বিদ্যুৎ ফেরেনি ইচলি গ্রামে

গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০৬: ৫৬
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৯

গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তার চরের পশ্চিম ইচলি গ্রামের বাসিন্দারা ২৫ দিন ধরে অন্ধকারে আছেন। গত ২০ অক্টোবরের আকস্মিক ঢলে দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ায় গ্রামটি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এতে ভুতুড়ে অন্ধকারে চুরির আতঙ্কে রাত কাটছে পরিবারগুলোর।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০ অক্টোবর সন্ধ্যার আগে ভারতে বাঁধ খুলে দেওয়ায় তিস্তা নদীতে আকস্মিক ঢল দেখা দেয়। এর স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ৩০ মিনিট। কিন্তু এই ঢলের তোড়ে চরের পশ্চিম ইচলি গ্রামের অন্তত ৪০টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।

নদীতে বসতঘর বিলীন হয় ১৮টি। পানির তোড়ে ভেসে যান গ্রামের দিনমজুর নয়া মিয়া (৬৫)। সেই সঙ্গে অনেকে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ও ধান-চাল হারান। বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্ধশতাধিক। চরের আধাপাকা আমন ধান ও মিষ্টি কুমড়ার খেত চাপা পড়ে বালুর নিচে। গ্রামে যাওয়া-আসার কাঁচা রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পশ্চিম ইচলি গ্রামটি এলোমেলো হয়ে গেছে। ইচলি জামে মসজিদের পশ্চিমে ও পূর্বে থাকা দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ে আছে। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গত ২০ অক্টোবর থেকে গ্রামটি অন্ধকারে রয়েছে।

গ্রামের বাসিন্দা হাছিনুজ্জামানের অভিযোগ, স্থানীয় বিদ্যুৎ কার্যালয়ে বারবার অভিযোগ করা হলেও খুঁটি দুটি ঠিক করে দেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যার পরই গ্রামটি ঘুটঘুটে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। রাতে চুরির আতঙ্কে থাকেন লোকজন।

গ্রামের গৃহবধূ মোসলেমা বেগম বলেন, ‘বিদ্যুৎ নাই ২৫ দিন থাকি। ছাওয়াগুলাক কুপির আলোত নেকাপড়া করির নাগোছে। রাইত হইলে চোর ডাকাইতের ভয় নাগে।’

বিদ্যুৎ না থাকায় মাইকে আজান দেওয়া হয় না বলে জানান ইচলি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন বকুল হোসেন।

গ্রামের আরেক বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘বিদ্যুৎ অফিসোত দরখাস্ত দিছি তাও কাম হওচে না। হামরা কি দ্যাশের নাগরিক নোয়াই?’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গঙ্গাচড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জোনাল ম্যানেজার আবদুল জলিল বলেন, ‘আমাদের কাজ অব্যাহত আছে। আগামী সপ্তাহে ওই এলাকায় সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত