বদরগঞ্জে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি সেতু নির্মাণকাজের জন্য দরপত্র পড়েছে ৮৯৫টি। এতে ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টাকার শিডিউল বিক্রি হয়েছে। দরপত্রের যাচাই-বাছাই সম্পন্ন শেষে গতকাল সোমবার ইউএনওর কার্যালয়ে প্রকাশ্যে লটারি অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো পিয়াস কনস্ট্রাকশন, নিউতাস পাতরতাস ও রংপুরের মোমিনুর রহমান।

মাত্র তিনটি সেতুর জন্য ৮৯৫টি দরপত্র পড়ার ঘটনা এই প্রথম বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বুজরুক হাজীপুর নয়াপাড়া ক্যানেলের ওপর, রামনাথপুর ইউনিয়নের রামনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় করতোয়া খালের ওপর এবং গোপীনাথপুর ইউনিয়নের শালবাড়ি এলাকার ফলিমাড়ি নালার ওপর একটি করে সেতুর দরপত্র আহবান করা হয়। এক মাস আগে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে দরপত্রের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তিনটি সেতু নির্মাণকাজের জন্য দরপত্র পড়েছে ৮৯৫টি। এই দরপত্র থেকে লটারির মাধ্যমে তিনটি দরপত্র তোলা হবে। লটারিতে যে ঠিকাদারদের নাম উঠবে তাঁরাই করবেন ওই তিনটি সেতু নির্মাণ। এতে প্রতিটি সেতুর প্রস্থ ১৪ এবং দৈর্ঘ্যে ৫০ ফিট ধরা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার বলেন, ‘নানা সমস্যার কারণে এখন অনেকেই ঠিকাদারি ছেড়ে দিচ্ছেন। সেই ঠিকাদারের লাইসেন্স ৪-৫ জন নিয়ে গ্রুপ হয়ে শিডিউল কিনছেন। রংপুরের অন্যান্য উপজেলায়ও তাঁরা শিডিউল কিনে জমা দিচ্ছেন।’

ঠিকাদার আরও বলেন, ‘এটা এক ধরনের জুয়া। কারণ এই সেতুর জন্য অফেরতযোগ্য সরকারি একটি শিডিউল মূল্য এক হাজার ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে একটি দরপত্রের পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়। লটারিতে নাম না উঠলে মাথায় হাত পড়ে ঠিকাদারের।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘তিনটি সেতুর বিপরীতে ৮৯৫টি দরপত্র পড়েছে। এতে ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টাকার শিডিউল বিক্রি হয়েছে। এই টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হবে। সেতু নির্মাণে রডের মূল্য কিছুটা বাজারের চেয়ে বেশি ধরায় দরপত্র বেশি পড়েছে। তবে এত দরপত্র এর আগে কখনো পড়েনি।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট বলেন, ‘ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকলে কিছু টাকা ব্যাংকে জমা দিলে লাখ লাখ টাকার পে-অর্ডার পাওয়া যায়। এ কারণে দরপত্র জমা দেওয়ার সময় পে-অর্ডারের জন্য টাকার চিন্তা করতে হয় না। আর লটারিতে একটি নাম উঠলে ভাগ্য খুলে যায়। এসব কারণে দরপত্র বেশি পড়েছে। ধরা চলে এটা এক ধরনের জুয়া।’