দোকানে দাম, ফুটপাত ভরসা

কুড়িগ্রাম ও চিলমারী প্রতিনিধি
Thumbnail image

কুড়িগ্রামে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। শহরের বিভিন্ন শপিংমল ও কাপড়ের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা বেশি দাম রাখছেন। তবে ফুটপাতে সাধ্যের মধ্যে পোশাক কিনতে পারছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

ব্যবসায়ীরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর ঈদবাজারে বেচাকেনা তেমন না হওয়ার লোকসান এ বছর পুষিয়ে নিচ্ছেন। কুড়িগ্রাম শহর ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের পদচারণে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। দিনের থেকে রাতেই ক্রেতা বেশি দেখা যায় বিপণিবিতানগুলোতে।

অনেক স্থানে মার্কেটের ভেতরের দোকানগুলোর থেকে রাস্তার পাশের বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতার ভিড় বেশি। সড়কের পাশে অস্থায়ী খোলা দোকানে ভিড় করছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। নিজেদের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিবারের সদস্যদের জন্য পোশাক কিনছেন।

শুধু পোশাকই নয়। নতুন জুতা, গয়না, প্রসাধনসামগ্রীতে বেচাকেনা বেড়েছে। মেয়েদের প্রসাধনী ও রূপচর্চার সামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। জেলা শহরের কালিবাড়ী মার্কেটের রাস্তার পাশের দোকান থেকে নিজের সন্তানের পোশাক কিনছেন রিকশাচালক খোকন মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমার ছোট মেয়ের জন্য জামা কিনতেছি। মার্কেটের দোকানে অনেক দাম। এখানে কম দামে কিনতে পারছি।’

জেলা সদরের হলোখানা চরের বাসিন্দা শিউলি বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বয়স ১২ বছর। মার্কেটের ভেতরে একটা প্যান্ট দেখলাম ৯০০ টাকা দাম চাইছে। খোলা এই দোকানে ৪০০ টাকায় কিনতে পারছি।’ কুড়িগ্রাম সুপার মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী মুকুল রহমান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে বেচাকেনা একটু বাড়ছে। আশা করছি করোনার ক্ষতি এ বছর উঠে আসবে।’

কুড়িগ্রামের ফুটপাতের দোকানগুলোতে মেয়েদের ঈদের পোশাক ৫০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছেলেদের টি-শার্ট ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চাদের পোশাক সর্বোচ্চ ৫৫০ আর সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, মেয়েদের থ্রি-পিস, শাড়ি ইত্যাদি।

চিলমারী উপজেলার থানাহাট বাজারসহ ছয়টি ইউনিয়নের হাটবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর পর এবার ঈদের কেনাকাটায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তবে কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। রমনা মডেল ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম ক্রেতা বলেন, ‘আমাদের চাহিদামতো সব ধরনের পোশাক আছে। কিন্তু দাম বেশি মনে হচ্ছে। দুই মেয়ের নতুন জামাকাপড় কিনলাম। যদি কাপড়ের দাম কম হতো, তাহলে মানুষ স্বস্তি পেত।’

চিলমারীর থানাহাট বাজারের জিসান ফ্যাশন কর্নারের মালিক মো. জায়েদ ইসলাম (নয়ন) বলেন, ‘আমার দোকানে পাঞ্জাবি ও ছোট বাচ্চাদের পোশাক রয়েছে। আশা করছি আজ-কালের মধ্যে বিক্রি বেশি হবে।’

থানাহাট বাজারের মিতু টেইলার্সের ফাইদুল ইসলাম জানান, দিনরাত কাজ করছি, অবসর নাই। পাঞ্জাবি, পাজামা, শার্ট, প্যান্ট, মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের জামা-পাজামা তৈরি করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকায় নারী, পুরুষ মিলে সবাই গভীর রাত পর্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছেন। কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘ব্যাংক-বিমা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তার জন্য পুলিশের ছয়টি দল কাজ করছে। পাশাপাশি চেকপোস্ট ও টহলরত পুলিশের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত