পিছু হটবেই না সরকার

বিশেষ প্রতিনিধি ও  নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯: ৪৫
Thumbnail image

শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনেই রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ সংঘর্ষ। এর মধ্যে নাশকতাকারীদের সন্ত্রাসী-জঙ্গি আখ্যায়িত করে তাদের প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

দলীয় এই অবস্থান ছাড়াও নাশকতাকারী সন্ত্রাসীদের শক্ত হাতে দমন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে গতকাল রোববার নিরাপত্তাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভার পর তিনি এসব কথা বলেছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সরওয়ার-ই-আলম সরকার।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন যারা নাশকতা করছে, তারা কেউই ছাত্র নয়। তারা সন্ত্রাসী।’ 

এই অবস্থায় আজ সোমবার সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকায় আনতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই মার্চ আগামীকাল মঙ্গলবার হওয়ার কথা থাকলেও তা এক দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। 

এমন প্রেক্ষাপটে সরকারপ্রধান ও দলীয় প্রধানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আন্দোলনকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তাঁরা গতকাল বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত সহিংসতা শুরু করেছে। তাদের মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ করা হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে শক্ত হাতে দমন করা হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেখভালের দায়িত্ব পাওয়া বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক গতকাল ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পাড়া-মহল্লা, রাজপথে কঠিন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার পরামর্শ দিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘অভিভাবকগণ, সন্ত্রাসীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনাদের সন্তানদের ঘরে রাখুন। যারা রাস্তায় আছে, তাদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করছি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মো. আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর প্রমুখ। 

এদিকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে মোকাবিলা করতে চায় আওয়ামী লীগ। তবে বিশৃঙ্খলা করলে রাজনৈতিকভাবে শক্ত হাতে দমন করা হবে। সন্ত্রাস দমন আইনের প্রয়োগ করা হবে।

জাতীয় সংসদ ভবনের টানেলে গতকাল সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনগণের মধ্যে আন্দোলনের সাড়া না পেয়ে আজ সহিংসতা-সন্ত্রাস করে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি। তাদের পুরোনো দাবির সঙ্গে আন্দোলনকারীরাও একাত্মতা ঘোষণা করেছে। 

আরাফাত আরও বলেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ফেসবুক বন্ধ করা হচ্ছে। কাউকে দমানো বা থামানোর জন্য নয়। মানুষের আবেগ নিয়ে খেলছে সহিংসতাকারীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত