রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় এবং প্রয়োজনীয় স্যালাইনের সংকট দেখা দেওয়ায় স্যালাইন আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রাথমিকভাবে ভারত থেকে ৭ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছিল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। তবে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় সরকার আরও ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রতি ব্যাগের দাম ধরা হয়েছে ১৪৬ টাকা। অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত এক ব্যাগ স্যালাইন (৫০০ মিলি) বিক্রি করা হতো ২৫ টাকায় এবং প্রতি ব্যাগ ১০০০ মিলি স্যালাইন ৪২ টাকায়। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন ইউনিটটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এই ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা দৈনিক ১২ হাজার ব্যাগ। এমনকি বাংলাদেশ নৌবাহিনী বিনা খরচে স্যালাইন ইউনিটটি চালু করতে চাইলেও সাড়া দিচ্ছে না মন্ত্রণালয়।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ থাকায় আমদানির প্রতি দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আগ্রহ বেশি।
নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের প্রকৌশলীরা ৩০ দিনের মধ্যে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের আইভি ফ্লুইড তথা স্যালাইন ইউনিট চালু করতে সক্ষম। এর বিনিময়ে কোনো বিলও দাবি করা হবে না।
জানা যায়, ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) মাধ্যমে ২০ লাখ ব্যাগ আইভি ফ্লুইড (নরমাল স্যালাইন ১০০০ মিলি ও গ্লুকোজ স্যালাইন ১০০০ মিলি) সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কিনতে ক্রয় প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
ক্রয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় গত ১৩ আগস্ট স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় জরুরি পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরে ৭ লাখ ব্যাগ আইভি ফ্লুইড (নরমাল স্যালাইন ১০০০ মিলি এবং গ্লুকোজ স্যালাইন ১০০০ মিলি) কেনার সিদ্ধান্ত হয়। সেই আলোকে ইতিমধ্যে পিপিআরের (সরকারি ক্রয় বিধিমালা) বিধিবিধানের আলোকে তিন লাখ ব্যাগ আইভি ফ্লুইড সরাসরি কেনা হয়েছে। ধারণা করা হয়েছিল, এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব কমবে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ায় দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এতে দেশে আইভি ফ্লুইডের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার্থে জরুরি প্রয়োজনে আরও ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কেনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বিশেষ ব্যয় খাতের বরাদ্দ অর্থ থেকে এ ব্যয় বহন করা হবে। প্রস্তাবিত ২০ লাখ পিস স্যালাইন কেনার আনুষঙ্গিক খরচসহ সম্ভাব্য মূল্য ধরা হয়েছে ২৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। প্রতিটি স্যালাইনের দাম পড়বে ১৪৫ টাকা ৯৫ পয়সা। ভারতে এই স্যালাইনের (৫০০ মিলি) দাম ২৮ রুপি অর্থাৎ ৩৬ টাকা এবং ১০০০ মিলি স্যালাইনের দাম ৪৭ রুপি অর্থাৎ ৬০ টাকা ৬৩ পয়সা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা যায়, জরুরি স্বাস্থ্যপণ্য হিসেবে এই স্যালাইন আমদানিতে কোনো ভ্যাট-ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে না। পরিবহন ব্যয়, কাসটমস শুল্ক ও টিকাদারের লাভ যুক্ত করে স্যালাইনপ্রতি অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে ৮৬ টাকা। অথচ দেশের বেসরকারি কোম্পানির উৎপাদিত স্যালাইনের দাম রাখা হয় ৯০ থেকে ১১০ টাকা।
বিনা খরচে স্যালাইন ইউনিট চালু করে দেওয়ার প্রস্তাব জানা গেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স লিমিটেড থেকে গত ১৪ আগস্ট স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রীকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মাযহারুল ইসলামের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, এই প্রতিষ্ঠান পাঁচ বছর ধরে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের আইভি ফ্লুইড, ব্লাড ব্যাগ ও রিএজেন্ট শাখার সব যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, সরবরাহ ও স্থাপন করে আসছে। কিন্তু কোভিডের সময় হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠানটি এই শাখা বন্ধ করে দেয়। আইভি ফ্লুইড শাখা পুনরায় চালু করতে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠানের দক্ষ প্রকৌশলীরা মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে আইভি ফ্লুইড শাখা উৎপাদন সক্ষম করতে পারবেন। এর বিনিময়ে কোনো বিল দাবি করা হবে না।
এই চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেই চিঠির অনুলিপি আমার কাছে এসেছে। আমরা এই চিঠির আলোকে সামগ্রিক বিষয় লিখে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা এখনো আসেনি।’
জানা গেছে, নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স লিমিটেডের চিঠি আমলে নেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিব দেশের বাইরে থাকায় তাঁদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ
দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ইউনিট বন্ধ রেখে চড়া দামে বাইরে থেকে স্যালাইন আমদানি প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনার সময় থেকে আমরা জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন ইউনিটটি চালু করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু দেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আত্মনির্ভরশীলতায় আগ্রহী নন। তাঁরা আমদানির প্রতি বেশি আগ্রহী। কারণ, আমদানিতে কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ থাকে।’ তিনি মনে করেন, দেশের স্বার্থে সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্যালাইন ইউনিটটি অবিলম্বে চালু করা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে এরই মধ্যে দুই কিস্তিতে প্রায় ৫৩ হাজার ব্যাগ স্যালাইন এসে পৌঁছেছে। গত বুধবার এসেছে ২৭ হাজার ৭৮০ ব্যাগ। এর আগে সোমবার ২৫ হাজার ৪৭০ ব্যাগ স্যালাইন আনা হয়। ইনফিউশন (স্যালাইন) ও ইনজেকশন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান পলিফেব থেকে কেনা হচ্ছে এই স্যালাইন। প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান ভারতের হিমাচল প্রদেশের সোলানে। স্যালাইনের পরবর্তী চালানও সেখান থেকেই কেনা হবে। ভারতের জেনটেক্স ফার্মাসিউটিক্যালের মাধ্যমে এসব স্যালাইন আমদানি করছে ঢাকার জাস করপোরেশন।
খোলা ট্রাকে আনায় প্রশ্ন
বেনাপোল বন্দর থেকে খোলা ট্রাকে এসব ব্যাগ স্যালাইন ঢাকায় আনা হচ্ছে। এতে স্যালাইনের মান ঠিক থাকবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডা. ফয়জুল হাকিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, খোলা ট্রাকে আনার ফলে স্যালাইনের গুণগত মান নষ্ট হতে পারে। এই স্যালাইন রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেহেতু ডেঙ্গু চিকিৎসার প্রধান ব্যবস্থাপনা হলো ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট, তাই এ ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।
ফয়জুল হাকিম আরও বলেন, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ রেখে আমদানি করার যে নীতি নেওয়া হয়েছে, তাতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হবে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেশ ও দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় এবং প্রয়োজনীয় স্যালাইনের সংকট দেখা দেওয়ায় স্যালাইন আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রাথমিকভাবে ভারত থেকে ৭ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছিল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। তবে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় সরকার আরও ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রতি ব্যাগের দাম ধরা হয়েছে ১৪৬ টাকা। অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত এক ব্যাগ স্যালাইন (৫০০ মিলি) বিক্রি করা হতো ২৫ টাকায় এবং প্রতি ব্যাগ ১০০০ মিলি স্যালাইন ৪২ টাকায়। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন ইউনিটটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এই ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা দৈনিক ১২ হাজার ব্যাগ। এমনকি বাংলাদেশ নৌবাহিনী বিনা খরচে স্যালাইন ইউনিটটি চালু করতে চাইলেও সাড়া দিচ্ছে না মন্ত্রণালয়।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ থাকায় আমদানির প্রতি দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আগ্রহ বেশি।
নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের প্রকৌশলীরা ৩০ দিনের মধ্যে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের আইভি ফ্লুইড তথা স্যালাইন ইউনিট চালু করতে সক্ষম। এর বিনিময়ে কোনো বিলও দাবি করা হবে না।
জানা যায়, ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) মাধ্যমে ২০ লাখ ব্যাগ আইভি ফ্লুইড (নরমাল স্যালাইন ১০০০ মিলি ও গ্লুকোজ স্যালাইন ১০০০ মিলি) সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কিনতে ক্রয় প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
ক্রয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় গত ১৩ আগস্ট স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় জরুরি পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরে ৭ লাখ ব্যাগ আইভি ফ্লুইড (নরমাল স্যালাইন ১০০০ মিলি এবং গ্লুকোজ স্যালাইন ১০০০ মিলি) কেনার সিদ্ধান্ত হয়। সেই আলোকে ইতিমধ্যে পিপিআরের (সরকারি ক্রয় বিধিমালা) বিধিবিধানের আলোকে তিন লাখ ব্যাগ আইভি ফ্লুইড সরাসরি কেনা হয়েছে। ধারণা করা হয়েছিল, এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব কমবে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ায় দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এতে দেশে আইভি ফ্লুইডের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার্থে জরুরি প্রয়োজনে আরও ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কেনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বিশেষ ব্যয় খাতের বরাদ্দ অর্থ থেকে এ ব্যয় বহন করা হবে। প্রস্তাবিত ২০ লাখ পিস স্যালাইন কেনার আনুষঙ্গিক খরচসহ সম্ভাব্য মূল্য ধরা হয়েছে ২৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। প্রতিটি স্যালাইনের দাম পড়বে ১৪৫ টাকা ৯৫ পয়সা। ভারতে এই স্যালাইনের (৫০০ মিলি) দাম ২৮ রুপি অর্থাৎ ৩৬ টাকা এবং ১০০০ মিলি স্যালাইনের দাম ৪৭ রুপি অর্থাৎ ৬০ টাকা ৬৩ পয়সা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা যায়, জরুরি স্বাস্থ্যপণ্য হিসেবে এই স্যালাইন আমদানিতে কোনো ভ্যাট-ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে না। পরিবহন ব্যয়, কাসটমস শুল্ক ও টিকাদারের লাভ যুক্ত করে স্যালাইনপ্রতি অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে ৮৬ টাকা। অথচ দেশের বেসরকারি কোম্পানির উৎপাদিত স্যালাইনের দাম রাখা হয় ৯০ থেকে ১১০ টাকা।
বিনা খরচে স্যালাইন ইউনিট চালু করে দেওয়ার প্রস্তাব জানা গেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স লিমিটেড থেকে গত ১৪ আগস্ট স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রীকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মাযহারুল ইসলামের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, এই প্রতিষ্ঠান পাঁচ বছর ধরে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের আইভি ফ্লুইড, ব্লাড ব্যাগ ও রিএজেন্ট শাখার সব যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, সরবরাহ ও স্থাপন করে আসছে। কিন্তু কোভিডের সময় হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠানটি এই শাখা বন্ধ করে দেয়। আইভি ফ্লুইড শাখা পুনরায় চালু করতে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠানের দক্ষ প্রকৌশলীরা মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে আইভি ফ্লুইড শাখা উৎপাদন সক্ষম করতে পারবেন। এর বিনিময়ে কোনো বিল দাবি করা হবে না।
এই চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেই চিঠির অনুলিপি আমার কাছে এসেছে। আমরা এই চিঠির আলোকে সামগ্রিক বিষয় লিখে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা এখনো আসেনি।’
জানা গেছে, নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স লিমিটেডের চিঠি আমলে নেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিব দেশের বাইরে থাকায় তাঁদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ
দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ইউনিট বন্ধ রেখে চড়া দামে বাইরে থেকে স্যালাইন আমদানি প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনার সময় থেকে আমরা জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন ইউনিটটি চালু করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু দেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আত্মনির্ভরশীলতায় আগ্রহী নন। তাঁরা আমদানির প্রতি বেশি আগ্রহী। কারণ, আমদানিতে কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ থাকে।’ তিনি মনে করেন, দেশের স্বার্থে সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্যালাইন ইউনিটটি অবিলম্বে চালু করা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে এরই মধ্যে দুই কিস্তিতে প্রায় ৫৩ হাজার ব্যাগ স্যালাইন এসে পৌঁছেছে। গত বুধবার এসেছে ২৭ হাজার ৭৮০ ব্যাগ। এর আগে সোমবার ২৫ হাজার ৪৭০ ব্যাগ স্যালাইন আনা হয়। ইনফিউশন (স্যালাইন) ও ইনজেকশন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান পলিফেব থেকে কেনা হচ্ছে এই স্যালাইন। প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান ভারতের হিমাচল প্রদেশের সোলানে। স্যালাইনের পরবর্তী চালানও সেখান থেকেই কেনা হবে। ভারতের জেনটেক্স ফার্মাসিউটিক্যালের মাধ্যমে এসব স্যালাইন আমদানি করছে ঢাকার জাস করপোরেশন।
খোলা ট্রাকে আনায় প্রশ্ন
বেনাপোল বন্দর থেকে খোলা ট্রাকে এসব ব্যাগ স্যালাইন ঢাকায় আনা হচ্ছে। এতে স্যালাইনের মান ঠিক থাকবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডা. ফয়জুল হাকিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, খোলা ট্রাকে আনার ফলে স্যালাইনের গুণগত মান নষ্ট হতে পারে। এই স্যালাইন রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেহেতু ডেঙ্গু চিকিৎসার প্রধান ব্যবস্থাপনা হলো ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট, তাই এ ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।
ফয়জুল হাকিম আরও বলেন, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ রেখে আমদানি করার যে নীতি নেওয়া হয়েছে, তাতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হবে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেশ ও দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৫ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪