জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ঢাকায় এসেছিলেন ছানি অপারেশন নিয়ে বক্তৃতা করতে। কথায় কথায় জানালেন, শরীয়তপুরের রুদ্রকরে তাঁর পূর্বপুরুষেরা থাকতেন। দেখা যাবে নাকি গ্রামটা—জানতে চাইলেন অরূপ চক্রবর্তী।
শুরুতেই কবুল করলেন, তাঁদের পরিবার ১৯৪৭ সালে এই এলাকা থেকে চলে গেছে ভারতে, এরপর আর বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তখন তাঁর জন্মও হয়নি। তিনি এখন থাকেন কেরালায়। চক্ষুবিশেষজ্ঞ। ৯৬ বছর বয়সী বাবা যখন শুনলেন, ছেলে ঢাকায় যাচ্ছে, বললেন, ‘একবার ভিটেটা ঘুরে আসিস।’ লিখে দিয়েছেন কোথায় ছিল বাড়িটা, কারা কারা থাকতে পারে গ্রামে।
ইসলামিয়া চক্ষুহাসপাতালের কয়েকজন চক্ষু বিশেষজ্ঞকে নিয়ে তিনি চললেন শরীয়তপুরের উদ্দেশে।
অরূপ বাংলাতেই কথা বলেন। ১৯৭১ সালে ছিলেন আগরতলায়। বয়স ছিল কম। সে সময় বাংলাদেশ থেকে চেনাজানা অনেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁদের বাড়িতে গিয়ে নিয়েছিলেন আশ্রয়।
মাইক্রোবাস থেকে বাবাকে একবার ফোন করে কোথায় যেতে হবে তা আরও নিশ্চিত হয়ে নিলেন অরূপ। বাবা যে ঠিকানা, যে নামগুলো লিখে দিয়েছিলেন, সেগুলো পড়লেন। গাড়ি যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছিল, তখন চিকিৎসকদের একজন মোবাইলে ছেড়ে দিলেন ‘পদ্মার ঢেউ রে…’।
সরু একটা পথ দিয়ে শরীয়তপুরের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে মাইক্রোবাসটা একসময় রুদ্রকরে পৌঁছে গেল। রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের সামনের পুকুরপাড়ে দেখা গেল একজন বর্ষীয়ান ভদ্রলোককে। কেন যেন মনে হলো, তিনিই বলতে পারবেন অরূপের ঠিকুজি।
‘আপনি কি মনকুমার চক্রবর্তীকে চেনেন?’
‘চিনব না ক্যান? রুদ্রকর গ্রামে ছিলেন। বহু আগে ইন্ডিয়ায় চইলা গেছেন।’
‘তিনি আমার বাবা হন।’
এরপর সেই ভদ্রলোক, মানে ইসহাক মুন্সী নিখুঁতভাবে বলে যেতে থাকলেন অরূপদের পারিবারিক ইতিহাস। চাঁদপুরে ছিল অরূপদের শহরের বাড়ি। ছিল কয়লার কারবার। রুদ্রকরে মুরলী দিঘির ধারে তাঁদের গ্রামের বাড়ি। হাসান খাঁয়ের পরিবারের লোকেরা সেখানে থাকেন এখন। অথচ ৮০০ বছর ধরে চক্রবর্তী পরিবারের বাস ছিল এই রুদ্রকরে।
পথেই দেখা হয়ে যায় ঝন্টু কুমার গাঙ্গুলির সঙ্গে। এই যুবকও জানেন, চক্রবর্তীদের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক ছিল তাঁদের। তাঁর বাবা বেঁচে আছেন। হাফিজুর রহমানের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। একাত্তরে আগরতলায় গিয়ে শুরুতে উঠেছিলেন মনকুমারের বাড়িতে। অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি ছোট ছিলাম, তবে সেখানে তাহলে আপনার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে।’ হাফিজুর রহমানও সঙ্গ নিলেন। হাতে ফল আর চানাচুর, যা দিয়ে আপ্যায়ন করেছিলেন পরে।
কথায় কথায় জানা গেল, চক্রবর্তীদের সে সময়ের একটা ঘর আর একটা দালান এখনো আছে।
যে সরু রাস্তাটা ঢুকে গেছে গ্রামে, সেটা জানিয়ে দিল, বাংলাদেশের বহু গ্রাম এখনো গ্রামের মতোই আছে। একসময় ঝন্টু দেখিয়ে দেন, কোথা থেকে শুরু হচ্ছে চক্রবর্তীদের সীমানা। তারপর সেই ঘরটির কাছে চলে আসেন, যে ঘরটি গড়েছিলেন চক্রবর্তীরা। এখন সেখানে হাসান খাঁর বংশধরেরা বসবাস করছেন। আর সেই দালান? সেটা গাছ আর লতাপাতায় ছেয়ে গেছে।
অরূপ চক্রবর্তী স্মার্টফোনে বাবার সঙ্গে কথা বলেন। বাড়ি দেখান। ৯৬ বছর বয়সী মনকুমারের মন উদ্বেলিত হয়ে ওঠে।
যাঁরা এখন সে বাড়িতে বসবাস করেন, তাঁরা হৃদয় খুলে বলেন, ‘আপনারা তো আমাদের আত্মীয়। এ বাড়ি তো আপনাদেরই। তাতে সখ্য প্রগাঢ় হলো।’
নিজ ভিটের ছোঁয়া নিয়ে দুই দিন পর অরূপ চক্রবর্তী ফিরে যান আপন নিলয়ে।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ঢাকায় এসেছিলেন ছানি অপারেশন নিয়ে বক্তৃতা করতে। কথায় কথায় জানালেন, শরীয়তপুরের রুদ্রকরে তাঁর পূর্বপুরুষেরা থাকতেন। দেখা যাবে নাকি গ্রামটা—জানতে চাইলেন অরূপ চক্রবর্তী।
শুরুতেই কবুল করলেন, তাঁদের পরিবার ১৯৪৭ সালে এই এলাকা থেকে চলে গেছে ভারতে, এরপর আর বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তখন তাঁর জন্মও হয়নি। তিনি এখন থাকেন কেরালায়। চক্ষুবিশেষজ্ঞ। ৯৬ বছর বয়সী বাবা যখন শুনলেন, ছেলে ঢাকায় যাচ্ছে, বললেন, ‘একবার ভিটেটা ঘুরে আসিস।’ লিখে দিয়েছেন কোথায় ছিল বাড়িটা, কারা কারা থাকতে পারে গ্রামে।
ইসলামিয়া চক্ষুহাসপাতালের কয়েকজন চক্ষু বিশেষজ্ঞকে নিয়ে তিনি চললেন শরীয়তপুরের উদ্দেশে।
অরূপ বাংলাতেই কথা বলেন। ১৯৭১ সালে ছিলেন আগরতলায়। বয়স ছিল কম। সে সময় বাংলাদেশ থেকে চেনাজানা অনেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁদের বাড়িতে গিয়ে নিয়েছিলেন আশ্রয়।
মাইক্রোবাস থেকে বাবাকে একবার ফোন করে কোথায় যেতে হবে তা আরও নিশ্চিত হয়ে নিলেন অরূপ। বাবা যে ঠিকানা, যে নামগুলো লিখে দিয়েছিলেন, সেগুলো পড়লেন। গাড়ি যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছিল, তখন চিকিৎসকদের একজন মোবাইলে ছেড়ে দিলেন ‘পদ্মার ঢেউ রে…’।
সরু একটা পথ দিয়ে শরীয়তপুরের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে মাইক্রোবাসটা একসময় রুদ্রকরে পৌঁছে গেল। রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের সামনের পুকুরপাড়ে দেখা গেল একজন বর্ষীয়ান ভদ্রলোককে। কেন যেন মনে হলো, তিনিই বলতে পারবেন অরূপের ঠিকুজি।
‘আপনি কি মনকুমার চক্রবর্তীকে চেনেন?’
‘চিনব না ক্যান? রুদ্রকর গ্রামে ছিলেন। বহু আগে ইন্ডিয়ায় চইলা গেছেন।’
‘তিনি আমার বাবা হন।’
এরপর সেই ভদ্রলোক, মানে ইসহাক মুন্সী নিখুঁতভাবে বলে যেতে থাকলেন অরূপদের পারিবারিক ইতিহাস। চাঁদপুরে ছিল অরূপদের শহরের বাড়ি। ছিল কয়লার কারবার। রুদ্রকরে মুরলী দিঘির ধারে তাঁদের গ্রামের বাড়ি। হাসান খাঁয়ের পরিবারের লোকেরা সেখানে থাকেন এখন। অথচ ৮০০ বছর ধরে চক্রবর্তী পরিবারের বাস ছিল এই রুদ্রকরে।
পথেই দেখা হয়ে যায় ঝন্টু কুমার গাঙ্গুলির সঙ্গে। এই যুবকও জানেন, চক্রবর্তীদের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক ছিল তাঁদের। তাঁর বাবা বেঁচে আছেন। হাফিজুর রহমানের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। একাত্তরে আগরতলায় গিয়ে শুরুতে উঠেছিলেন মনকুমারের বাড়িতে। অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি ছোট ছিলাম, তবে সেখানে তাহলে আপনার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে।’ হাফিজুর রহমানও সঙ্গ নিলেন। হাতে ফল আর চানাচুর, যা দিয়ে আপ্যায়ন করেছিলেন পরে।
কথায় কথায় জানা গেল, চক্রবর্তীদের সে সময়ের একটা ঘর আর একটা দালান এখনো আছে।
যে সরু রাস্তাটা ঢুকে গেছে গ্রামে, সেটা জানিয়ে দিল, বাংলাদেশের বহু গ্রাম এখনো গ্রামের মতোই আছে। একসময় ঝন্টু দেখিয়ে দেন, কোথা থেকে শুরু হচ্ছে চক্রবর্তীদের সীমানা। তারপর সেই ঘরটির কাছে চলে আসেন, যে ঘরটি গড়েছিলেন চক্রবর্তীরা। এখন সেখানে হাসান খাঁর বংশধরেরা বসবাস করছেন। আর সেই দালান? সেটা গাছ আর লতাপাতায় ছেয়ে গেছে।
অরূপ চক্রবর্তী স্মার্টফোনে বাবার সঙ্গে কথা বলেন। বাড়ি দেখান। ৯৬ বছর বয়সী মনকুমারের মন উদ্বেলিত হয়ে ওঠে।
যাঁরা এখন সে বাড়িতে বসবাস করেন, তাঁরা হৃদয় খুলে বলেন, ‘আপনারা তো আমাদের আত্মীয়। এ বাড়ি তো আপনাদেরই। তাতে সখ্য প্রগাঢ় হলো।’
নিজ ভিটের ছোঁয়া নিয়ে দুই দিন পর অরূপ চক্রবর্তী ফিরে যান আপন নিলয়ে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৩ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৭ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৭ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৭ দিন আগে