Ajker Patrika

পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১: ১৮
পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তি

টাঙ্গাইল পৌরসভায় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের গ্রাহক। বিল বকেয়া না থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রাহকেরা। ইতিমধ্যেই অনেকে পানির লাইন কেটে দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

সরেজমিনে শহরের দেওলা, কোদালিয়া, কলেজপাড়া, বটতলা, তালতলা, আকুরটাকুর পাড়া, আদালতপাড়া, থানাপাড়া ও বাজিতপুর সাহাপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পানিসংকটের এ তথ্য জানা গেছে। তাঁদের অভিযোগ ওই এলাকার গ্রাহকেরা সপ্তাহখানেক ধরে চরম পানির সংকটে রয়েছেন। কিছু বাড়ি পানি পেলেও তাতে সারা দিনেও ভর্তি হচ্ছে না বালতি। স্থানীয় কাউন্সিলরদের অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা।

এ বিষয়ে বাজিতপুর সাহাপাড়ার বাসিন্দা রোকেয়া বেগম বলেন, চার-পাঁচ দিন ধরে ঠিকমতো পানি পাচ্ছেন না তাঁরা। প্রতিবেশীদের বাসাবাড়ি থেকে টিউবওয়েলের পানি এনে কাজ করতে হচ্ছে। পানি না থাকায় তাঁদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।

জয়া সাহা বলেন, ‘পৌরসভার সরবরাহের পানি বাবদ প্রতি মাসে ২৫০ টাকা বিল দিচ্ছি। তবে এরপরও বেশ কিছুদিন ধরে স্বাভাবিকভাবে পানি পাচ্ছি না। সপ্তাহখানেক ধরে একবারেই পাচ্ছি না। এ কারণে কষ্ট হলেও অন্যের বাড়ি থেকে পানি এনে বাড়িঘরের কাজ করতে হচ্ছে।’

সাহাপাড়ার বাসিন্দা গৌতম সাহার ছেলে দেবাশীষ সাহা অপু বলেন, ‘এ এলাকায় পৌরসভার পানি সরবরাহের শতাধিক সংযোগ রয়েছে। পাঁচ-ছয় দিন ধরে সরবরাহের একটু পানিও পাচ্ছি না। টিউবওয়েলের পানি দিয়ে চলছে বাসাবাড়ির কাজ। আমরা লিখিতভাবে কাউকে কোনো অভিযোগ না করলেও সমস্যায় ভুগছি। সরবরাহের পানি বাবদ মাসে ৬০০ টাকা করে বিল দিচ্ছি।’

১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বাদশা বলেন, ‘আমি ভীষণ অসুস্থ, ঢাকায় চিকিৎসা নিতে এসেছি, তাই বিষয়টি আমার জানা নেই।’

পানি সরবরাহ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, গ্রাহক-চাহিদার তুলনায় ঘাটতি পানির পরিমাণ ১ কোটি ৭০ লাখ লিটার। এরই মধ্যে শুষ্ক মৌসুমে পানির লেয়ার আরও নিচে নেমে যাওয়ায় সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইবনে মায়াজ প্রামাণিক জানান, টাঙ্গাইল পৌরসভার পানি সরবরাহের জন্য দুটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (শোধনাগার) নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর জানান, পানি সরবরাহের পাম্প মেশিনের চার ইউনিটের ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ইঞ্জিনগুলো সার্ভিসিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। সার্ভিসিং শেষে স্থাপন করা হলে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। এ ছাড়াও ঘাটতি পানির সমস্যা নিরসনে দুটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (শোধনাগার) ওভার হেড ট্যাংক নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

টাঙ্গাইল পৌরসভার পানি সরবরাহকেন্দ্রের তথ্যে জানা গেছে, মোট গ্রাহক ৭ হাজার ৭০৩। প্রতিটি সংযোগে ব্যাস অনুযায়ী বিল রয়েছে। এর মধ্যে হাফ ইঞ্চি ব্যাসের সংযোগ ফি ২৫০ টাকা, পৌনে ১ ইঞ্চির ৬০০ আর ১ ইঞ্চি ব্যাসের ১ হাজার ৬০০ টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন ব্যাসের কর্তনকৃত সংযোগের সংখ্যা ২ হাজার ৬০টি। শোধনাগারের সংখ্যা ৩টি। প্রতিটির মজুত পানির পরিমাণ ৩০ লাখ লিটার। মোট মজুত পানির পরিমাণ ৯০ লাখ লিটার। প্রতিদিনের পানির চাহিদা ২ কোটি ৫০ লাখ লিটার। প্রতিদিন সরবরাহ হচ্ছে গড়ে ৮০ লাখ লিটার। ঘাটতি পানির পরিমাণ ১ কোটি ৭০ লাখ লিটার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত