমানের গোটা জীবন সংগ্রামের স্রোতোধারায় প্রোজ্জ্বল। খুলনায় তাঁর জন্ম। বাবা ও কাকা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাজনৈতিক পরিবেশেই তাঁর বেড়ে ওঠা। শৈশবে পড়েছেন বড় বড় রাজনৈতিক নেতার জীবনী। সেই সব জীবনী পড়ে আলোড়িত হয়েছেন। নিজের বোঝাপড়া থেকে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন শ্রমিক-মেহনতি মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে। তারপর আর পেছনে তাকাননি।
খুলনা পিটিআই স্কুলে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের শাসনামলে শরীফ কমিশনের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছিল। কৃষ্ণা ওই আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নের একজন কর্মী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী খান এ সবুরের উসকানিতে খুলনায় দাঙ্গা সৃষ্টি হয় এবং সেই দাঙ্গায় বহু লোক মারা যায়। ওই সময় তিনি শান্তি মিছিল করেন, গান গেয়ে টাকা তোলেন এবং রুটি বিতরণ করেন। ১৯৬৬ সালে খুলনায় ডায়রিয়া মহামারি আকার নিলে হাজার হাজার মানুষ এতে আক্রান্ত হয়। ওই সময় তিনি ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দিতেন। এভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে একপর্যায়ে তিনি নিজেও আক্রান্ত হন এবং পরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও কৃষ্ণা রহমান অংশ নেন। সে সময়ের মিটিং-মিছিলে থাকার কারণে তাঁর নামে হুলিয়া জারি হলেও সব উপেক্ষা করে তিনি সক্রিয় থাকেন।
এরপর আসে ১৯৭১ সাল, মুক্তির ডাক। স্বাধীনতার স্বপ্নে উত্তাল দেশ। আর সেই উত্তাল স্রোতে ঝাঁপ দেন সংগ্রামী এই নারী। স্বপ্ন দেখেন এক নতুন দেশ ও নতুন মানচিত্রের।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ খুলনা শহরে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। তাদের নারকীয়তা যেকোনো বর্বরতাকে হার মানায়। ১ এপ্রিল ছাত্রলীগের নেতা কামারুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে একটি দল গল্লামারী রেডিও স্টেশন দখল করতে যায়, কিন্তু মাত্র কয়েকটি থ্রিনটথ্রি রাইফেল সঙ্গে থাকায় কাজটি সফল হয়নি; বরং দলের বেশির ভাগ সদস্য পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ হন। এরপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নারকীয় হত্যাকাণ্ড শুরু করলে ওই রাতেই কৃষ্ণা তাঁর পরিবারের সঙ্গে বাগেরহাটের কারাপাড়ায় চলে যান।
কারাপাড়া থেকে চিতলমারী যাওয়ার পথে খড়মখালী গ্রামের মালেক মোল্লার বাড়িতে আশ্রয় নেন। ওই সময় চিতলমারীতে ইপিআর, পুলিশ এবং সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাবিব বাহিনী নামে একটি মুক্তিবাহিনী গঠন করে। কৃষ্ণা চিতলমারী পৌঁছালে হাবিব বাহিনীর কমান্ডার হাবিব তাঁকে যুদ্ধে যেতে ইচ্ছুক কি না, জানতে চান। গেলে তাঁদের কাছে ট্রেনিং নিতে পারেন বলে জানান। চিতলমারী বাজারে খড়মখালী নামে একটা জায়গায় অস্ত্র চালনার ট্রেনিং হতো। সেখানে কৃষ্ণা ২০ দিনের ট্রেনিং নেন। সে সময় রাজাকাররা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত। চিতলমারী ছিল হিন্দু-অধ্যুষিত। রাজাকাররা হিন্দু বাড়িতে অত্যাচার, লুটপাট, ধর্ষণ করত। তাদের অত্যাচারে সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এরপর মুক্তিবাহিনীর একটি দল রাজাকারদের ওপর হামলা করে, সেই দলে কৃষ্ণাও ছিলেন। জয় তাঁদেরই হয়। তাঁরা রাজাকারদের সব অস্ত্র ছিনিয়ে নেন।
এরপর কৃষ্ণা ভারতে চলে যান। সেই স্মৃতিও দুঃসহ। মানুষের অজস্র লাশ মাড়িয়ে পথচলা। সেই বিভীষিকা বর্ণনা করার মতো নয়। অ্যালেন গিনসবার্গের কবিতার প্রেক্ষাপট দেশজুড়ে। শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে কমিউনিস্ট পার্টির একটা মিছিল চোখে পড়লে তিনি যেন ভরা অন্ধকারে একটু আলোর ফুলকি খুঁজে পান। তাঁর এত পথপরিক্রমার ক্লান্তি ধীরে ধীরে উবে যায়। মনে হয় জায়গা পেয়েছেন। এরপর মিশে যান তাঁদের সঙ্গে। কলকাতার পদ্মপুকুরে লেনিন স্কুলে কৃষ্ণা রহমানের জায়গা হয়।
আওয়ামী লীগের নেত্রী সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে নারীদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণের জন্য গোবরা ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করা হলে কৃষ্ণা সেখানে যোগ দেন। গোবরা ক্যাম্পে অবস্থানকালে তিনি তিন ধরনের কাজ করেছেন। প্রথমত, জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ, দ্বিতীয়ত, নার্সিং এবং তৃতীয়ত সশস্ত্র প্রশিক্ষণ। নিজস্ব দক্ষতা ও যোগ্যতায় তাঁকে বাড়তি কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে, যেমন যেসব মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল, তাদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।
গোবরা ক্যাম্পে থাকার সময় তিনি যে জরুরি কাজটি করতেন তা হলো, এক ক্যাম্প থেকে আরেক ক্যাম্পে সংবাদ বহন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মুক্তিসেনাদের বিজয়ের খবরও তিনি বিভিন্ন ক্যাম্পে আনা-নেওয়া করতেন।
যুদ্ধ শেষে এই বীর মুক্তিসংগ্রামী দেশে এসে তাঁর রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট পার্টিতে কাজ শুরু করেন। মিছিল-মিটিং-সভায় তাঁর উপস্থিতি ছিল যথারীতি এবং গোপীবাগ এলাকার মানুষ হয়ে ওঠে তাঁর সন্তান, ভাইবোন। এলাকার মানুষের উপকারে নিবেদিত এই বীর যোদ্ধা মনে করেন, মানুষের মুক্তির সংগ্রাম শিগগিরই শেষ হয় না। নিজের তিন সন্তান, গোপীবাগের জনগণ নিয়ে কেটেছে তাঁর দিন। মুক্তিসংগ্রামী কৃষ্ণা রহমানের জীবনসংগ্রাম ছোটখাটো নয়। কিন্তু সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। চারদিকে কত লোকের অঢেল সম্পত্তি কত দ্রুত হয়েছে। কিন্তু নির্লোভ এই সংগ্রামী নারী আমৃত্যু সাধারণই ছিলেন।
এই জীবনসংগ্রামী নারীর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে