কখনো আর্মির মেজর, কখনো কর্নেল, কখনোবা পরিচয় দিতেন র‍্যাবের কর্মকর্তা হিসেবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেজে বাহিনীতে নিয়োগের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণা করে আসছে পাঁচ-ছয়জনের একটি চক্র। ভুয়া নিয়োগের এসএমএস পাঠানোর ক্ষেত্রে তাঁরা অনলাইনে এসএমএস পাঠাতেন ভুক্তভোগীদের কাছে। গত তিন বছরে এভাবে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১ কোটি টাকা।

চক্রটি ব্যাপক মাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে ২০২১ সালে। ওই বছরের ডিসেম্বরে একে একে র‍্যাবের কাছে আসতে থাকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাতে বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলা এবং গতকাল শনিবার বিকেলে সদর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সে সময় র‍্যাবের হাতে ধরা পড়ে চক্রের হোতা। আর তাঁর দেওয়া তথ্যে আরও একজন সদস্যকে আটক করে র‍্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্প।

গতকাল শনিবার বিকেলে সংবাদ সম্মলনে এসব তথ্য জানান বগুড়া র‍্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সোহরাব হোসেন।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন চক্রের হোতা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামের মো. নবীর শেখ (৪৪) এবং বিশুবাড়ি গ্রামের মাহমুদ হাসান মজনু (৩৬)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বগুড়া জেলা সদর এলাকার প্রতারক চক্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে সদস্য ভর্তি করার নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে আনুমানিক ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চক্রটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে প্রার্থীর মোবাইলে ভুয়া নিয়োগের এসএমএস পাঠায়। চক্রটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করে।

একাধিক ভুক্তভোগী র‍্যাবের-১২ বগুড়া ক্যাম্পে এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাত ১১টার দিকে শাজাহানপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের হোতা নবীর শেখকে আটক করে র‍্যাব-১২। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, জেলার সদর এলাকা থেকে সহযোগী মাহমুদ হাসান মজনুকে আটক করা হয় শনিবার ভোর সাড়ে ৫টায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেন র‍্যাবের কাছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি ভুয়া নিয়োগপত্র, দুটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।

র‍্যাব বগুড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সোহরাব হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা ছয়জন ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়েছি। আটক দুজন এ চক্রের সঙ্গে আরও পাঁচজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।’