Ajker Patrika

পানির তীব্র সংকটে হাহাকার

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৩
পানির তীব্র সংকটে হাহাকার

শুষ্ক মৌসুম ও অনাবৃষ্টির কারণে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এ কারণে বেশির ভাগ নলকূপ ও সেচযন্ত্রে পানি উঠছে না। এতে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানির জন্য হাহাকার বাড়ছে মানুষের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ নলকূপ এবং শ্যালো মেশিনে পানি উঠছে না। সুপেয় পানি পান করা, বসতবাড়িতে গোসল করা, রান্না করা, ফলে জমিতে সেচ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় কাজ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে দয়ারামপুর ও ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উপজেলায় ২০ হাজারের বেশি নলকূপ অকেজো হয়ে গেছে। শুধু ডিপ সিলিন্ডার ও তারা পাম্পগুলোতে পানি পাওয়া যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দয়ারাপুর, বাটিকামারী, ক্ষিদ্রমালঞ্চি, কালিকাপুর, জিগরী, বিলগোপালহাটি, স্বরূপপুর, সাইলকোনা এবং কামারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় বসতবাড়িতেই পানির অভাবে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। জল মোটর (সাবমার্সিবল পাম্প) ছাড়া হাতে গোনা দু-একটি নলকূপে অল্প অল্প করে পানি উঠছে। দু-একটি সেচযন্ত্রে পানি উঠছে। তাতেও অনেক সময় ও খরচ বেশি লাগছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খাল-বিল, পুকুর, এমনকি বড়াল ও মূসা খাঁ নদ শুকিয়ে যাওয়ায় রমজানের শুরু থেকেই পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। পানির অভাবে আম-লিচুর কড়ি ঝরে পড়ছে। খেতের ফসল নেতিয়ে পড়ছে।

ক্ষিদ্রমালঞ্চি গ্রামের সাজেদুর রহমান বলেন, তাঁদের এলাকায় ২০০টি নলকূপ আছে। এর মধ্যে মাত্র ৫ থেকে ৭টি নলকূপে পানি উঠছে। তাও হাতল চেপে পানি তুলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।

স্বরূপপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁর টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। একটু দূরে অন্যের বাড়ি থেকে সুপেয় পানি নিয়ে আসছেন। তাঁর এলাকায় ৮০টি নলকূপের মধ্যে মাত্র ৩ থেকে ৪ টিতে কোনো রকম পানি উঠছে।

বিলগোপালহাটি গ্রামের কৃষক হাসান আলী বলেন, জমিতে সেচ দেওয়ার মতো এলাকায় প্রায় ২০টি বোরিং রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র দুটিতে কোনো রকম পানি উঠছে। তাও সময় অনেক বেশি লাগছে। আগে যেখানে এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে দুই ঘণ্টা সময় ও ৫০০ টাকা লাগত, এখন সেই পরিমাণ জমিতে প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময় ও এক হাজার টাকা লাগছে। সেচ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

দেবনগর এলাকার ইরি ধান চাষি ওয়াসিম বলেন, চলতি মৌসুমে সোনার বিলে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। ধানগাছে এখন দানা হচ্ছে। এমন সময় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গর্ত খুঁড়ে শ্যালো মেশিন নিচে বসিয়েও পানি তোলা যাচ্ছে না। এখন কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।

উপজেলার জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে উপজেলাজুড়েই পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এখন উপজেলার বরাদ্দকৃত ডিপ সিলিন্ডার টিউবওয়েলগুলো বেশি সংকটপূর্ণ স্থানগুলোতে ১০ থেকে ১২টি বাড়ি প্রতি একটি করে বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে সংকট কিছুটা লাঘব হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী বলেন, ‘লালপুর-বাগাতিপাড়া এমনিতেই খরাপ্রবণ এলাকা। তারপর আবার দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি না থাকায় পানির লেয়ার নিচে নেমে গেছে। সে জন্য পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলেই এ সমস্যা থাকবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত