Ajker Patrika

ইউরিয়া সারের কৃত্রিম সংকট

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ (রংপুর)
ইউরিয়া সারের কৃত্রিম সংকট

রংপুরের বদরগঞ্জে ইউরিয়া সারের কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। দু-এক দোকানে ইউরিয়া পাওয়া গেলেও ৮০০ টাকার বস্তা ১ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। এতে অনেকে কৃষিজমিতে পরিমাণমতো ইউরিয়া দিতে পারছেন না।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বদরগঞ্জে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সার ডিলার রয়েছেন ১১ জন। তাঁরা জুলাই মাসে আগের দরে ৪৫১ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার তুলেছেন। অনেকেই বিক্রি শেষ দেখিয়ে নতুন সার তুলেছেন।

অভিযোগ উঠেছে, ডিলাররা আগের সার কাগজে-কলমে শেষ দেখালেও তাঁদের গোডাউনে সার মজুত রয়েছে। তাঁরা ওই সার বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগে রয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ডিলার বলেন, ‘অনেকেই পৌর শহরের গোডাউনে ইউরিয়া সার মজুত রেখেছেন। কেজিতে ছয় টাকা বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষি কার্যালয়ে তাঁরা কাগজ-কলমে সার বিক্রি শেষ দেখিয়েছেন।’

উপজেলার ওসমানপুর গ্রামের কৃষক জিকরুল আনম লিটন বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে আমন লাগিয়েছি। জমিতে ইউরিয়া সার দিতে হবে। ডিলারদের দোকান ঘুরেও ইউরিয়া সার পাচ্ছি না। খুচরা সার ব্যবসায়ীরা দুই দিন আগে প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করলেও এখন তাঁরা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।’ পৌর শহরের শাহাপুর গ্রামের কৃষক হাছিনুর রহমান বলেন, ‘টাকা দিয়েও সার পাচ্ছি না।’

আমরুলবাড়ি গ্রামের কৃষক হাসেম আলী বলেন, ‘ডিলাররা সার গোডাউনে মজুত রাখলেও বিক্রি করছেন না। দু-এক দোকানে সার পাওয়া গেলেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এতে জমিতে পরিমাণমতো সার দেওয়া যাচ্ছে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই খুচরা সার ব্যবসায়ী বলেন, ‘কয়েকজন ডিলারের গোডাউনে ইউরিয়া সার মজুত রয়েছে। তাঁরা নতুন দরের সার বরাদ্দ পেলে মজুত রাখা সারেরও বৈধতা পেয়ে যাবেন। তখন ৮০০ টাকার সার ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করলেও আর কেউ ধরতে পারবে না।’

পৌর শহরের খুচরা সার ব্যবসায়ী নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা ডিলারদের কাছ থেকে ইউরিয়া সার নিয়ে বিক্রি করি। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে ইউরিয়া সার পাচ্ছি না।’ 
উপজেলার গোপীনাথপুরের মেসার্স আকবর তালুকদারের ব্যবস্থাপক সুব্রত রায় বলেন, ‘৮০০ টাকা দরে সার বিক্রি করছি। এখনো দোকানে ৪০০ বস্তা ইউরিয়া আছে। কৃষি কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী রোববার ওই সার বিক্রি শুরু করা হবে।’

রামনাথপুর ইউনিয়নের সার ডিলার হারুন বলেন, ‘আমি জুলাই মাসে ৪১ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ পেয়েছিলাম। তা ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গত বুধবার নতুন দরে ২০ মেট্রিক টন সার তুলেছি। কিন্তু কৃষি কার্যালয়ের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত ওই সার বিক্রি শুরু করতে পারছি না।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান বলেন, ‘ইউরিয়া

সারের কোনো সংকট নেই। দু-চারজন ডিলারের কাছে আগের দরের কিছু সার রয়েছে। আবার কয়েকজন ডিলার নতুন দরের ইউরিয়াও তুলেছেন। নতুন দরের সার ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি শুরু করলে সুযোগ বুঝে আগের ৮০০ টাকার সারও ব্যবসায়ীরা ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করতে পারেন। তাই দু-এক দিনের মধ্যে ৮০০ টাকার সার বিক্রি শেষ হলে নতুন দরে সার বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, ‘৮০০ টাকার ইউরিয়া এক কৃষকের কাছে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পৌর শহরের এক খুচরা সার ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে কেউ বেশি নিলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত