হলে সিট বিক্রির অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ০৭: ৪২
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১০: ০৮

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলো খুলতে না খুলতেই সিট দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ইতিমধ্যে হলের রুমে রুমে গিয়ে খালি সিটের তালিকা তৈরি করেছে। এমনকি হল প্রাধ্যক্ষের তুলে দেওয়া ছাত্রকে বের করে সিট দখলের ঘটনাও ঘটেছে। খালি সিটগুলোতে তাঁরা টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থী তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রুমে রুমে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার বিষয়টি হল ছাত্রলীগের হোম ওয়ার্কের মধ্যেই পড়ে। তবে টাকার বিনিময়ে হলে ওঠানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেড় বছর বন্ধ থাকার পর চলতি মাসের ১৭ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলেছে। করোনাকালে আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকলেও বিভাগগুলোতে অনার্স ও মাস্টার্সের পরীক্ষা হয়েছে। অনেক আবাসিক শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ডিগ্রি শেষ করে ইতিমধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। ফলে আবাসিক হলগুলোতে বেশ কিছু সিট ফাঁকা হয়েছে।

জানা যায়, ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের রুমে রুমে গিয়ে কোন সিট কবে ফাঁকা হচ্ছে—সে তালিকা করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এরপর গত সোমবার রাতে শাহ মখদুম হলেও শিক্ষার্থীদের রুমে রুমে গিয়ে তথ্য নিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা। নাম এবং কখন মাস্টার্স শেষ হবে, সম্ভাব্য হল ছাড়ার তথ্য নিয়েছেন তাঁরা। অন্যান্য হলেও একইভাবে তালিকা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

মাদার বখ্শ হলের রুমে রুমে গিয়ে ফাঁকা সিটের খোঁজ নেওয়ার সময় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওই হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হামিম শাফায়াত প্রিন্স। জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের ট্রাডিশন বিভিন্ন রুমে গিয়ে অনাবাসিক শিক্ষার্থী কারা আছে খোঁজ নেওয়া। আমরা এটি করেছি প্রাধ্যক্ষ স্যারকে জানিয়েই।’

এ বিষয়ে মাদার বখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. শামীম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ‍মুঠোফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বাইরে আছি। এই সপ্তাহে ব্যস্ত থাকব। আগামী সপ্তাহে অফিসে এলে তখন এ বিষয়ে কথা বলব।’

এদিকে, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা দখল করা সিটগুলোতে টাকার বিনিময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিটপ্রতি গুনতে হচ্ছে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

গত ১৭ অক্টোবরের পর টাকা দিয়ে হলে উঠেছেন—এমন অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। শিক্ষার্থীরা জানান, সিঙ্গেল রুমে উঠতে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। এ ছাড়া ডাবল ও ট্রিপল সিটের ‍রুমের জন্য তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা নিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জুলকার নায়েন বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। তিনি আজকের পত্রিকাকে শুধু বলেন, ‘স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে কিছু ঘটলে সেটি অবশ্যই অস্বস্তির।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত