খরস্রোতা থেকে মরা খাল

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) 
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২১, ০৭: ৪৭
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ৫৫

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা শাখা যমুনা নদীটি দীর্ঘদিন খনন না করায় মরা খালে পরিণত হয়েছে। বছরের অধিকাংশ সময় নদীতে পানি না থাকায় ক্রমেই দখল হয়ে যাচ্ছে এর পাড়। একই সঙ্গে ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। অন্যদিকে রাবারড্যাম নির্মাণ করে বর্ষার পানি ধরে রেখে নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া শাখা যমুনা নদীটি রংপুর জেলার তিস্তা নদী থেকে প্রবাহিত হয়ে দিনাজপুরের বিরামপুর ও হাকিমপুর উপজেলা হয়ে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের কিছু দূর প্রবাহিত হয়ে আবারও নওগাঁর ত্রিমোহিনী যমুনা ও আত্রাই নদীতে মিলিত হয়েছে। এর মধ্যে ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য ৭০ হাজার কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৮৫ হাজার মিটার।

জানা যায়, একসময় এই নদীর পানি দিয়ে চলত এই অঞ্চলের কৃষকের চাষাবাদ ও গৃহস্থালির কাজ। নদীর মাছ দিয়ে এই অঞ্চলের মানুষের দেশি মাছের চাহিদা মিটত। জীবিকা নির্বাহ করত অনেক জেলে সম্প্রদায়।

বর্তমান সময়ে বর্ষাকালে নদীতে পানি দেখা গেলেও পরে আর পাওয়া যায় না। ফলে নদী এলাকার কৃষিকাজ এখন সেচপাম্পের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এতে করে দিন দিন ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছে সচেতন মহল।

ফুলবাড়ী নদী বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ওয়াজেদুর রহমান বাবলু বলেন, ‘আমাদের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য নির্ভর করে নদীর ওপর। তাই নদীটিকে বাঁচাতে খনন করার জোর দাবি জানাই।’

দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, নদী খননের বিষয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় শিগগির বরাদ্দ পাওয়া যাবে। বরাদ্দ পেলে শাখা যমুনা নদীটির খননকাজ শুরু হবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাজনুন্নাহার মায়া জানিয়েছেন, নদীতে পানি না থাকায় দেশি প্রজাতির মাছের বংশ হারিয়ে যাচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী সাধুপানিতে ২০১ প্রজাতির মাছ থাকলেও, এই অঞ্চলে প্রায় ৫০ প্রকার মাছ আর দেখা যায় না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত