কম্পিউটার নষ্ট, কাজে আসছে না স্কুল ল্যাব

সুমন্ত চাকমা, জুরাছড়ি (রাঙামাটি)
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২২, ১২: ৪৪

শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে জ্ঞান বাড়াতে রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় দুটি উচ্চবিদ্যালয়ে রয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। ভুবনজয় সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও বনযোগীছড়া উচ্চবিদ্যালয়ের ডিজিটাল ল্যাবের কম্পিউটারগুলো দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে শিক্ষার্থীরা এসব কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারছে না।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরে বারবার জানানো হলেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের। তাঁদের দাবি, ল্যাব স্থাপনের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আর কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের বাস্তবায়িত ২০১৬ সালে ভুবনজয় সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও বনযোগীছড়া উচ্চবিদ্যালয়ে শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়। প্রতিটি ল্যাবে ১৭টি ল্যাপটপ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা বাড়ানোর জন্যই কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়। কিন্তু ভুবনজয় সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক-সংকটের কারণে এই ল্যাব আলোর মুখ দেখেনি; কখনো এসব ল্যাপটপ ব্যবহার করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। তবে বনযোগীছড়া উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সচল সাতটি কম্পিউটার দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার হয় বলে জানান বিদ্যালয়টির আইসিটি শিক্ষক জিতেষ চাকমা।

বনযোগীছড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেঘবর্ণ চাকমা বলেন, করোনাকালে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের বন্ধ থাকায় ১৭টি কম্পিউটারের মধ্যে ১০টি নষ্ট হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।

ভুবনজয় সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, অফিস কক্ষের পাশের কক্ষে ‘শেখ রাসেল ডিজিটার কম্পিউটার ল্যাব’-এর সাইনবোর্ড ঝোলানো। কক্ষটি তালাবদ্ধ। তালা খুলে দেখা গেছে কক্ষের মধ্যে ভুতুড়ে পরিবেশ, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে কম্পিউটারগুলো। ধুলাবালির আস্তরণ জমেছে কম্পিউটার ও চেয়ার-টেবিলে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. নয়ন ও শান্ত চাকমার বলে, বিদ্যালয়ে শিক্ষক-সংকটের কারণে দীর্ঘদিন কম্পিউটারগুলো অকেজো হয়ে থাকায় তারা কম্পিউটারের ব্যবহারিক জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জায়েদুর রহমান শিক্ষক-সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে ২৫টি পদের মধ্যে কর্মরত মাত্র আটজন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই আবার চলতি বছরে যোগদান করেছেন। নেই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।

শিক্ষক-সংকটের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা বাড়ানোর জন্যই ল্যাব সচল করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইউএনও জিতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন, দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় সুযোগ নিশ্চিত করতে নষ্ট কম্পিউটারগুলো সচলের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অতি জরুরি। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত