চিকিৎসক হীন চিকিৎসাকেন্দ্র

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ১৪
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৮: ১১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়ধরকান্দি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। মোট পাঁচটি পদের বিপরীতে এখানে আছেন শুধু একজন পিয়ন। অধিকাংশ সময়ই কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। মাঝেমধ্যে পিয়ন এসে রোগীদের সাধারণ ওষুধ দিচ্ছেন।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জয়ধরকান্দি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দুজন চিকিৎসকসহ মোট পদ আছে পাঁচটি। কিন্তু বর্তমানে শুধু একজন পিয়নই আছেন এখানে। বাকি পদগুলো শূন্য।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র মাসের অধিকাংশ সময়ই তালাবদ্ধ থাকে। দেখলে মনে হয় যেন পরিত্যক্ত কোনো ভবন। মাঝে মধ্যে পিয়ন আনোয়ার হোসেন আসেন। তিনি তালা খোলেন। পুরো ইউনিয়নের অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং শিশু-কিশোরীদের জন্য এটিই একমাত্র চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র। কিন্তু চিকিৎসক, পরিদর্শক ও ফার্মাসিস্ট না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ।

জয়ধরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা কাজী শাহনেওয়াজ শান্তাজ বলেন, ‘আমি বিদেশে থাকতাম। দুই-তিন মাস হলো দেশে আসলাম। একদিনও হাসপাতাল খুলতে দেখিনি। সব সময় তালা ঝুলতে দেখি। ডাক্তার তো দূরের কথা, কম্পাউন্ডারও দেখি না এখানে।’

একই এলাকার বাসিন্দা কামাল মিয়া বলেন, ‘একজন বয়স্ক লোক মাঝে মধ্যে হাসপাতালে এসে বসেন। অসুস্থ হলে আমরা তাঁর কাছে ওষুধের জন্য যাই। তিনি ডাক্তার নাকি পিয়ন জানি না। অসুখ হলে তিনিই আমাদের ওষুধ দেন।’

পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সালাউদ্দিন বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশু-কিশোরীদের সমস্যা বেশি হচ্ছে। ডাক্তার না থাকলেও একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা থাকলে মানুষ ন্যূনতম সেবাটুকু পেত।’

ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে ওই গ্রামের কেউ আমাকে বলেনি। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ডাক্তার নেই, আমি জানি না। দ্রুত খোঁজ নেওয়া হবে।’

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের পিয়ন (এমএলএসএস) আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, ‘কেন্দ্রটি আমার নয়। এটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অধীনে। আমাদের বিভাগের লোকবল সংকট চরম। অতিরিক্ত থাকলে ওখানে দিতে পারতাম।’

পিয়ন ছাড়া কেন্দ্রটিতে আর কেউ নেই, বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নোমান মিয়া। তিনি বলেন, ‘একজন চিকিৎসক ছিলেন এখানে। করোনার সময় চিকিৎসক সংকটের কারণে আমরা তাঁকে উপজেলায় নিয়ে এসেছি। এখন পিয়ন আনোয়ার হোসেনই রোগীদের সাধারণ ওষুধ দিচ্ছেন। ওই কেন্দ্রের দুরবস্থার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, শিগগিরই ব্যবস্থা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত