কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক স্থানীয় সরকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অন্যের লাইসেন্স দিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনে শতকোটির বেশি টাকার কাজ করেছেন। গত চার বছরে বেনামে সবচেয়ে বেশি ঠিকাদারি কাজ করেছেন মেসার্স হোসেন ট্রেডার্সের লাইসেন্সে। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক এইচ এম সেলিম ওরফে সেলিম হাওলাদার ওরফে সেলিম মুন্সী ছিলেন সাবেক মেয়রের বিশ্বস্ত পার্টনার (অংশীদার)। সম্প্রতি এ প্রতিষ্ঠানটিকে এক বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত করে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যের লাইসেন্সে নিজেই ঠিকাদারি করতেন তালুকদার আবদুল খালেক। মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স, আজাদ ইঞ্জিনিয়ার্স ও মেসার্স তাজুল ইসলাম নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে গত কয়েক বছরে শতকোটি টাকার কাজ করেছেন তিনি।
ঠিকাদার এইচ এম সেলিম (সেলিম হুজুর) এসব কাজ দেখাশোনা করতেন। এর বাইরে ৫ শতাংশ কমিশনের ভিত্তিতে আরও প্রায় শতকোটি টাকার উন্নয়নকাজ বড় ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করেছেন। আবার লাইসেন্স ছাড়াই পছন্দের ব্যক্তি, আওয়ামী লীগের নেতা ও কাউন্সিলরদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন কোটি কোটি টাকার কাজ। এ কাজও বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়ে কিনতে হতো ঠিকাদারদের।
খুলনা সিটি করপোরেশনের পূর্ত শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত চার বছরে শুধু মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স সিটি করপোরেশনের লাইসেন্সে এইচ এম সেলিম ওরফে সেলিম হুজুর একাই ৫৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার ২০টি কাজ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার তালতলা খাল খনন ও দুই পাড়ে রাস্তা নির্মাণ, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রিটেইনিং ওয়ালসহ ক্ষেত্রখালী পশ্চিম খালপাড় রোড উন্নয়ন (লাকির মার কালভার্ট থেকে উকিলের কালভার্ট) এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মোড়লপাড়া ড্রেন উন্নয়ন প্রকল্প।
এ ছাড়া সমাপ্ত কাজের মধ্যে রয়েছে, ২০২০ সালে ২ কোটি ৫১ লাখ টাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক মোড়ল সড়ক, ২০২১ সালে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খালিশপুর ১৭ নম্বর রোড উন্নয়ন, একই বছর ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বয়রা জংশন রোডের শেষাংশ উন্নয়ন, একই বছর ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে হাফিজনগরের রোড (ড্রেনসহ বাইলেন) উন্নয়ন, একই বছর ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে শেরে বাংলা রোড বাইলেন উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ১ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ফরাজীপাড়া লেন ও ড্রেন মেরামত প্রকল্প, ২০২২ সালে ১ কোটি ২২ লাখ টাকায় সিমেট্রি রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পুরাতন যশোর রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সাউথ সেন্ট্রাল রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ১৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে বিআইডিসি রোডের দ্বিতীয় অংশের উন্নয়ন প্রকল্প, ২০২৩ সালে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে গোলদারপাড়া ও কুন্ডুপাড়া রোড ও ড্রেন মেরামত, একই বছর ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে গগন বাবু রোড ও নতুন বাজার অ্যাপ্রোচ রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ১ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাগমারা প্রাইমারি স্কুল সড়ক ড্রেনসহ মেরামত প্রকল্প, একই বছর ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ গোড়া খালপাড় রোড ড্রেনসহ উন্নয়ন, একই বছর ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ আবু নাসের হাসপাতালের মোড় থেকে ক্ষুদেও খাল মোড় পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে ড্রেন নির্মাণ, একই বছর ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মল্লিক সড়ক আইডিয়াল কলেজের শেষাংশে ড্রেন নির্মাণ। এ ছাড়া চলতি ২০২৪ সালে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভৈরব স্ট্যান্ড রোড ড্রেনসহ মেরামত প্রকল্প।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স ছাড়াও এইচ এম সেলিম ওরফে সেলিম হুজুরের বেনামে সিটি করপোরেশনের আটটি ঠিকাদারি লাইসেন্স রয়েছে। ভাই, ভাতিজি, ছেলেসহ আত্মীয়স্বজনের নামে করা এসব লাইসেন্সর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিতেন। আর এসব বড় কাজ সাবেক মেয়র তালুকদার খালেক নেপথ্যে থেকে সেলিমকে দিয়ে করাতেন, যা বিভিন্ন সময়ে সেলিমও স্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯ (সিটি করপোরেশন)-এর ধারা ৯(২) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি মেয়র বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হওয়ার অথবা মেয়র বা কাউন্সিলর পদে থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি বা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের কাজ সম্পাদন বা মালপত্র সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন। অথবা তাঁরা এ ধরনের কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা সিটি করপোরেশনের কোনো বিষয়ে তাঁদের কোনো ধরনের আর্থিক স্বার্থ থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একসময় ঠেলাগাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন এইচ এম সেলিম। নতুন বাজার এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা সাত্তার খলিফার বড় ভাই কাদের খলিফার হাত ধরে বরগুনা থেকে খুলনায় আসেন। নতুন বাজার এলাকায় পাশাপাশি বসবাস করার সুবাদে সাবেক মেয়র তালুকদার খালেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে খালেকের বেনামে থাকা ঠিকাদারির কাজ দেখাশোনা শুরু করেন। এভাবে সেলিমও কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা আয় করেছেন।
সেলিম নগরীর ২১ লোয়ার যশোর রোডে ‘আরসিসি মান্নাফ হাইটস’ ৫ম তলায় একটি ফ্ল্যাট (এ-৪) কিনেছেন ৮৫ লাখ টাকায়। বর্তমানে সেখানেই বসবাস করছেন। এ ছাড়া ৩৭ মুন্সীপাড়া ২য় লেনে তাঁর ৮ কাঠা জমি রয়েছে, যার বর্তমান বাজার দাম প্রায় ৫ কোটি টাকা। ১ নম্বর কাস্টমস ঘাট এলাকায় ইট, বালু, সিমেন্টের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। একই এলাকায় ছোট ভাই হালিম হাওলাদার ওরফে মাজাই-এর নামে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করছেন। এ ছাড়া বেশির ভাগ সম্পত্তি কিনেছেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটার কালমেগা গ্রামে। নিজ গ্রামে তিনি মার্কেট নির্মাণসহ প্রচুর জমি কিনেছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে এইচ এম সেলিমের বক্তব্য নেওয়ার জন্য কয়েক দিন ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।
৫ আগস্টের পর বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর সম্প্রতি তিনি প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা শুরু করেন। একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেছেন বলে জানা গেছে। ৪-৫ দিন ধরে তিনি সিটি করপোরেশন ভবনে যাচ্ছেন বলেও জানা যায়।
কেসিসি ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা আরিফ হোসেন আরা বলেন, সাবেক মেয়র খালেক বেনামে ঠিকাদারি কাজ করে করপোরেশনকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেছেন। করপোরেশনের সিংহভাগ কাজই মেসার্স হোসেন ট্রেডার্সকে দেওয়া হতো। বড় কাজ ছাড়াও শহীদ মিনারের রঙের কাজ পর্যন্ত সেলিম হাওলাদারকে দেওয়া হতো। কাজ না পেয়ে অনেক ঠিকাদার নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান জানান, সময়মতো কাজ না করে ফেলে রাখার অভিযোগে মেসার্স হোসেন ট্রেডার্সকে এক বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তালুকদার আবদুল খালেক বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। বেনামে শতকোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে তালুকদার আবদুল খালেকের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দরপত্র প্রক্রিয়ায় আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। অনেক কিছুই জানি না। তারপরও কোনো অনিয়ম হলে খুঁজে বের করে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।’
খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক স্থানীয় সরকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অন্যের লাইসেন্স দিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনে শতকোটির বেশি টাকার কাজ করেছেন। গত চার বছরে বেনামে সবচেয়ে বেশি ঠিকাদারি কাজ করেছেন মেসার্স হোসেন ট্রেডার্সের লাইসেন্সে। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক এইচ এম সেলিম ওরফে সেলিম হাওলাদার ওরফে সেলিম মুন্সী ছিলেন সাবেক মেয়রের বিশ্বস্ত পার্টনার (অংশীদার)। সম্প্রতি এ প্রতিষ্ঠানটিকে এক বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত করে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যের লাইসেন্সে নিজেই ঠিকাদারি করতেন তালুকদার আবদুল খালেক। মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স, আজাদ ইঞ্জিনিয়ার্স ও মেসার্স তাজুল ইসলাম নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে গত কয়েক বছরে শতকোটি টাকার কাজ করেছেন তিনি।
ঠিকাদার এইচ এম সেলিম (সেলিম হুজুর) এসব কাজ দেখাশোনা করতেন। এর বাইরে ৫ শতাংশ কমিশনের ভিত্তিতে আরও প্রায় শতকোটি টাকার উন্নয়নকাজ বড় ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করেছেন। আবার লাইসেন্স ছাড়াই পছন্দের ব্যক্তি, আওয়ামী লীগের নেতা ও কাউন্সিলরদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন কোটি কোটি টাকার কাজ। এ কাজও বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়ে কিনতে হতো ঠিকাদারদের।
খুলনা সিটি করপোরেশনের পূর্ত শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত চার বছরে শুধু মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স সিটি করপোরেশনের লাইসেন্সে এইচ এম সেলিম ওরফে সেলিম হুজুর একাই ৫৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার ২০টি কাজ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার তালতলা খাল খনন ও দুই পাড়ে রাস্তা নির্মাণ, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রিটেইনিং ওয়ালসহ ক্ষেত্রখালী পশ্চিম খালপাড় রোড উন্নয়ন (লাকির মার কালভার্ট থেকে উকিলের কালভার্ট) এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মোড়লপাড়া ড্রেন উন্নয়ন প্রকল্প।
এ ছাড়া সমাপ্ত কাজের মধ্যে রয়েছে, ২০২০ সালে ২ কোটি ৫১ লাখ টাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক মোড়ল সড়ক, ২০২১ সালে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খালিশপুর ১৭ নম্বর রোড উন্নয়ন, একই বছর ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বয়রা জংশন রোডের শেষাংশ উন্নয়ন, একই বছর ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে হাফিজনগরের রোড (ড্রেনসহ বাইলেন) উন্নয়ন, একই বছর ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে শেরে বাংলা রোড বাইলেন উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ১ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ফরাজীপাড়া লেন ও ড্রেন মেরামত প্রকল্প, ২০২২ সালে ১ কোটি ২২ লাখ টাকায় সিমেট্রি রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পুরাতন যশোর রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সাউথ সেন্ট্রাল রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ১৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে বিআইডিসি রোডের দ্বিতীয় অংশের উন্নয়ন প্রকল্প, ২০২৩ সালে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে গোলদারপাড়া ও কুন্ডুপাড়া রোড ও ড্রেন মেরামত, একই বছর ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে গগন বাবু রোড ও নতুন বাজার অ্যাপ্রোচ রোড উন্নয়ন প্রকল্প, একই বছর ১ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাগমারা প্রাইমারি স্কুল সড়ক ড্রেনসহ মেরামত প্রকল্প, একই বছর ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ গোড়া খালপাড় রোড ড্রেনসহ উন্নয়ন, একই বছর ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ আবু নাসের হাসপাতালের মোড় থেকে ক্ষুদেও খাল মোড় পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে ড্রেন নির্মাণ, একই বছর ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মল্লিক সড়ক আইডিয়াল কলেজের শেষাংশে ড্রেন নির্মাণ। এ ছাড়া চলতি ২০২৪ সালে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভৈরব স্ট্যান্ড রোড ড্রেনসহ মেরামত প্রকল্প।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স ছাড়াও এইচ এম সেলিম ওরফে সেলিম হুজুরের বেনামে সিটি করপোরেশনের আটটি ঠিকাদারি লাইসেন্স রয়েছে। ভাই, ভাতিজি, ছেলেসহ আত্মীয়স্বজনের নামে করা এসব লাইসেন্সর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিতেন। আর এসব বড় কাজ সাবেক মেয়র তালুকদার খালেক নেপথ্যে থেকে সেলিমকে দিয়ে করাতেন, যা বিভিন্ন সময়ে সেলিমও স্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯ (সিটি করপোরেশন)-এর ধারা ৯(২) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি মেয়র বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হওয়ার অথবা মেয়র বা কাউন্সিলর পদে থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি বা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের কাজ সম্পাদন বা মালপত্র সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন। অথবা তাঁরা এ ধরনের কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা সিটি করপোরেশনের কোনো বিষয়ে তাঁদের কোনো ধরনের আর্থিক স্বার্থ থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একসময় ঠেলাগাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন এইচ এম সেলিম। নতুন বাজার এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা সাত্তার খলিফার বড় ভাই কাদের খলিফার হাত ধরে বরগুনা থেকে খুলনায় আসেন। নতুন বাজার এলাকায় পাশাপাশি বসবাস করার সুবাদে সাবেক মেয়র তালুকদার খালেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে খালেকের বেনামে থাকা ঠিকাদারির কাজ দেখাশোনা শুরু করেন। এভাবে সেলিমও কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা আয় করেছেন।
সেলিম নগরীর ২১ লোয়ার যশোর রোডে ‘আরসিসি মান্নাফ হাইটস’ ৫ম তলায় একটি ফ্ল্যাট (এ-৪) কিনেছেন ৮৫ লাখ টাকায়। বর্তমানে সেখানেই বসবাস করছেন। এ ছাড়া ৩৭ মুন্সীপাড়া ২য় লেনে তাঁর ৮ কাঠা জমি রয়েছে, যার বর্তমান বাজার দাম প্রায় ৫ কোটি টাকা। ১ নম্বর কাস্টমস ঘাট এলাকায় ইট, বালু, সিমেন্টের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। একই এলাকায় ছোট ভাই হালিম হাওলাদার ওরফে মাজাই-এর নামে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করছেন। এ ছাড়া বেশির ভাগ সম্পত্তি কিনেছেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটার কালমেগা গ্রামে। নিজ গ্রামে তিনি মার্কেট নির্মাণসহ প্রচুর জমি কিনেছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে এইচ এম সেলিমের বক্তব্য নেওয়ার জন্য কয়েক দিন ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।
৫ আগস্টের পর বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর সম্প্রতি তিনি প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা শুরু করেন। একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেছেন বলে জানা গেছে। ৪-৫ দিন ধরে তিনি সিটি করপোরেশন ভবনে যাচ্ছেন বলেও জানা যায়।
কেসিসি ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা আরিফ হোসেন আরা বলেন, সাবেক মেয়র খালেক বেনামে ঠিকাদারি কাজ করে করপোরেশনকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেছেন। করপোরেশনের সিংহভাগ কাজই মেসার্স হোসেন ট্রেডার্সকে দেওয়া হতো। বড় কাজ ছাড়াও শহীদ মিনারের রঙের কাজ পর্যন্ত সেলিম হাওলাদারকে দেওয়া হতো। কাজ না পেয়ে অনেক ঠিকাদার নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান জানান, সময়মতো কাজ না করে ফেলে রাখার অভিযোগে মেসার্স হোসেন ট্রেডার্সকে এক বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তালুকদার আবদুল খালেক বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। বেনামে শতকোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে তালুকদার আবদুল খালেকের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দরপত্র প্রক্রিয়ায় আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। অনেক কিছুই জানি না। তারপরও কোনো অনিয়ম হলে খুঁজে বের করে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে