সমীহর সুর দুই দলেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২২, ০৭: ৩১
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, ১০: ৩২

যেকোনো সিরিজ শুরুর আগে প্রতিপক্ষ যত দুর্বলই হোক না কেন, সৌজন্য দেখিয়ে সমীহ করা খেলায় খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। নিজেদের সবচেয়ে খারাপ সময়েও প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সমীহ পাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ দলেরও। তবে সে সময়টা পেছনে ফেলে এসেছে তারা।

অবশ্য গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ বেশির ভাগ সময়ে সমীহ পেয়েছে দেশের মাঠে। ওয়ানডে সংস্করণে দেশের বাইরেও পেয়েছে। তবে এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশ যে সমীহটা পাচ্ছে, সেটি আর নিছকই সৌজন্যের খাতিরে নয়; প্রতিপক্ষ বাংলাদেশকে সমীহ করছে আক্ষরিক অর্থেই। প্রোটিয়া টেস্ট অধিনায়ক ডিন এলগার সাংবাদিকদের যেমনটা বলছিলেন, ‘টেস্ট সিরিজ খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এ দলটা আগের বাংলাদেশ নয়। বিদেশি কোচিং স্টাফে সমৃদ্ধ, খেলোয়াড়দের মানসিকতা পরিবর্তনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় কীভাবে খেলতে হয়, সে ব্যাপারে।’

আগের ১২ টেস্টের ১০টিই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টির সৌজন্যে বাকি দুটি হয়েছে ড্র। তবু এলগারের এই সমীহ দেখানোর পেছনে কদিন আগে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের বড় ভূমিকা থাকতে পারে। প্রোটিয়ারা ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই। দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট অধিনায়ক এলগারের সে সুযোগটাও হচ্ছে না। আইপিএল খেলতে যাওয়ায় কাগিসো রাবাদা-এইডেন মার্কারামদের মতো একঝাঁক তারকা ছাড়াই উজ্জীবিত বাংলাদেশের সামনে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। ব্যাটিংয়ে হয়তো অভিজ্ঞ বাভুমা, কদিন আগে ঘরের মাঠে ভারত সিরিজের সিরিজ-সেরা কেগান পিটারসেনদের নিয়ে ক্ষতিটা পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা করবেন এলগার। তাঁর চিন্তা হতে পারে বোলিং বিভাগকে নিয়ে। এ বছর এখন পর্যন্ত টেস্ট উইকেট শিকারিদের শীর্ষে আছেন রাবাদা ও মার্কো ইয়ানসেন (২৩ উইকেট)। আইপিএলকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় তাঁদের পাচ্ছেন না এলগার। দলে থাকা পাঁচ পেসারের দুজনের এখনো টেস্ট অভিষেক হয়নি, বাকি তিনজন মিলে খেলেছে ১৭ টেস্ট। ৪০ টেস্ট খেলা কেশব মহারাজই হতে যাচ্ছেন এলগারের সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

দলে সেরা খেলোয়াড়দের না পেলেও নতুন লড়াইয়ে লুথো সিপামলা-ডুয়ান অলিভিয়ারদের নিয়েই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এলগার। প্রোটিয়া অধিনায়ক বললেন, ‘আমার দলে আইপিএলে খেলা খেলোয়াড়েরা নেই ঠিকই। কিন্তু যারা আছে, ওরাও ভালো। আমি ওদের নিয়েই আত্মবিশ্বাসী। ওদের সঙ্গে আমার বিস্তারিত কথা হয়েছে।’

দক্ষিণ আফ্রিকার পুরো বিপরীত ছবি বাংলাদেশ দলে। কোচিং প্যানেলে দক্ষিণ আফ্রিকানদের উপস্থিতি, সাকিব আল হাসান বাদে টেস্টের নিয়মিত মুখের সবাই আছেন, ওয়ানডে সিরিজজাত আত্মবিশ্বাস—তবু এই সিরিজেও নিজেদের ফেবারিট মানছেন না বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। দলের ওপর থেকে প্রত্যাশার চাপ সরিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে নিজের দলকে যেভাবে ‘আন্ডারডগ’ বলেছিলেন কোচ, টেস্টের সিরিজের আগেও তিনি সেটিই বলছেন। গতকাল ডারবানে সংবাদমাধ্যমকে বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘ওরা তাদের হোম কন্ডিশনে খেলবে। আমরা আন্ডারডগ হিসেবে নিজেদের শতভাগ দেব। ভালো খেললে ফল পক্ষেই আসবে।’

বিদেশের মাঠে টেস্টে কীভাবে ফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে হয়, সে গত জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ। হয়তো সে সাফল্য মনে করেই ডমিঙ্গো বলছেন, এই সিরিজটা দুই দলের জন্যই কঠিন হবে।

গতকাল আজকের পত্রিকায় বিশ্লেষণ করা হয়েছিল, কীভাবে ডারবানের উইকেটে গত ১০ বছরে স্পিনাররা সফল হয়েছেন। এই টেস্টের আগেও প্রসঙ্গটা এসেছে। প্রোটিয়া টেস্ট অধিনায়ক এলগার বলছিলেন, ‘খেলা যত সামনে গড়ায় সাধারণত কিংসমিডের উইকেট মন্থর ও নিচু হয়। তাতে স্পিনাররা সহায়তা পায়। তবে মনে হচ্ছে এবার ভালো উইকেট উপহার দেওয়ার সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। এখনো ঘাস আছে, আশা করি ভালো পেস ও বাউন্স মিলবে এবং পাঁচ দিনই উইকেট ভালো থাকবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত