ক্রেতা নেই, বাগানেই নষ্ট লেবু

সেলিম হোসাইন, ফুলবাড়িয়া
Thumbnail image

মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে ফুলবাড়িয়ায় একেবারেই তলানিতে লেবুর দাম। লেবু বিক্রিতে চাষিদের উৎপাদন খরচ ওঠানো সম্ভবই হচ্ছে না, বরং লোকসান গুনতে হচ্ছে তাঁদের। লোকসানের মুখে পড়ে অনেক কৃষকই লেবু তুলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এ কারণে বাগানেই নষ্ট হচ্ছে লেবু।

উপজেলার বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে, লেবু পেকে গাছেই রয়ে গেছে। অনেক লেবু ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লোকসানের ভয়ে চাষিরা লেবু তুলছে না। ফলে বাগানেই নষ্ট হচ্ছে চাষির পরিশ্রমের ধন।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বস্তা লেবু তুলতে শ্রমিককে দিতে হয় ৩০০ টাকা। এ ছাড়া পাটের বস্তা, ভাড়া, অন্য খরচ বাবদ চলে যায় আরও ৩০০ টাকা। প্রতি বস্তা লেবু তুলে বিক্রি পর্যন্ত খরচ হচ্ছে ৬০০ টাকা। এ ছাড়া সার খরচতো আছেই। তবে সেই লেবু বাজারে গিয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দাম পাচ্ছেন তাঁরা। এখানে কৃষকের লোকসান ১০০ থেকে ২০০ টাকা। যার কারণে বাগানেই নষ্ট হয়ে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। এ কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন লেবু চাষিরা।

লেবু চাষিদের দাবি, কিছু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী কৃষকের কাছ থেকে কম দামে লেবু কিনে বাজারে উচ্চ লাভে বিক্রি করে। এসব ব্যবসায়ীদের কারণে চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন প্রকৃত চাষিরা। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লোকসানের পড়তে হচ্ছে তাঁদের।

রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের চাষি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এবার আমার এক একর জমিতে লেবু চাষ করা হয়। রমজানের শুরুতে ভালো দামে বিক্রি করলেও, এখন একদমই বিক্রি হচ্ছে না। পাইকারেরা এখন আর লেবু কিনতে চান না। আমাদের নিজেদের খরচে লেবু তুলে বাজারে বিক্রি করতে হয়। তবে লেবু তুলতে একজন দিনমজুরকে যে পারিশ্রমিক দিতে হয় সেই টাকাই বিক্রি করে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। তাই লেবু তোলা বাদ দিয়েছি।

মো. নজরুল ইসলাম আরও বলেন, প্রতিটি লেবু এক টাকা দরেও বিক্রি করতে পারছি না। অথচ অনেক স্বপ্ন নিয়ে চাষ করেছিলাম। কিন্তু সঠিক দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়েছি।’ 
ফুলতলা গ্রামের লেবু চাষি শাজাহান বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহেই প্রায় ২ থেকে ৩ বস্তা করে লেবু উঠে। রোজার আগে লেবুর বাজার ভালো থাকলেও এখন বাজার পরিস্থিতি একদমই ভালো না। পাইকারেরা এখন আর লেবু কিনতে চান না। কিন্তু বাজারে প্রচুর পরিমাণ লেবু উঠছে।’

এনায়েতপুর বাজারে আসা চাষি ছাইফুল ইসলাম জানান, বাজারে প্রচুর লেবু উঠেছে। যারা বিক্রি করতে এসেছেন তাঁরা সকলেই এসব নিজেরাই উৎপাদন করেছেন। এসব কিনতে আগের মতো ব্যবসায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ী না থাকায় তাঁরা কম দামে বিক্রি করছেন। কারণ লেবু ঘরে রেখে দেওয়া যায় না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত