সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা
কিছুদিন প্রচণ্ড গরম পড়েছিল দেশজুড়ে। বৃষ্টির দেখা মিলছিল না। মানুষ প্রার্থনা করেছে, নানা ধরনের আচার পালন করেছে। অবশেষে বৃষ্টি এসেছে। তাপপ্রবাহের অস্বস্তির মধ্যে বৃষ্টি পরিবেশ শীতল করলেও দেখা দেয় আরেক বিপত্তি। টানা বৃষ্টিতে কিছুক্ষণের মধ্যে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট। তাই নতুন সমস্যা এখন জলাবদ্ধতা।
শনিবার সকালে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঢাকায় সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর এই সামান্য বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। কারওয়ান বাজারে জমে প্রায় হাঁটু পানি। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখাচ্ছে, বৃষ্টির পরে রাজধানীর মিরপুরসহ অনেক স্থানে হাঁটু পানি জমেছে। গত সোমবার চট্টগ্রামেও এমনটা ঘটেছে।
অনেক বছর ধরে এ চিত্রটিই আমরা দেখছি দুটি বড় শহরে। রাজধানী ঢাকার অভিজ্ঞতা ভালো নয়। বৃষ্টির অবিরাম ধারাপাত চলতে থাকলে পানিনিষ্কাশনের হতশ্রী চেহারাটা স্পষ্ট হয়ে যায় সবার সামনে। মতিঝিল থেকে সচিবালয়, ভিআইপি রোড থেকে অলিগলি—ঢাকার সর্বত্র এবার জলজট তৈরি হয়। কোনো বছর বেশি হয় আর কোনো বছর কম হয় বা এখন নয়, অন্য যুগে বেশি ছিল—তা নিয়ে তর্ক চলছে। তবু পরিসংখ্যান ছাড়াই বোধ হয় এটা বলা চলে যে এত দ্রুত এবং ব্যাপক পানি জমে যাওয়া নগরবাসী সাম্প্রতিককালেই দেখছে। কী করে দিন দিন এমন ভয়ানক আকার নিচ্ছে জলাবদ্ধতা, সেই ইতিহাস খোঁজার চেয়ে সমস্যার সমাধানে দৃষ্টি দেওয়াই শ্রেয়।
যাঁরা কথায় কথায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে নিয়ে ঠাট্টা করে এই সমস্যার সঙ্গে রাজনীতি মেশান, তাঁদের উদ্দেশে বলছি, সেই ভারী বৃষ্টি হলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যাওয়াটা নতুন ঘটনা নয়। ফি বছর লাগাতার বৃষ্টিতে শহরে পানি জমে। শহরের কেন্দ্রস্থলে, সচিবালয়ে বিগত জোট সরকারের আমলে পানি জমে গিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য এখনো চোখে ভাসে। তাই সমস্যা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ খুব কম।
এ বছরও আবহাওয়াবিদেরা অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছেন। তাই শঙ্কাও বাড়ছে। রাজধানীতে এমন বেশ কিছু জায়গা আছে, যেখানে প্রায় সারা বছরই কমবেশি পানি জমে থাকে। আর বর্ষাকালে তো কথাই নেই। জল থইথই এলাকাগুলো মূল সড়ক থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জমে থাকা নোংরা পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয় নাগরিকদের। পানি ঢুকে পড়ে ঘরের ভেতরেও।
ভারী বৃষ্টি হলে, বিশেষ করে কয়েক দিন ধরে বিরামহীন চললে পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়। একেবারে ডুবে যায় রাজধানী। আর ডুবন্তই থাকছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। অন্যান্য বিভাগীয় শহর থেকেও জলজটের খবর আসে প্রতিবছর। আসলে অবস্থাটা এখন এমন—বর্ষার দরকার নেই। বৃষ্টির আগে মেঘ দেখলেই ভেসে যায় আমাদের শহরগুলো। অথচ এই শহরগুলোর নিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা নানা সরকারের আমলে ব্যয় হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমাদের শহরগুলোর নিষ্কাশন এমন বেহাল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শহরের বাসিন্দারা। কিন্তু উত্তর নেই। নেই, কারণ শুধু মেয়রদের দোষ দিয়ে এই উত্তর পাওয়াও যাবে না।
যে কথা বলা হয়েছে বহুবার তা হলো, পানিনিষ্কাশনের কাজ হয়েছে এবং বহুবারই হয়েছে। কিন্তু পুরোটাই হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে, সমন্বয়হীনভাবে। এলাকাভিত্তিক বিচ্ছিন্নভাবে কাজ হয়েছে, বিভিন্ন সংস্থা তাদের মতো করে করেছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন নিজস্ব পরিকল্পনায় কিছু করতে পারেনি। কারণ এসব ব্যবস্থাপনায় ঢাকা ওয়াসা আছে, আছে আরও নানা সরকারি সংস্থা। ফলে সমন্বিত পরিকল্পনা না থাকায় সেসব কিছুই মানুষের কাজে এল না। শহরের নিষ্কাশন-সমস্যার কোনো সমাধান তো হলোই না; বরং মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ল।
রাজধানীর চারদিকে একসময় কত খাল ছিল। ছিল বেশ কিছু বড় জলাশয়ও। আগে যখন সেভাবে এই শহরে নিকাশি-নর্দমা তৈরি হয়নি, তখন প্রাকৃতিকভাবেই বর্ষার জল এই সব জলাশয়, নদী-খাল ও নিচু এলাকায় গিয়ে পড়ত। তাতে শহরে তেমন পানি জমত না। এখন একের পর এক জলাশয় বুজিয়ে তৈরি হচ্ছে বাড়িঘর আর স্থাপনা। ফলে শহরের নিজস্ব প্রাকৃতিক নিষ্কাশনব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। তার ওপর কৃত্রিমভাবে তৈরি নর্দমা বা উঁচু নালাগুলোও বিজ্ঞানসম্মতভাবে তৈরি না হওয়ায় শহরের পানি সব জমে গিয়ে তৈরি করে এই বেহাল অবস্থা।
এই শহরে মানুষের আচরণও আজ প্রশ্নের মুখে। সামাজিক মাধ্যমে সরকার বা মেয়রদের গালি দিয়ে, ট্রল করে মজা পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে পরিষ্কার হওয়া যায় না। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার যে অভ্যাস আমরা করেছি, যেভাবে পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলছি রাস্তায়, তা পৃথিবীর খুব কম দেশের নাগরিকেরাই করে।
এসব পলিথিন আর প্লাস্টিকে আটকে যাচ্ছে নালার মুখ। বৃষ্টি হলেই নালার পানিতে ভেসে যাচ্ছে রাস্তা। তবু আমাদের প্লাস্টিক ব্যবহারে কমতি নেই। শরীরে রোগ বাসা বাঁধতে পারে, বুঝতে কাণ্ডজ্ঞানই যথেষ্ট। সেই কাণ্ডজ্ঞান কি আছে আমাদের? বাজার বা বাড়ির জঞ্জাল রাস্তায় ফেলা আমাদের সংস্কৃতি। যেকোনো বাড়িতে খাবারের পর ময়লা ফেলা হচ্ছে নর্দমায়, বাড়ির বাইরে সদর রাস্তায়। যে নগরীর মানুষের এমন সংস্কৃতি, তারা আবার কর্তৃপক্ষকে দোষ দেয় কী করে, তারা আবার ট্রল করে কাকে নিয়ে?
আমাদের আরও কীর্তি আছে। যত আধুনিক হচ্ছি, প্রকৃতিকে ততই লুণ্ঠনের সামগ্রী বিবেচনা করছি আমরা। অরণ্য ও নদ-নদী সেই লুণ্ঠনের প্রধান শিকার। খাল-বিল দখল তো হয়েছেই, নদীও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। পানিপ্রবাহের যেসব পথ ছিল, সেই সবের ওপর যে পরিমাণ অত্যাচার হয়েছে, তা আক্ষরিক অর্থেই ভীতিপ্রদ। নদী ও অন্যান্য জলাশয় ভরাট করে, স্বাভাবিক গতি রোধ করে বিপুল পরিমাণে জৈব ও রাসায়নিক আবর্জনা ফেলে, অকল্পনীয় অবিবেচনায় আধুনিক নগরসভ্যতা গড়তে গিয়ে পানিপ্রবাহের সব পথ বন্ধ করে এখন কেবল মাতম করছি আমরা।
বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য আগে যেসব খাল ছিল, সেগুলো ভরাট করে ঘরবাড়ি-দালান করা হয়েছে। রাস্তা হয়েছে। এগুলো খাসজমি, যা কিনা ইজারা বা দালান করা বা ভরাট করার কথা নয়। ওয়াসা খালের পথ ধরে নয়, রাস্তা ধরে কালভার্ট অথবা পাইপ নালার নির্মাণ করেছে।এসব নালা সোজাসুজি পথে যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগের খালগুলো দখল ও ভরাটমুক্ত করে, ঠিকমতো নকশা করে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ করতে অনেক বছর লাগবে। কিন্তু কাজটা তো শুরু করতে হবে। শহরের সার্বিক নিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে প্রতিবছরই জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে হা-হুতাশ করতে হবে।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক
কিছুদিন প্রচণ্ড গরম পড়েছিল দেশজুড়ে। বৃষ্টির দেখা মিলছিল না। মানুষ প্রার্থনা করেছে, নানা ধরনের আচার পালন করেছে। অবশেষে বৃষ্টি এসেছে। তাপপ্রবাহের অস্বস্তির মধ্যে বৃষ্টি পরিবেশ শীতল করলেও দেখা দেয় আরেক বিপত্তি। টানা বৃষ্টিতে কিছুক্ষণের মধ্যে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট। তাই নতুন সমস্যা এখন জলাবদ্ধতা।
শনিবার সকালে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঢাকায় সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর এই সামান্য বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। কারওয়ান বাজারে জমে প্রায় হাঁটু পানি। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখাচ্ছে, বৃষ্টির পরে রাজধানীর মিরপুরসহ অনেক স্থানে হাঁটু পানি জমেছে। গত সোমবার চট্টগ্রামেও এমনটা ঘটেছে।
অনেক বছর ধরে এ চিত্রটিই আমরা দেখছি দুটি বড় শহরে। রাজধানী ঢাকার অভিজ্ঞতা ভালো নয়। বৃষ্টির অবিরাম ধারাপাত চলতে থাকলে পানিনিষ্কাশনের হতশ্রী চেহারাটা স্পষ্ট হয়ে যায় সবার সামনে। মতিঝিল থেকে সচিবালয়, ভিআইপি রোড থেকে অলিগলি—ঢাকার সর্বত্র এবার জলজট তৈরি হয়। কোনো বছর বেশি হয় আর কোনো বছর কম হয় বা এখন নয়, অন্য যুগে বেশি ছিল—তা নিয়ে তর্ক চলছে। তবু পরিসংখ্যান ছাড়াই বোধ হয় এটা বলা চলে যে এত দ্রুত এবং ব্যাপক পানি জমে যাওয়া নগরবাসী সাম্প্রতিককালেই দেখছে। কী করে দিন দিন এমন ভয়ানক আকার নিচ্ছে জলাবদ্ধতা, সেই ইতিহাস খোঁজার চেয়ে সমস্যার সমাধানে দৃষ্টি দেওয়াই শ্রেয়।
যাঁরা কথায় কথায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে নিয়ে ঠাট্টা করে এই সমস্যার সঙ্গে রাজনীতি মেশান, তাঁদের উদ্দেশে বলছি, সেই ভারী বৃষ্টি হলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যাওয়াটা নতুন ঘটনা নয়। ফি বছর লাগাতার বৃষ্টিতে শহরে পানি জমে। শহরের কেন্দ্রস্থলে, সচিবালয়ে বিগত জোট সরকারের আমলে পানি জমে গিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য এখনো চোখে ভাসে। তাই সমস্যা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ খুব কম।
এ বছরও আবহাওয়াবিদেরা অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছেন। তাই শঙ্কাও বাড়ছে। রাজধানীতে এমন বেশ কিছু জায়গা আছে, যেখানে প্রায় সারা বছরই কমবেশি পানি জমে থাকে। আর বর্ষাকালে তো কথাই নেই। জল থইথই এলাকাগুলো মূল সড়ক থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জমে থাকা নোংরা পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয় নাগরিকদের। পানি ঢুকে পড়ে ঘরের ভেতরেও।
ভারী বৃষ্টি হলে, বিশেষ করে কয়েক দিন ধরে বিরামহীন চললে পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়। একেবারে ডুবে যায় রাজধানী। আর ডুবন্তই থাকছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। অন্যান্য বিভাগীয় শহর থেকেও জলজটের খবর আসে প্রতিবছর। আসলে অবস্থাটা এখন এমন—বর্ষার দরকার নেই। বৃষ্টির আগে মেঘ দেখলেই ভেসে যায় আমাদের শহরগুলো। অথচ এই শহরগুলোর নিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা নানা সরকারের আমলে ব্যয় হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমাদের শহরগুলোর নিষ্কাশন এমন বেহাল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শহরের বাসিন্দারা। কিন্তু উত্তর নেই। নেই, কারণ শুধু মেয়রদের দোষ দিয়ে এই উত্তর পাওয়াও যাবে না।
যে কথা বলা হয়েছে বহুবার তা হলো, পানিনিষ্কাশনের কাজ হয়েছে এবং বহুবারই হয়েছে। কিন্তু পুরোটাই হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে, সমন্বয়হীনভাবে। এলাকাভিত্তিক বিচ্ছিন্নভাবে কাজ হয়েছে, বিভিন্ন সংস্থা তাদের মতো করে করেছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন নিজস্ব পরিকল্পনায় কিছু করতে পারেনি। কারণ এসব ব্যবস্থাপনায় ঢাকা ওয়াসা আছে, আছে আরও নানা সরকারি সংস্থা। ফলে সমন্বিত পরিকল্পনা না থাকায় সেসব কিছুই মানুষের কাজে এল না। শহরের নিষ্কাশন-সমস্যার কোনো সমাধান তো হলোই না; বরং মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ল।
রাজধানীর চারদিকে একসময় কত খাল ছিল। ছিল বেশ কিছু বড় জলাশয়ও। আগে যখন সেভাবে এই শহরে নিকাশি-নর্দমা তৈরি হয়নি, তখন প্রাকৃতিকভাবেই বর্ষার জল এই সব জলাশয়, নদী-খাল ও নিচু এলাকায় গিয়ে পড়ত। তাতে শহরে তেমন পানি জমত না। এখন একের পর এক জলাশয় বুজিয়ে তৈরি হচ্ছে বাড়িঘর আর স্থাপনা। ফলে শহরের নিজস্ব প্রাকৃতিক নিষ্কাশনব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। তার ওপর কৃত্রিমভাবে তৈরি নর্দমা বা উঁচু নালাগুলোও বিজ্ঞানসম্মতভাবে তৈরি না হওয়ায় শহরের পানি সব জমে গিয়ে তৈরি করে এই বেহাল অবস্থা।
এই শহরে মানুষের আচরণও আজ প্রশ্নের মুখে। সামাজিক মাধ্যমে সরকার বা মেয়রদের গালি দিয়ে, ট্রল করে মজা পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে পরিষ্কার হওয়া যায় না। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার যে অভ্যাস আমরা করেছি, যেভাবে পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলছি রাস্তায়, তা পৃথিবীর খুব কম দেশের নাগরিকেরাই করে।
এসব পলিথিন আর প্লাস্টিকে আটকে যাচ্ছে নালার মুখ। বৃষ্টি হলেই নালার পানিতে ভেসে যাচ্ছে রাস্তা। তবু আমাদের প্লাস্টিক ব্যবহারে কমতি নেই। শরীরে রোগ বাসা বাঁধতে পারে, বুঝতে কাণ্ডজ্ঞানই যথেষ্ট। সেই কাণ্ডজ্ঞান কি আছে আমাদের? বাজার বা বাড়ির জঞ্জাল রাস্তায় ফেলা আমাদের সংস্কৃতি। যেকোনো বাড়িতে খাবারের পর ময়লা ফেলা হচ্ছে নর্দমায়, বাড়ির বাইরে সদর রাস্তায়। যে নগরীর মানুষের এমন সংস্কৃতি, তারা আবার কর্তৃপক্ষকে দোষ দেয় কী করে, তারা আবার ট্রল করে কাকে নিয়ে?
আমাদের আরও কীর্তি আছে। যত আধুনিক হচ্ছি, প্রকৃতিকে ততই লুণ্ঠনের সামগ্রী বিবেচনা করছি আমরা। অরণ্য ও নদ-নদী সেই লুণ্ঠনের প্রধান শিকার। খাল-বিল দখল তো হয়েছেই, নদীও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। পানিপ্রবাহের যেসব পথ ছিল, সেই সবের ওপর যে পরিমাণ অত্যাচার হয়েছে, তা আক্ষরিক অর্থেই ভীতিপ্রদ। নদী ও অন্যান্য জলাশয় ভরাট করে, স্বাভাবিক গতি রোধ করে বিপুল পরিমাণে জৈব ও রাসায়নিক আবর্জনা ফেলে, অকল্পনীয় অবিবেচনায় আধুনিক নগরসভ্যতা গড়তে গিয়ে পানিপ্রবাহের সব পথ বন্ধ করে এখন কেবল মাতম করছি আমরা।
বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য আগে যেসব খাল ছিল, সেগুলো ভরাট করে ঘরবাড়ি-দালান করা হয়েছে। রাস্তা হয়েছে। এগুলো খাসজমি, যা কিনা ইজারা বা দালান করা বা ভরাট করার কথা নয়। ওয়াসা খালের পথ ধরে নয়, রাস্তা ধরে কালভার্ট অথবা পাইপ নালার নির্মাণ করেছে।এসব নালা সোজাসুজি পথে যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগের খালগুলো দখল ও ভরাটমুক্ত করে, ঠিকমতো নকশা করে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ করতে অনেক বছর লাগবে। কিন্তু কাজটা তো শুরু করতে হবে। শহরের সার্বিক নিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে প্রতিবছরই জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে হা-হুতাশ করতে হবে।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৭ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে