তিন মাস ধরে কাজ বন্ধ ১৫টি জায়গায় ভাঙন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২২, ১২: ২৮

বালু-সংকটের অজুহাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের মেঘনা তীর রক্ষা বাঁধের কাজ তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে নতুন করে এই দুই উপজেলায় ১৫টি স্থানে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের আতঙ্ক আর ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কায় এখন কাটছে উপকূলবাসীর নির্ঘুম রাত। এ নিয়ে বাঁধের কাজ শুরুর আট মাসে একাধিকবার বালু-সংকটের কারণ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করা হয়। বাঁধের কাজ বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও বিশেষ দোয়া মোনাজাতও করেন সর্বস্তরের মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি কমলনগর উপজেলার সাহেবের হাট ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের উদ্বোধন করেন। এরই মধ্যে ১৩ জন ঠিকাদার কাজ শুরু করেন। কিন্তু উদ্বোধনের পর এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে যতটুকু কাজ হওয়ার কথা ছিল এর এক ভাগও হয়নি।

বরং কাজ না করে মে মাসে বালুর সংকট দেখিয়ে বাঁধের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বালুর সংকট দূর করে জুনের শুরুতে আবারও শুরু হয় বাঁধের নির্মাণকাজ। জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু হয়। কিন্তু কাজ শুরু হলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে আবারও বালুর সংকট দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। কবে শুরু হবে, তা-ও নিশ্চিত নয়। এর ফলে দুই উপজেলার ১৫টি পয়েন্টে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে মেঘনার ভাঙন। দিশেহারা সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নদীতীরের কয়েক লাখ মানুষ।

রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলাল বলেন, জিও ব্যাগ ডাম্পিং তিন মাস বন্ধ থাকার পর তীররক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হলেও তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে প্রতিনিয়ত ভয়াবহ ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো কাজ করছে না।

‘কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চে’র আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, তীররক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল টেকের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কয়েকজন ঠিকাদার প্রথমে বাঁধের কাজ পান। এর মধ্যে ন্যাশনাল টেক একটি। কিন্তু বাঁধের কাজ শুরুতে বালুর সংকটে ব্যাহত হয়। বালুর সংকট কাটিয়ে পুরোদমে কাজ শেষ শুরু হলেও পুনরায় একই সংকটে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে কখন শুরু করা হবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ বলছেন, বালু-সংকটের কারণে বাঁধের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে সংকট কাটিয়ে আবারও পুরোদমে কাজ শুরু করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত