সড়কে গেল মা-ছেলের প্রাণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২: ২৬

কক্সবাজারের টেকনাফে মিনিট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় থাকা এক নারী ও তাঁর শিশু ছেলে নিহত হয়েছে। এ সময় অটোরিকশার তিন যাত্রী আহত হন। গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া ১টায় শহীদ এ টি এম জাফর আলম আরাকান সড়কের টেকনাফের হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হতাহতরা অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।

হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির (ইনচার্জ) পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলান ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহতরা হলেন টেকনাফ পৌরসভার পুরোনো পল্লানপাড়ার আবুল কালামের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার (১৯) এবং তাঁর দুই মাস বয়সী ছেলে মো. আসওয়াত। আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. ইসমাইল আরমানসহ অনেকে জানান, ডাম্পার মিনিট্রাকটির ফিটনেস ছিল ন। অদক্ষ চালক ফোনে কথা বলার কারণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সে সঙ্গে সড়কটি ছিল সরু ও কাদামাটির কারণে পিচ্ছিল।

একই স্থানে ১৭ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনা দুই ব্যক্তি নিহত হন।

পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, কক্সবাজারমুখী যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশাকে পেছন দিয়ে ধাক্কা দেয় মিনিট্রাক। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলে পাঁচ ব্যক্তি আহত হন। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে পালংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন একটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক মা ও ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনাকবলিত মিনিট্রাকটির চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন। গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে।

ছেলের সামনে মায়ের মৃত্যু: এদিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও মিরসরাইয়ের তিন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম শাহানা বেগম (৪০)। তিনি মিরসরাইয়ের বাসিন্দা।

এর মধ্যে কর্ণফুলীতে বাস উল্টে ছয়জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মিরসরাইয়ে মাইক্রোচাপায় এক নারীর মৃত্যু হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর বাস উল্টে ২০ জন আহত হন।

জানা গেছে, গতকাল সকালে কর্ণফুলী সেতু এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী একটি বাস উল্টে ছয়জন আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বাসটি সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে গতিরোধকের কাছে এসে উল্টে যায়। এ সময় গুরুতর অবস্থায় ছয়জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন স্থানীয়রা।

কর্ণফুলী থানার উপসহকারী পরিদর্শক আবদুল রাজ্জাক জানান, আহতদের উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মিরসরাইয়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনাপুনি এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে ২০ যাত্রী আহত হন। এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা এসে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহতদের মধ্যে আছিয়া বিবি, ফিরোজা বেগম ও লিপি বিবি নামের তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। বাকিদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটের সৌদিয়া পরিবহনের একটি বাস মিরসরাইয়ের বাদামতলী এলাকার ফেনাপুনি ব্রিজের দক্ষিণে এসে উল্টে যায়। এ সময় স্থানীয়রা এবং পরে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠান।

জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, মহাসড়কের ফেনাপুনি এলাকায় বরিশাল থেকে চট্টগ্রামগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেলে কয়েক যাত্রী আহত হন। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিরসরাই পৌর সদরের ডাকবাংলোর সামনে মাইক্রোচাপায় শাহানা বেগম নামের এক নারী নিহত হন। ছেলের রোগ নির্ণয়ের জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার গিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। শাহানা বেগম মিরসরাই পৌরসভার গোভনিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং আবুল মনছুরের স্ত্রী।

জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সংস্কার কাজের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের সময় সড়ক পার হতে গিয়ে একটি হাইয়েস মাইক্রোচাপায় শাহানা গুরুতর আহত হন।­ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

মিরসরাই পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহির উদ্দিন বলেন, যানজটের সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত